মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার হাড়াভাঙ্গা গ্রামে সালিশে এক যুবককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক মোড়লের বিরুদ্ধে। মারধরের একটি ভিডিও শনিবার ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
গুরুতর অবস্থায় গত বুধবার রাতে তাকে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। স্থানীয় এক যুবক তাকে মারধরের ভিডিওটি শনিবার ফেসবুকে দিলে ঘটনাটি জানাজানি হয়।
আরিফিন রেজা নামে ওই যুবক এলাকায় ডিশ লাইনের ব্যবসা করেন। স্থানীয় এক মাদ্রাসাছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের অভিযোগ এনে তাকে নির্যাতন করা হয়।
রেজার পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, ডিশ ব্যবসা নিয়ে দ্বন্দ্বে তাকে সালিশে নির্যাতন করা হয়। এ ছাড়া ৭০ হাজার টাকা জরিমানা আদায়ের চেষ্টার অভিযোগও করেছেন তারা।
সালিশে রেজাকে মারধর করেন স্থানীয় মোড়ল ফারুক হোসেন। তার পরিবারের সদস্যদের দাবি, রেজা বুধবার রাতে তার প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গেলে স্থানীয়রা তাকে তাড়া করে ধরেন। পরে ফারুকসহ গ্রামের অনেকের উপস্থিতিতে সালিশে তাকে সামান্য মারধর করা হয়।এ ঘটনায় গাংনী থানায় অভিযোগ দিলেও পুলিশ মামলা রেকর্ড করেনি বলে অভিযোগ করেছেন রেজার বাবা কামাল হোসেন।
তিনি অভিযোগ করেন, এক মাদ্রাসাছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের ‘অপবাদ’ দিয়ে রেজাকে বেধড়ক মারধর করা হয়। বিষয়টি গোপন রাখতে হুমকিও দিয়েছে তারা। সালিশকারীরা স্থানীয় প্রভাবশালী হওয়ায় তারা ভয়ে চুপ ছিলেন।
কামাল আরও অভিযোগ করেন, রেজাকে মারধর করে সালিশে ফাঁকা স্ট্যাম্পে জোর করে স্বাক্ষর নিয়ে ৭০ হাজার টাকা জরিমানা আদায়ের চেষ্টা করছেন ফারুক ও তার সহযোগীরা।
রেজার চাচাতো ভাই পলাশ জানান, ডিশ ব্যবসা নিয়ে ফারুকের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে।
অভিযোগ ওঠা ফারুক হোসেনের দাবি, তীব্র গরমের কারণে ঘটনার রাতে তিনি বাড়ির পাশের স্কুলমাঠে বসেছিলেন। হঠাৎ লোকজন চোর চোর বলে দৌড়াতে থাকলে তিনিও পিছে পিছে যান। পরে দেখেন কিছু লোকজন রেজাকে একটি মাচানে আটকে রেখেছে।
তিনি বলেন, ‘সেখানে উপস্থিত লোকজন রেজার বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ এনে তার ওপরে চড়াও হলে পরিস্থিতি সামাল দিতে রেজাকে তিনটা শাট মেরে (সজোরে লাঠি দিয়ে বাড়ি দেয়া) উত্তপ্ত পরিবেশ ঠান্ডা করার চেষ্টা করি। আর টাকা নেয়া ও স্ট্যাম্পে স্বাক্ষরের বিষয়টি আমার জানা নেই।’
গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বজলুর রহমান নিউজবাংলাকে জানান, রেজার পরিবারের অভিযোগের বিষয়ে পুলিশ তদন্ত করছে। তদন্ত শেষে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।