দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর বন্ধের পর রোববার থেকে ক্লাসে ফিরেছে শিক্ষার্থীরা। দ্বিতীয় দিনেও যেসব শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফেরেননি তাদের বিষয়ে খোঁজ নেয়ার কথা জানিয়েছেন শিক্ষকরা।
স্কুল-কলেজ খোলার দ্বিতীয় দিন সোমবার রাজধানীর উদয়ন স্কুল অ্যান্ড কলেজে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে প্রায় শতভাগ শিক্ষার্থী ক্লাসে এসেছে।
তবে কোনো কোনো ক্লাসের কয়েকজন শিক্ষার্থী দুইদিনই অনুপস্থিত। তাদের বিষয়ে খোঁজ নেয়া হবে বলে জানান অধ্যক্ষ জহুরা বেগম।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা গতকাল প্রতিটি ক্লাসের রিপোর্ট নিয়েছি। রিপোর্টে আমরা দেখেছি, প্রায় শতভাগ উপস্থিতি ছিল। তবে যেসব শিক্ষার্থী আসেনি তাদের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করছি। কারণ হিসেবে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা বলছেন, তারা স্কুলের সামগ্রিক পরিস্থিতি কয়েকদিন দেখতে চায়, তারপরই তারা তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাবেন।’
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনা মেনেই কয়েক শিফটে ক্লাস রুটিন সাজানোর কথা বলেছেন অধ্যক্ষ।
স্কুল কর্তৃপক্ষ প্রথম শ্রেণি থেকে চতুর্থ শ্রেণি এবং ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণিকে দুই শিফটে ভাগ করেছে।
এ ছাড়া পিএসসি, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের বিভিন্ন শিফটে ভাগ করে তাদের ক্লাস রুটিন সাজিয়েছে।
রোববার রুটিন অনুযায়ী কয়েক শিফটে প্রথম এবং ষষ্ঠ শ্রেণির ক্লাস হয়েছে।
ক্লাস নেয়া হয়েছে পিএসসি, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের।
জহুরা বেগম বলেন, ‘গতকাল প্রতিটি ক্লাসে কয়েকজন ছাড়া প্রায় শতভাগ শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিল।’
তিনি জানান, প্রতিটি ক্লাসেই শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্লাস করার কথা বোঝানো হয়েছে। সামাজিক দূরত্ব যতটা পারা যায় মানতে চেষ্টা করার কথাও বলা হয়েছে। সংক্রমণ বাড়লে স্কুল বন্ধ হতে পারে বলেও জানান তিনি।
দ্বিতীয় দিনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্কুলের ভেতর চলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান। গেটের বাইরেও অভিভাবকদের তেমন ভিড় লক্ষ্য করা যায়নি।
আজ প্রথম স্কুলে এসেছে দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী তানিম। সে বলে, ‘অনেক তিন পর স্কুলে এসেছি। অনেক ভালো লাগছে। ম্যামকে অনেক মিস করেছি। এসেই ম্যাম আমাকে ফুল দিয়েছে, অনেক খুশি আমি।’
ক্লাস শেষে বাড়ির পথে ছিল দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাবিলা। সে জানায়, ‘গতকালও ক্লাস করেছি। আজ আমাদের ক্লাস হয়েছে। আমাদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারব বলে মনে হয়। ভালো রেজাল্ট করতে চাই। এজন্য স্কুলে এসে সরাসরি ক্লাসের বিকল্প নেই।’
গেটের বাইরে বসে ছিলেন অভিভাবক কালাম মিয়া। তিনি বলেন, ‘সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। আমরা যদি না মানি তাহলে শিক্ষার্থীরা কী শিখবে। আমরা চাই না আমাদের অবহেলার কারণে সংক্রমণ আবার বাড়ুক। আমরা চাই না স্কুল কলেজ বন্ধ হয়ে যাক।’
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে রোববার বলা হয়েছে প্রাথমিকসহ অন্য বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী উপস্থিতির হিসাব শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে প্রতিদিন জানাতে হবে।
যেসব শিক্ষার্থী স্কুলে আসছে না তাদের বিষয়ে খোঁজ নিতেও বলা হয়েছে। তাদের সমস্যা সমাধান করে ক্লাসে ফেরত আনতে সবাইকে অনুরোধ জানায় মাউশি।