মৌলভীবাজারে সড়ক দুর্ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী নবনীতা দাশ কাঁকনের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে তার বন্ধুদের মাঝে। কোনোভাবেই এই মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না তারা।
কাঁকনের বান্ধবী ঈশিতা রায় বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই আমরা বন্ধু ছিলাম। স্কুল-কলেজে এক সঙ্গে পড়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়েও এক সঙ্গে ভর্তি হয়েছিলাম। আমরা সিলেট থেকে মৌলভীবাজার এক সঙ্গে ফিরতাম। আর কোনো দিন তার সঙ্গে দেখা হবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘কাঁকনের ইচ্ছে ছিল আইনজীবী হবে। অসহায় মানুষকে আইনি সহায়তা দেবে। তা আর হলো না।’
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শোকের কথা তুলে ধরেন তার সহপাঠীরা।
অনামিকা সেন অধিকারী নামের একজন লিখেছেন, ‘আর কোনোদিন তরে দেখব না কাঁকন, আর কোনো দিন তরে জড়াইয়া ধরতে পারনা। তুই কেনে এত তাড়াতাড়ি আমাকে ফেলে গেলি!’
মৃত্তিকা দেব লিখেছেন, ‘সারাদিন সবাই কল, মেসেজ দিয়ে জিজ্ঞেস করছে কি হইছে তোর? প্রতিবার তুই নেই যখন বলছিলাম ভেতরটা জ্বলে পুড়ে শেষ হয়ে যাচ্ছিল……… তোর চাঁদ খুব ভালো লাগতো। আমি বলতাম কি আছে এমন যে এত চাঁদ দেখিস। তখন বুঝিনি যে তুই সেই চাঁদের কাছে চলে যাবি। এখন থেকে ওই তুই নামক চাঁদটাকে দূর থেকে দেখব, কথা বলব, কিন্তু তোকে স্পর্শ করতে পারবো না। তোকে আর জড়িয়ে ধরাও হবে না। এতটা দূরত্ব, কষ্ট কি আমার প্রাপ্য ছিল? প্লিজ, ফিরে আয় না রে।’
হবিগঞ্জ-বানিয়াচং সড়কের কবিরপুর এলাকায় শনিবার সকালে প্রাইভেটকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে নিহত হন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী কাঁকন। এ ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন তার মা, বাবা, বোনসহ ৪ জন।
২১ বছর বয়সী কাঁকনের গ্রামের বাড়ি বানিয়াচং উপজেলার সুনারু গ্রামে। পরিবারের সঙ্গে মৌলভীবাজার সদরের শান্তিবাগ এলাকায় থাকতেন। পড়তেন সিলেটের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে।
কাঁকনের মামা ত্রিদিব রায় জানান, রোববার মরদেহ দাহ করা হবে। কাঁকনের মায়ের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।