বিল্ডিং কোড না মেনে ভবন নির্মাণ করায় মাঝারি ভূমিকম্পেও প্রধান শহরগুলোতে বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে।
রাজধানীর বাবুবাজারে রোববার সকালে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবসে আয়োজিত এক সচেতনতামূলক মহড়ায় এ কথা বলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশের প্রধান প্রধান শহরে মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বিভিন্ন ধরনের স্থাপনা। কিন্তু স্থাপনাগুলো কতটা মানসম্পন্ন বা বড় ধরনের ভূমিকম্পে সেগুলো টিকে থাকবে কি না, এ শঙ্কা প্রবল।
‘ভূমিকম্পের মতো দুর্যোগে নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে প্রয়োজনীয় খোলা জায়গাও নেই শহরগুলোতে।’
তিনি বলেন, ‘দেশে ভবন নির্মাণে বিল্ডিং কোড না মানার অভিযোগ রয়েছে। তাই মাঝারি ধরনের ভূমিকম্পও বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে।
‘আর বড় ধরনের ভূমিকম্প ডেকে আনতে পারে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়। তাই ভূমিকম্পের বিপর্যয় থেকে রক্ষা পেতে সব ধরনের স্থাপনা দুর্যোগ মোকাবিলার উপযোগী করে গড়ে তুলতে সরকার কাজ করছে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ভৌগোলিক অবস্থান ও জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের কারণে জনবহুল বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম দুর্যোগপ্রবণ দেশ হিসেবে চিহ্নিত। বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, নদীভাঙন, খরা, শৈত্যপ্রবাহ, অগ্নিকাণ্ড, বজ্রপাত এবং ভূমিধস আমাদের অতি পরিচিত দুর্যোগ।
‘এ ছাড়া সিসমিক জোনে অবস্থানের কারণে বড় ধরনের ভূমিকম্পের আশঙ্কা থেকেও আমরা ঝুঁকিমুক্ত নই’- যোগ করেন তিনি।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেয়ার উপায় এখনও বের হয়নি। বড় ধরনের ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি কতটা নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে তা বলা মুশকিল।
‘তবে জনসচেতনতা ও পূর্বপ্রস্তুতি থাকলে যেকোনও দুর্যোগ মোকাবিলা করে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার সে কাজটিই করে যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘ভূমিকম্পসহ অন্যান্য দুর্যোগে দ্রুত উদ্ধার ও অনুসন্ধান কাজ পরিচালনার জন্য অ্যাকোয়াটিক সি সার্চবোট, মেরিন রেস্কিউ বোট, মেগাফোন সাইরেনসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম, যন্ত্রপাতি ও যানবাহন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর এবং সশস্ত্র বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগকে দেয়া হয়েছে।
‘এ কার্যক্রম সহজ করার জন্য আরও অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জমাদি সংগ্রহের কাজ চলমান রয়েছে।’
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রঞ্জিত কুমার সেন, ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাজ্জাদ হোসেন এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড কমিশনার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন। এ সময় স্থানীয় সংসদ সদস্য হাজি মোহাম্মদ সেলিম উপস্থিত ছিলেন।