রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সব বিভাগেই পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করেছে প্রশাসন। শিক্ষার্থীদের ফরম ফিলাপ, ভর্তি ফি, পরিবহন ও হল ফি সবকিছুই জমা দিতে হচ্ছে ব্যাংকে।
বিভাগ থেকে অল্প সময় ঠিক করে দেয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা অগ্রণী ব্যাংকে ভিড় জমাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। এতে চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন বলেও জানিয়েছেন তারা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় অগ্রণী ব্যাংক শাখার সামনে তিন-চারটি লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন শিক্ষার্থীরা। ভেতরেও নাজুক অবস্থা।
জায়গাসংকট, কাউন্টার কম, কখনও সার্ভার সমস্যা, বুথ থেকে টাকা উত্তোলনে ভোগান্তি। প্রতি কার্যদিবসে সকাল ১০টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত ভর্তি ও পরীক্ষাসংক্রান্ত লেনদেনের সুযোগ পান শিক্ষার্থীরা। যদিও ব্যাংক খোলা থাকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। এই সময়ে ভর্তি বা পরীক্ষাসংক্রান্ত লেনদেনের সুযোগ নেই শিক্ষার্থীদের।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সব বিভাগ পরীক্ষার তারিখ দেয়ায় প্রথম বর্ষ থেকে মাস্টার্স পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা ফরম ফিলাপসহ অন্যান্য ফি বাবদ টাকা জমা দিতে এসে ভোগান্তিতে পড়ছেন।
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী রাজু বলেন, ‘আমি মাস্টার্সের ফরম ফিলাপ ও অনার্সের সার্টিফিকেট তোলার জন্য লম্বা লাইন ধরে ব্যাংকের সামনে দাঁড়িয়ে থেকে দুদিনেও টাকা জমা দিতে পারিনি। ব্যাংকের বাইরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও কাজ হচ্ছে না। সেই সঙ্গে মেয়েদের জন্যও আলাদা কোনো ব্যবস্থা নাই।
‘প্রশাসন চাইলেই সোনালী ব্যাংকের অপর শাখাটি খুলে দিতে পারে। সেটাও করা হচ্ছে না। এ মুহূর্তে প্রশাসনের উচিত হবে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি এড়াতে অনলাইনভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলা।’
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী জাহেদ ইমাম শুভ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম ডিজিটাল হয়েও কেন আমাদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে টাকা জমা দিতে হবে। ডিপার্টমেন্ট-ব্যাংক, ব্যাংক-হল, হল-ডিপার্টমেন্ট করতে হয় আমাদের।
তিনি আরও বলেন, ‘পরীক্ষার ফরম ফিলাপ করতে এসে যে এত ভোগান্তি পোহাতে হবে তা আগে ভাবিনি। ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে টাকা জমা দিতে পেরেছি। স্বাস্থবিধির বালাই নাই।
‘এরপর হলে গিয়ে দেখি প্রভোস্ট নাই। ফিরে এলাম। এ নিয়ে দুই-তিন দিনের বেশি সময় লেগে যাচ্ছে পরীক্ষার ফরম পূরণ প্রক্রিয়া শেষ করতে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক তারেক নূর বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির বিষয়টি এরই মধ্যে প্রশাসনের নজরে এসেছে। ব্যাংকের পরিচালকের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। ব্যাংকের ভেতরে জায়গাসংকট দূর করা ও বুথ বাড়ানোর বিষয়ে কথা হয়েছে।’
বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক লিয়াকত আলী বলেন, ‘আমি আজ শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির বিষয়টি দেখেছি। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ভিসিসহ প্রক্টরিয়াল বডি অবগত আছে।
‘শিক্ষার্থীদের এ ভোগান্তি কমাতে শিগগিরই অনলাইনভিত্তিক প্ল্যাটফর্মের ব্যবস্থা করা হবে। এরই মধ্যে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। এ ভোগান্তির সুরাহা দ্রুতই হবে।’