বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিশ্বব্যাংক টালবাহানা করলে নিজস্ব টাকায় ‘সড়ক নিরাপত্তা’

  •    
  • ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৫:৫৬

বিশ্বব্যাংকের আগ্রহের কারণে তাদের ‘স্বাগত’ জানানো হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘কিন্তু আবারও তারা সময়ক্ষেপণ করছে। যদি তারা বিলম্ব করে, কালক্ষেপণ করে, তাহলে আমাদের নিজস্ব অর্থায়নে সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ক প্রকল্প বাস্তবায়ন এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।’

দেশের সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিতে নেয়া প্রকল্পে অর্থায়নের আগ্রহ দেখানোর পর বিশ্বব্যাংক এখন সময়ক্ষেপণ করছে বলে অভিযোগ করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, বিশ্বব্যাংক কালক্ষেপণ করলে পদ্মা সেতুর মতোই নিজস্ব অর্থায়নে ‘সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ক প্রকল্প’ বাস্তবায়ন করা হবে।

রাজধানীর সরকারি বাসভবন থেকে রোববার সকালে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে ঢাকা জোনের অধীনে ৯টি সেতু উদ্বোধনের সময় তিনি এ কথা জানান।

মন্ত্রী বলেন, ‘সড়ক নিরাপত্তা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতু থেকে সরে যাওয়ার পর বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে নিজস্ব অর্থায়নের পদ্মা সেতু বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পরে বিশ্বব্যাংক নিজেরাই ভুল স্বীকার করে। তারা সড়ক নিরাপত্তায় অর্থায়ন করবে বলে বারবার আগ্রহ প্রকাশ করে।’

দাতা সংস্থাটির আগ্রহের কারণে তাদের ‘স্বাগত’ জানানো হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘কিন্তু আবারও তারা সময়ক্ষেপণ করছে। যদি তারা বিলম্ব করে, কালক্ষেপণ করে, তাহলে আমাদের নিজস্ব অর্থায়নে সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ক প্রকল্প বাস্তবায়ন এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।’

বিষয়টি মাথায় রেখে সড়ক নিরাপত্তা কার্যক্রম জোরদারে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন ওবায়দুল কাদের।

যা থাকছে সড়ক নিরাপত্তায়

সড়কের নিরাপত্তা বাড়াতে ‘ইন্টেলিজেন্ট ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম’ চালু করতে চায় সরকার। এর মধ্য দিয়ে প্রযুক্তির মাধ্যমে দেশের সব সড়ক-মহাসড়ক সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। ফলে কোনো ঘটনা ঘটলে সঙ্গে সঙ্গে সেটি জানা ও দেখা যাবে এবং ব্যবস্থা নেয়া যাবে।

এ জন্য সারা দেশের মহাসড়কে হাজারো সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হবে। গাড়ির গতি পরীক্ষার জন্য থাকবে গতি নির্ধারক সেন্সর-যুক্ত ক্যামেরা। সেগুলো থেকে পাওয়া ছবি ও তথ্য কেন্দ্রীয়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে।

মহাসড়কের বিভিন্ন জায়গায় ডিজিটাল বোর্ডও বসানো হবে। সেখানে যানজট বা সড়কের পরিস্থিতি জানতে পারবেন চালক ও যাত্রীরা।

পুষিয়ে নিতে হবে করোনার ক্ষতি

সারা দেশে চলমান সড়ক ও সেতুর নির্মাণকাজ দ্রুততার সঙ্গে শেষ করার নির্দেশ দিয়ে কাদের বলেন, করোনাকালের ধীর গতি পুষিয়ে নিতে হবে।

তবে করোনার মধ্যেও নির্মাণসংশ্লিষ্ট প্রকল্পের কাজ সচল রাখায় সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ দিতে ভোলেননি মন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘করোনার ভয়াবহ অবস্থা যখন ছিল, তখন গতি কিছুটা মন্থর ছিল। এখন যেহেতু করোনা কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে, কাজেই আমাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজের গতি বাড়াতে হবে।’

এ মেয়াদে সরকারের হাতে আর দুই বছর চার মাস সময় আছে জানিয়ে কাদের বলেন, ‘সড়কসমূহের কাজ শুরু করে এ সময়ের মধ্যে একটি পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে। চলমান কাজগুলো শেষ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রতিটি জোন প্রধানের সঙ্গে সভা করে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি ও দিকনির্দেশনা দিতে সচিব এবং প্রধান প্রকৌশলী তৎপর হবেন বলে আমি আশা করছি।’

‘জনভোগান্তি কমাতেই হবে’

ঢাকা-গাজীপুর বিআরটি এবং যাত্রাবাড়ীর সুলতানা কামাল সড়ক নির্মাণ প্রকল্পসহ সারা দেশে নির্মাণাধীন বিভিন্ন প্রকল্পের কারণে যাতে জনভোগান্তি না হয়, সে বিষয়ে কর্মকর্তাদের সতর্ক করেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, ভোগান্তির মাত্রা যেভাবেই হোক সহনীয় রাখতে হবে।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকা-গাজীপুর বিআরটি নিয়ে আমি অনেক কথা বলেছি। আপনারাও চেষ্টা করছেন। এটার এখন অনেক অগ্রগতি হয়েছে। আশা করছি, আগামী বছর বিআরটি প্রকল্পটিও উদ্বোধন করতে পারবেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। এটা আমাদের সর্বোচ্চ প্রায়োরিটি। যেভাবেই হোক জনভোগান্তি আমাদের কমাতেই হবে।’

বনশ্রী-আমুলিয়া-ডেমরা সড়কটি পিপিপি ভিত্তিতে চার লেনে উন্নীতের কাজ দ্রুত শুরু করার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, ‘যাত্রাবাড়ী সুলতানা কামাল সড়কের কাজে জনভোগান্তি রয়েছে বলে আমার কাছে অভিযোগ আছে। ডাইভারশন করা সড়কের অংশও ভালো নয়। ঢাকা জোনকে অবশ্যই গুরুত্ব দিতে হবে। ভোগান্তিটা অবশ্যই সহনীয় করা দরকার।’

কাদের বলেন, ‘ঢাকা-টাঙ্গাইল-আশুলিয়া অংশে পানির নিচে তিন কিলোমিটার জায়গা ডুবে থাকে। পত্রপত্রিকায় রিপোর্ট হয়েছে। আমি আশা করি, এই সমস্যাটা অ্যাড্রেস করবে ঢাকা জোন।’

সংবাদমাধ্যমে আসা প্রতিবেদনের তথ্য উল্লেখ করে সড়কমন্ত্রী বলেন, গত বছরের তুলনায় সড়ক দুর্ঘটনা ৪০ শতাংশ বেড়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সচিবকে নির্দেশ দেন তিনি।

এদিন ঢাকা সড়ক জোনের অধীনে বিশ্ব ইজতেমা সড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের আওতায় দেশীয় প্রযুক্তিতে নির্মিত কামারপাড়া সেতু, গাজীপুর সড়ক বিভাগের আওতায় ধলাগড় সেতু, পাথরধারা সেতু, মাওনা-ফুলবাড়িয়া-কালিয়াকৈর-ধামরাই-নবীনগর মহাসড়কে শালদহ সেতু, ফুলবাড়িয়া সেতু, বেগুনবাড়ি সেতু এবং মানিকগঞ্জ সড়ক বিভাগের আওতায় বেনীপুর সেতু, ডেমরান সেতু ও শরীফবাগ সেতুসহ মোট ৯টি সেতুর অনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন ওবায়দুল কাদের।

ধামরাই থেকে সংসদ সদস্য বেনজির আহমদের পাশাপাশি অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব নজরুল ইসলাম, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী আবদুস সবুর।

এ বিভাগের আরো খবর