ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে একটি বিদ্যালয়ের ছাদ ধসে পড়েছে বলে কয়েকটি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলেও তার সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
উপজেলার ধরমন্ডল ইউনিয়নের নাসিরনগর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চিলেকোঠার ছাদটি ধসে পড়ে বলে শনিবার সংবাদ প্রকাশ হয়।
মূলত ওই ছাদ ঢালাইয়ের সময় উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলীকে না জানানো এবং কিছু অসঙ্গতি থাকায় তা ভেঙে ফেলতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ দেয়া হয়। ২৪ আগস্ট উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের পাঠানো সেই চিঠির একটি অনুলিপি নিউজবাংলা পেয়েছে।
অসঙ্গতি থাকায় বিদ্যালয়ের নবনির্মিত চিলেকোঠার ছাদ ভেঙে ফেলতে নির্দেশ দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স জমির জুলিয়া ট্রেডার্সের সত্ত্বাধিকারী জমির উদ্দিন আহমেদও একই তথ্য দিয়েছেন।
নাসিরনগর উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনে প্রাথমিক বিদ্যালয়টির ভবন নির্মাণের জন্য ২০১৯-২০ অর্থ বছরে দরপত্র আহ্বান করা হয়। প্রায় ৬৮ লাখ টাকার কাজটি পায় জমির জুলিয়া ট্রেডার্স নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
ঠিকাদারকে পাঠানো উপজেলা প্রকৌশলীর চিঠি
চিঠি থেকে জানা যায়, চাহিদাভিত্তিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের (প্রথম পর্যায়) আওতায় নাসিরনগরের ওই বিদ্যালয়ের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণের চুক্তির কাজ চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি শেষ হয়। তবে বিদ্যালয়ের চিলিকোঠার ছাদ কারিগরি কর্মকর্তাদের না জানিয়েই নির্মাণ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
গত ২৩ আগস্ট উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী ওমর ফারুক বিদ্যালয়ের নির্মাণকাজ পরিদর্শন করেন। ওই সময় মিকচার মেশিন ছাড়াই হাতে ঢালাইয়ের কাজ করা, নির্মাণস্থলে ভাইব্রেটর মেশিন না থাকা, নিম্নমানের খোয়া ব্যবহার করার মতো কয়েকটি ত্রুটি পান তিনি। পর দিনই তিনি চিলেকোঠার ছাদটি অপসারণ করতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দেন।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সত্ত্বাধিকারী জমির উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘উপজেলা প্রকৌশলী নতুন এসেছেন। প্রায় এক মাস আগে ওই বিদ্যালয়ের তিনতলার ছাদের উপর প্রায় ৩০ ফুট দৈর্ঘ্য ও প্রায় ১২ ফুট প্রস্থের চিলিকোঠার ছাদ ঢালাই দেয়া হয়। ঢালাইয়ের সময় তাদের লোকজন উপস্থিত ছিল না।
‘গত মাসে ঢালাই দেয়া ছাদ ভেঙে ফেলতে উপজেলা প্রকৌশলী আমাকে চিঠি দিয়েছেন। তাই শনিবার সকালে শ্রমিকরা ছাদ ভেঙে ফেলেছে।’
এ বিষয়ে জানতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অজিত কুমার দাসের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ চেষ্টা করেও তা সম্ভব হয়নি।
তবে বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি আব্দুর রহিম জানান, বিদ্যালয়ের তিনতলার উপরে ঢালাইয়ের পর ছাদটি প্রায় চার ইঞ্চি দেবে যায়। বিষয়টি জানতে পরে উপজেলা প্রকৌশলীর নির্দেশে ছাদটি ভেঙে ফেলা হয়।
উপজেলা প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘বিদ্যালয় ভবন নির্মাণে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আমাদের না জানিয়ে চিলিকোঠার ছাদ ঢালাই দেওয়ায় আমরা তা অপসারণের নির্দেশ দিয়েছি। ঠিকাদার শনিবার সকালে চিলিকোঠার ছাদ ভেঙে ফেলে। ছাদ ধসে পড়ার অভিযোগ সত্য নয়।’