চেক প্রত্যাখ্যানের চার মামলায় রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানার এক ব্যক্তির ২১ মাসের কারাদণ্ড হলেও ৪৪ মাসেও তার মুক্তি হয়নি।
ভুক্তভোগীর নাম জহির উদ্দিন। মেয়াদ শেষ হলেও মুক্তি না দেয়ায় তিনি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন।
রহমানের বাড়ি বোয়ালিয়ার শিরোইল কলোনি এলাকায়।
আবেদনের শুনানি নিয়ে তাকে কারাবন্দি রাখাকে কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, একই সঙ্গে মেয়াদের বেশি সাজা খাটার পরও তাকে কেন মুক্তির নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
সোমবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
আদেশে রাজশাহী কারা কর্তৃপক্ষকে ভুক্তভোগীর দেয়া চিঠি নিষ্পত্তি করার নির্দেশও দেয়া হয়।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ফারুক আলমগীর চৌধুরী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
আইনজীবী ফারুক আলমগীর চৌধুরী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘চেকের পাওনা দাবি করে প্রতিবেশী মো. জাফর আহাম্মদ জহির উদ্দিনের বিরুদ্ধে চারটি চেক ডিজঅনার মামলা করেন। বিচার প্রক্রিয়া শেষে রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মুত্তাহিদা হোসেন ২০১৭ সালে তিন মামলায় ৬ মাস করে এবং এক মামলায় ৩ মাস কারাদণ্ড দেন। রায়ের পর ২০১৮ সালের ২৫ জানুয়ারি জহির উদ্দিন গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে যান।’
তার সাজার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে ২০১৯ সালের অক্টোবরে। কিন্তু এরপর আরও ২৩ মাস ধরে তিনি কারাগারে আছেন।
আইনজীবী জানান, সাজার মেয়াদ পেরিয়ে গেলেও তাকে মুক্তি না দেয়ায় রাজশাহী কারা কর্তৃপক্ষকে চিঠি লিখেন জহির উদ্দিন। কিন্তু কারা কর্তৃপক্ষ তার সেই চিঠির বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
এরপর স্বরাষ্ট্রসচিব, আইনসচিব, রাজশাহী যুগ্ম মহানগর দায়রা জজ, রাজশাহী জেলা প্রশাসক, রাজশাহী জেল সুপারসহ সাতজনকে বিবাদী করে হাইকোর্টে রিট করেন জহিরের আইনজীবী।
সাজার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও কেন ২৩ মাস একজনকে বন্দি রাখা হবে, এমন প্রশ্নে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা বিষয়টি নিয়ে কিছু বলতে পারেননি।
তিনি বলেন, ‘আপনি কার কথা বলছেন, সেটা আমি বুঝতে পারছি না। নাম, ঠিকানা দিলে আগামীকাল বিস্তারিত জানানো যাবে।’
‘কাউকে বেশি জেল খাটিয়ে তো আমার লাভ নেই। আইনের বাইরে কাউকে জেল খাটানোর প্রশ্ন আসে না’- এমন কথাও বলেন জেল সুপার।