অনলাইন সুবিধা পৌঁছায়নি নীলফামারীর দুটি রেলস্টেশনে। এখনও হাতে লেখা টিকিট বিক্রি হয় এখানে।
নীলফামারী জেলার চারটি রেলস্টেশনের মধ্যে সৈয়দপুর ও চিলাহাটিতে অনলাইনে এবং নীলফামারী ও ডোমারে হাতে লেখা টিকিট বিক্রি করা হয়।
এতে এক টিকিট ডাবল বিক্রিসহ বিভিন্ন রুটের টিকিট পেতে দুর্ভোগে পড়তে হয় এই অঞ্চলের যাত্রীদের। দ্রুত ডিজিটালাইজড সুবিধার মাধ্যমে অনলাইনে টিকিট সরবরাহের দাবি জানিয়েছে সচেতন মহল।
রেলস্টেশন সূত্রে জানা যায়, নীলফামারী রেলস্টেশন থেকে খুলনা অভিমুখে দুটি, রাজশাহীতে দুটি, ঢাকার উদ্দেশে একটি ট্রেন ছেড়ে যায়।
এর মধ্যে এই জেলার যাত্রীদের জন্য নীলসাগর এক্সপ্রেসে ৭৬টি, তিতুমীর ও বরেন্দ্র এক্সপ্রেসে ২৫টি করে, রূপসা ও সীমান্ত এক্সপ্রেস এবং রকেট মেইলে ৫০টি করে আসন বরাদ্দ রয়েছে।
জেলা শহরের কাঁচামাল ব্যবসায়ী রুবেল ইসলাম জানান, বিভিন্ন সময় ব্যবসার কাজে খুলনা, যশোর যেতে হয়। সব সময় টিকিটের জন্য দুর্ভোগ পোহাতে হয়। অ্যানালগের কারণে এই স্টেশন ছাড়া অন্য কোনো স্টেশনের তথ্য দিতে পারে না কর্তৃপক্ষ।
অনলাইন সুবিধায় কোনো স্টেশনে টিকিট রয়েছে কি না, সেটা জানা যায়। এক স্টেশন থেকে অন্য স্টেশনের টিকিটও সংগ্রহ করা যায়। এ ছাড়া এক টিকিট দুবার বিক্রি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।
নীলফামারী রেলস্টেশন মাস্টার ওবাইদুল ইসলাম রতন বলেন, ‘দুই স্টেশনে হাতে লেখা টিকিট বিক্রি হওয়ায় অনেক সময় মিসিং হয়। তখন দেখা যায়, এই স্টেশন থেকে টিকিট বিক্রি হওয়ার পর ডোমার স্টেশন থেকে একই আসনের বিপরীতে আবারও টিকিট বিক্রি করা হয়েছে। এতে ট্রেনে ওঠার পর যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েন।’
তিনি আরও বলেন, ‘অনলাইন হলে এই পরিস্থিতি তৈরি হবে না। কারণ কোন স্টেশনে কয়টি টিকিট অবিক্রীত রয়েছে, তা সার্ভারে দেখা যাবে। এমনকি এক স্টেশন থেকেই সব জায়গার টিকিট কেনার সুযোগ পাবেন যাত্রীরা।’
সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) নীলফামারী জেলার সভাপতি সাংবাদিক তাহমিন হক ববি বলেন, ‘জেলা শহরের উপকণ্ঠে অবস্থিত স্টেশনটি এখনও ডিজিটালাইজড সুবিধাবঞ্চিত থাকাটা আমাদের জন্য দুর্ভাগ্যজনক।’
নীলফামারী চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি প্রকৌশলী সফিকুল আলম ডাবলু জানান, আন্তনগরের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক রুট নীলফামারী-চিলাহাটি রেলপথ চালু হয়েছে। ব্যবসায়িক সমৃদ্ধতার জন্য অতিদ্রুত নীলফামারী ও ডোমার রেলস্টেশনকে অনলাইনের আওতায় নিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
এ বিষয়ে রেলের বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন বলেন, ‘আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে স্টেশন ডিজিটালাইজ করার ক্ষেত্রে অনেক বিনিয়োগ করতে হয়। তাই যেসব স্টেশনে বেশি টিকিট বিক্রি হয়, সেই স্টেশনগুলো আগে অনলাইনের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে।’
এই সিদ্ধান্তগুলো রেলভবন থেকে নেয়া হয় জানিয়ে এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘দ্রুত নীলফামারী ও ডোমার রেলস্টেশন থেকে অনলাইনে টিকিট বিক্রি শুরু করার পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে।’
জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান চৌধুরী জানান, বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে স্টেশন দুটিকে অনলাইনের আওতায় আনার ব্যবস্থা করা হবে।