লকডাউন-পরবর্তী গণপরিবহনে যাত্রী হয়রানি ও ভাড়া নৈরাজ্য চরমে পৌঁছেছে বলে দাবি করেছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি। সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে যাত্রী অধিকার দিবস উপলক্ষে এক সভায় সংগঠনটি এমন দাবি করে।
দীর্ঘ লকডাউন শেষে যাত্রী হয়রানি ও ভাড়া নৈরাজ্য থামাতে এখনই ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পরিবহন মালিক, শ্রমিক সংগঠন ও সরকারের সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয় সভা থেকে।
গণপরিবহনে যাত্রী হয়রানি, ভাড়া নৈরাজ্য, বিশৃঙ্খলা, অরাজকতার বিরুদ্ধে দাবি আদায়ের প্রতীকী দিবস হিসেবে দেশে তৃতীয়বারের মতো যাত্রী অধিকার দিবস পালন করা হচ্ছে। এবার দিবসটির মূল প্রতিপাদ্য ছিল ‘যাত্রী হয়রানি ও ভাড়া নৈরাজ্য বন্ধের কার্যকর পদক্ষেপ’।
সভায় সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বলেন, ‘যাত্রীদের ন্যায্য ভাড়া নিশ্চিত করা দরকার। এ ছাড়া পরিবহন-সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণ প্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছে। নারী যাত্রীদের নিরাপত্তা বিধান করা উচিত। কারণ বিভিন্ন পরিবহনে প্রায়ই নারীর প্রতি সহিংসতা ঘটে।’
তিনি পরিবহনে যাত্রীদের ওঠানামার দক্ষতা, সুবিধাসংবলিত যাত্রীছাউনি ও সড়কবাতির প্রয়োজনীয়তার কথাও তুলে ধরেন।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেন, ‘যাত্রীদের দাবি এ দেশের ১৭ কোটি মানুষের দাবি৷ সড়কে বারবার মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে৷ নিরাপদ সড়কের কথা বলা হচ্ছে, আবার সড়কে নৈরাজ্যও আমরা দেখতে পাচ্ছি৷’
‘পৃথিবীর সব দেশের মধ্যে বাংলাদেশে সড়কে নৈরাজ্য, হয়রানি এবং ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি৷ এসব সমস্যা সমাধানের দায়িত্ব সরকারের৷ সড়কে মৃত্যুর ঘটনায় মামলা হলেও মানুষ বিচার পাচ্ছে না৷ পরিবহন খাতে অসম প্রতিযোগিতা চলছে৷’
যাত্রী কল্যাণ সমিতির উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য শরীফুজ্জামান শরীফ প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘বিশ্বের আর কোন দেশে চেকপোস্ট বসিয়ে পরিবহন মালিকরা টাকা আদায় করে? কিন্তু বাংলাদেশে তা সম্ভব৷ শুধু সরকার চায় না বলেই সড়কে নৈরাজ্য থেকেই যাচ্ছে৷’
সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘সড়কে প্রতি মাসে ৩০০ কোটি টাকার চাঁদাবাজি হচ্ছে৷ নতুন সড়ক পরিবহন আইন হয়েছে, কিন্তু তা কার্যকর হতে দেখছি না৷ এ আইনে লাইসেন্স পারমিটের জন্য দুই হাজার টাকার বদলে ১০ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হচ্ছে৷ তাহলে কি আমরা ঘুষের টাকা বৃদ্ধির জন্য আন্দোলন করেছি?’