স্কুল খোলাকে কেন্দ্র করে পুরান ঢাকার মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। এরই মাঝে উচ্ছ্বাস নিয়ে স্কুলের ঘণ্টা বেজে উঠার অপেক্ষায় রয়েছেন শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকরা। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় বিবর্ণ হয়ে পড়া স্কুল-কলেজগুলো এখন সেজেছে নতুন সাজে।
শনিবার ঢাকার ওয়ারী বালিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গভর্নমেন্ট মুসলিম হাইস্কুল, গ্র্যাজুয়েটস উচ্চ বিদ্যালয়, সলিমুল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়সহ এর আশপাশের সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো ঘুরে দেখা যায় প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে স্কুল খোলাকে কেন্দ্র করে চলছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কাজকর্ম। সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা। শেষ মুহূর্তে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। দরজা-জানালা সংস্কার, মাঠের ঘাস কাটাসহ আনুষাঙ্গিক প্রস্তুতিও নিচ্ছেন।
গ্র্যাজুয়েট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খুরশিদা বেগম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার আমরা বিদ্যালয় পরিচ্ছন্নতার কাজ শেষ করেছি। আজ শ্রেণিকক্ষ প্রস্তুত করা হচ্ছে। নতুন একটা ভবন নির্মাণ হচ্ছে, সেজন্য নির্মাণ শ্রমিকদের কাপড় বা আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র কিছুটা এলোমেলো অবস্থায় আছে। তবে সেগুলো সকালের মধ্যে গুছানো হয়ে যাবে। দীর্ঘদিন গৃহবন্দি জীবন কাটিয়েছি।’
ছাত্রছাত্রীদের শ্রেণিকক্ষে পাঠদান, শিক্ষকদের সঙ্গে মিটিং সব মিলিয়ে পুরনো রুটিনমাফিক জীবন ফিরে পাব, সব কিছু যেন স্বপ্নের মত মনে হচ্ছে।
ওয়ারী বালিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহমুদা সুলতানা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন যাবত বিদ্যালয়টি করোনার টিকা দেয়ার বুথ হিসেবে ব্যবহার হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়ে জীবাণুনাশক ছিটিয়ে দেয়া হয়েছে। পরিচ্ছন্নতার কাজ শেষে সন্ধ্যার মধ্যেই শ্রেণিকক্ষগুলো পাঠদানের উপযোগী হয়ে যাবে।’
পরিচ্ছন্নতার কাজ শেষে শনিবার সন্ধ্যার মধ্যেই শ্রেণিকক্ষগুলো পাঠদানের উপযোগী হয়ে গেছে। ছবি: নিউজবাংলা
গ্র্যাজুয়েট স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী ইসমত জাহান বলেন, আজ অ্যাসাইনমেন্ট জমা দিতে এসেছি। গতকাল রাত থেকেই সময় যেন আর অতিবাহিত হচ্ছে না, কবে আসবে ১২ তারিখ? আবার ইউনিফর্ম পড়ে কবে স্কুলে আসব, সকল বন্ধুবান্ধবকে দেখতে পাব, আড্ডা দেবো। সব মিলিয়ে নতুন করে প্রাণের সঞ্চার ঘটবে।
ইসলামিয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিচ্ছন্নতাকর্মী ফাতেমা বলেন, ‘দীর্ঘ দেড় বছর পর স্কুলে ছাত্রছাত্রী আসবে। এটা ভেবেই আমি খুব আনন্দিত।’
দীর্ঘ ৬১ সপ্তাহ বন্ধ ছিল দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।