বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

স্থলবন্দরের কম্পিউটার অপারেটর ‘৪৬০ কোটি টাকার মালিক’

  •    
  • ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৪:৫১

র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, নুরুল ইসলামের ঢাকা শহরে ছয়টি বাড়ি ও ১৩টি প্লট আছে। এ ছাড়া সাভার, টেকনাফ, সেন্ট মার্টিন, ভোলাসহ বিভিন্ন জায়গায় নামে-বেনামে জায়গার সন্ধান পাওয়া গেছে।

কক্সবাজারের টেকনাফ স্থলবন্দরে ২০০১ সালে দৈনিক ১৩০ টাকা মজুরিতে চুক্তিভিত্তিক কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে কাজ শুরু করেন নুরুল ইসলাম। ২০০৯ সালে চাকরি ছেড়ে দেন তিনি।

২০ বছর পর সেই নুরুল ইসলামের ঢাকায় রয়েছে ছয়টি বাড়ি, ১৩টি ফ্ল্যাট; তিনি এখন ‘৪৬০ কোটি টাকার মালিক’ বলে জানিয়েছে র‍্যাব।

মূলত বন্দরে দালালি সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে অবৈধ পণ্য খালাস, চোরাকারবারি, শুল্ক ফাঁকির দিয়ে নুরুল এত পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়েছেন বলে দাবি করেছে র‍্যাব।

একটি গোয়েন্দা সংস্থা ও র‍্যাবের যৌথ অভিযানে নুরুল ইসলামকে সোমবার রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

অভিযানে তার কাছ থেকে ৩ লাখ ৪৬ হাজার ৫০০ টাকার জাল নোট, মিয়ানমারের ৩ লাখ ৮০ হাজার মুদ্রা, ৪ হাজার ৪০০ পিস ইয়াবা এবং ২ লাখ ১ হাজার ১৬০ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।

কারওয়ান বাজারে র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে মঙ্গলবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় র‍্যাব।

সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘নুরুল ২০০১ সালে টেকনাফ স্থলবন্দরে কম্পিউটার অপারেটর থাকার সময় নিজের অবস্থানকে কাজে লাগিয়ে সে চোরাকারবারি, শুল্ক ফাঁকি, অবৈধ পণ্য খালাস, দালালির কৌশল রপ্ত করে। পরে তার নেতৃত্বে বেশ কয়েকটি সিন্ডেকেট গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে একটি দালালি সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন নুরুল।

‘২০০৯ সালে সে চাকরি ছেড়ে দিয়ে তারই আস্থাভাজন একজনকে সেখানে নিয়োগ পাইয়ে দেন। আর নুরুল দালালি সিন্ডিকেটটির নিয়ন্ত্রণ নিজের কাছে রাখেন। এভাবে তিনি কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেন।’

র‍্যাব জানায়, চাকরি ছাড়ার পর অবৈধ উপার্জন ধামাচাপা দিতে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন নুরুল।

র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার নুরুল ইসলাম। ছবি: নিউজবাংলা

খন্দকার মঈন বলেন, ‘তার সিন্ডিকেটে ১০ থেকে ১৫ জন সদস্য রয়েছে। যারা কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে দালালির কাজ করে। এই সিন্ডিকেট পণ্য খালাস, পরিবহন সিরিয়াল নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি পথিমধ্যে অবৈধ মালপত্র খালাসে সক্রিয় ছিল।’

সিন্ডিকেটের সহায়তায় পাশের দেশগুলো থেকে কাঠ, শুঁটকি মাছ, বরই আচার, মাছসহ অন্য বৈধ পণ্যের আড়ালে অবৈধ পণ্য আনা হতো বলে জানান র‍্যাবের ওই কর্মকর্তা।

ব্রিফিংয়ে র‍্যাব জানায়, গ্রেপ্তার নুরুলচক্রের সদস্যরা টেকনাফ বন্দর, ট্রাক স্ট্যান্ড, বন্দর লেবার ও জাহাজের আগমন-বহির্গমন নিয়ন্ত্রণ করত। তাদের চিহ্নিত মাদক কারবারিদের সঙ্গে যোগসাজশ ছিল।

নুরুলের ঢাকা শহরে ছয়টি বাড়ি ও ১৩টি প্লট আছে। এ ছাড়া সাভার, টেকনাফ, সেন্ট মার্টিন, ভোলাসহ বিভিন্ন জায়গায় নামে-বেনামে জায়গার সন্ধান পাওয়ার কথা ব্রিফিংয়ে জানান র‍্যাবের কর্মকর্তা মঈন।

তিনি বলেন, ‘নুরুলের নামে-বেনামে বিভিন্ন ব্যাংকে ১৯টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। বর্তমানে সে জাহাজশিল্প ও ঢাকার উপকণ্ঠে বিনোদন পার্কে বিনিয়োগ করেছেন।’

এক প্রশ্নের জবাবে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘চাকরির পর থেকে নুরুল ইসলাম বন্দরে গাড়ি ও জাহাজের সিরিয়াল নিয়ন্ত্রণ করতেন, জাহাজ থেকে বিভিন্ন পণ্য খালাসের সময় কর্তৃত্ব করাসহ ভেতরে-বাইরে বিভিন্নভাবে দালালি করত।’

তার সঙ্গে আর কারা জড়িত ছিল? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘কম্পিউটার অপারেটর থাকাকালীন বন্দরের বেশিরভাগ লোক তাকে চিনতেন এবং সবার সঙ্গেই তার সুসম্পর্ক ছিল। এ কারণে তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট কাজ করতে সুবিধা হতো। তার সঙ্গে এক-দুজন ব্যক্তি নয়, অনেকেই তার কাজে সহযোগিতা করেছেন।’

তবে র‍্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নুরুল কারও নাম উল্লেখ করেননি বলে জানান।

জাল টাকার বিষয়ে র‍্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘গ্রেপ্তার নুরুলের বাসায় জাল টাকা পাওয়া গেছে। তিনি এই জাল টাকা দিয়েই সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন।’

এ বিভাগের আরো খবর