জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক চতুর্থ বর্ষের চূড়ান্ত ফলাফলে অসন্তোষ জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ফটকের সামনে অনশনে বসেছেন শিক্ষার্থীরা।
পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী রোববার সকাল ১০টা থেকে সেখান বসে অনশন করছেন। এর আগে একই দাবিতে গত ১১ ও ১৮ আগস্ট তারা বিক্ষোভ করেছিলেন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা জানান, ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) চতুর্থ বর্ষ পরীক্ষার ফল গত ২০ জুলাই প্রকাশিত হয়। এতে ৭২ শতাংশ কৃতকার্য হন। এক বিষয়ে অকৃতকার্য দেখানো হয়েছে ২৪ হাজারের বেশি শিক্ষার্থীকে।
তারা বলেন, সশরীরে পরীক্ষা দিয়েও অনেক শিক্ষার্থীকে অনুপস্থিত দেখানো হয়েছে। অনেক শিক্ষার্থীর চতুর্থ বর্ষের ১০টি কোর্সের মধ্যে ৯টিতে প্রথম শ্রেণি পেলেও তুলনামূলক সহজ বিষয় যেমন সাংগঠনিক আচরণ, প্রকল্প ব্যবস্থাপনায় অকৃতকার্য দেখানো হয়েছে।
অনশনে থাকা লালমাটিয়া মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী নাহিদ নীয়াজী নীরা বলেন, ‘স্নাতক প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষে ভালো রেজাল্ট এসেছিল, কিন্তু অপ্রত্যাশিতভাবে চতুর্থ বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষায় আমাকে এক বিষয়ে অকৃতকার্য দেখানো হয়েছে।
‘আমাদের গাইবান্ধার শিক্ষার্থী মশিউর এই ফলাফলের কারণে আত্মহত্যা করেছে। তার মতো এমন অনেক ছাত্রছাত্রী আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমাদের ফলাফল পুনর্মূল্যায়ন না করা হলে এই অনশন লাগাতার চলবে। প্রয়োজনে মাসব্যাপী আমরা অনশন চালিয়ে যাব।’
শেরপুর থেকে স্ত্রী জেরিন আক্তার ববিকে নিয়ে সকাল ৯টায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে যান রকিবুল হাসান খুররম।
তিনি বলেন, ‘আমার স্ত্রীর প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষায় প্রথম গ্রেড আসে। চতুর্থ বর্ষে এক বিষয়ে তাকে অকৃতকার্য দেখানো হয়েছে। এই ফলাফল আমরা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারি না। তাই স্ত্রীর সঙ্গে আমি নিজেও আন্দোলনে যোগ দিয়েছি।’
খুলনা ডে-নাইট কলেজের শিক্ষার্থী নাজমুল হক জোহা বলেন, ‘এর আগেও আমরা দুবার আন্দোলন করেছি। তখন ভিসি স্যার আমাদের ফলাফল পুনর্মূল্যায়নের মিথ্যা আশ্বাস দিয়েছেন। তাই আমরা এবার অনশন করছি। প্রয়োজনে আমরণ অনশন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’
এ বিষয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (অপরাধ দক্ষিণ) মোহাম্মদ ইলতুৎমিশ জানান, ফলাফল নিয়ে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলতে চান। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।