রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদের দুই দ্বীপ ঝুলক্যা পাহাড় ও পুরানবস্তি। প্রায় চার হাজার মানুষ থাকে দ্বীপ দুটিতে। শহরে যাতায়াতের জন্য নৌকাই ছিল তাদের একমাত্র বাহন।
বিচ্ছিন্ন এ মানুষগুলো শিগগিরই পেতে যাচ্ছে সড়কপথ। দ্বীপ দুটিকে শহরের সঙ্গে যুক্ত করতে তৈরি হয়েছে সেতু। এর নির্মাণকাজ প্রায় শেষ। অপেক্ষা শুধু উদ্বোধনের।
হ্রদের পুরানবস্তি দ্বীপে বসবাস ৩১০ পরিবারের। আর ঝুলক্যা দ্বীপে বসতি ১৯০ পরিবারের। ১৯৬০ সালে রাঙামাটিতে কাপ্তাই হ্রদ নির্মাণের পর দুই দ্বীপের জোড়া লাগা নিয়ে উৎফুল্ল স্থানীয় লোকজন।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, রাঙামাটি শহর থেকে ৬১ বছর ধরে বিচ্ছিন্ন ছিল দুই দ্বীপ। শহরের সঙ্গে এগুলোকে যুক্ত করতে ২০১৩ সালে সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড।
১৭ কোটি ৬৩ লাখ ৩৬ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে ১ হাজার ২৫০ ফুট দীর্ঘ ও ১৫ ফুট চওড়া সেতুটি। এর নামকরণ করা হবে মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমেদ তালুকদারের নামে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কাপ্তাই হ্রদের ওপর রাঙামাটি শহরের রিজার্ভ বাজার থেকে ঝুলক্যা পাহাড় ও পুরানবস্তি সংযোগে নির্মিত সেতুটির নির্মাণকাজ প্রায় শেষের দিকে। সেতুটিতে যান চলাচল শুরু না হলেও এখন দুই দ্বীপের মানুষ হেঁটে আসছেন রিজার্ভ বাজারে।
নির্মাণকাজ শেষে ২০২২ সালের জুনের দিকে সেতুটি উদ্বোধন হতে পারে বলে জানিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তুষিত চাকমা।
ঝুলক্যা পাহাড় এলাকার নজরুল ইসলাম জানান, চার হাজার মানুষের স্বপ্ন পূরণ হতে যাচ্ছে। সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ হলে যাতায়াত থেকে শুরু করে চিকিৎসাক্ষেত্রেও অনেক সুবিধা হবে।
তার ভাষ্য, এর আগে কেউ অসুস্থ হলে জরুরিভাবে হাসপাতালে নেয়া যেত না। বিশেষ করে রাতে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হতো।
পুরানবস্তির শিকদার আলী জানান, এত দিন ধরে অনেক কষ্ট করে নৌকায় পার হতে হতো। একদিকে সময় নষ্ট, অন্যদিকে ঝুঁকি। সে ভোগান্তি শেষ হতে যাচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ভাষ্য
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তুষিত চাকমা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সেতুটির নির্মাণকাজ প্রায় শেষের দিকে। এক মাসের মধ্যে সেতুটির কাজ শেষ হবে। ২০২২ সালের জুনের দিকে সেতুটি উদ্বোধন হতে পারে।’
উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দুই দ্বীপের স্বপ্নের সেতু এটি। সব দিক বিবেচনা করে পুরানবস্তি ও ঝুলক্যা পাহাড় এলাকার মানুষের জন্য সেতুটির প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড।’
তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেন সেতুটি উদ্বোধন করেন, সে জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়া হবে।