দীর্ঘ ১৮ মাস বন্ধ থাকার পর আগামী ১৭ অক্টোবর থেকে ধাপে ধাপে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আর এদিকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগ বা ইনস্টিটিউট ৭ অক্টোবর থেকে সশরীরে পরীক্ষা নিতে পারবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু এর আগে শতভাগ শিক্ষার্থী টিকার আওতায় আসবে কি না অথবা না আসলেও ক্যাম্পাসে এসে টিকা নিতে পারবে কি না তা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে সংশয়।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিভিন্ন বর্ষের আটকে থাকা সেমিস্টার পরীক্ষা আগামী ৭ অক্টোবর থেকে সশরীরে শুরু হবে। পরীক্ষার এই সিদ্ধান্তে অনেক শিক্ষার্থীই গ্রাম থেকে ঢাকায় আসা শুরু করেছে। কেউ প্রথম ডোজ গ্রাম থেকেই নিয়ে আসছে, আবার কেউ কেউ টিকা না পেলেও আবেদন করেছে। তারা এখন ঢাকায় ফিরে কিভাবে টিকা নিবে এই নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও এই বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি।
প্রথম ডোজ টিকা নিয়ে ঢাকায় আসা ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী আবু রায়হান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘৭ তারিখ পরীক্ষার কথা ভেবে ঢাকায় চলে আসছি প্রিপারেশন নিতে। পরের মাসে টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার মেসেজ আসবে। জানি না আবার গ্রামে গিয়ে ভ্যাক্সিন দেওয়া লাগে কি না।’
আরেক শিক্ষার্থী মামুন বলেন, ‘পরীক্ষার কথা ভেবে চলে আসলাম এখন আবার ভ্যাক্সিনের চিন্তাও করতে হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে টিকার ব্যবস্থা করলে আমার মতো অনেকরই সুবিধা হয়।’
এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আইনুল ইসলাম নিউজবাংলাকে জানান, আমি এখনই এটা নিয়ে বলতে পারছি না, রেজিস্ট্রারের সঙ্গে কথা বলে জানতে হবে। তবে এইটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা শিক্ষার্থীদের ডাটা নিচ্ছি কারা প্রথম ডোজ নিয়েছে, কারা এখনও নেয়নি। যারা প্রথম ডোজ নিয়েছে তারা এখানে নিতে পারবে কি না তা নিয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। ৭ তারিখ বিশ্ববিদ্যালয় খুলবে, তো এখনও কিছুদিন সময় আছে। আশা করছি আমরা বিশ্ববিদ্যালয় খোলার আগেই সিদ্ধান্ত নিয়ে জানাতে পারব।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের ডাটা বিভিন্ন বিভাগে চেয়েছি। কিছু বিভাগ এখনও ডাটা দেয় নি। সকল বিভাগের ডাটাগুলো পেলে আমরা ইউজিসিতে পাঠাবো এবং সরকার বা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলব। তারা যদি দেয় তাহলে তো ভালো। তাদের ওপর নির্ভর করবে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে টিকা দিতে পারব কি না।’
নিউজবাংলাকে তিনি আরও বলেন, ‘যদি পরীক্ষার আগেই সব শিক্ষার্থী টিকার আওতায় না আসে তবে ডিন এবং চেয়ারম্যানরা মিটিং করে উপাচার্যকে জানাবে, তারপর কি করা যায় সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
এর আগে গত ৭ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হকের সভাপতিত্বে সকল ডিন, ইনস্টিটিউটের পরিচালক ও বিভাগের চেয়ারম্যানদের সমন্বয়ে উপাচার্যের কনফারেন্স কক্ষে অনুষ্ঠিত এক বিশেষ সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২০২১ সালের ৭ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগ ও ইনস্টিটিউটে সশরীরে পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে যদি সার্বিক পরিস্থিতির কারণে সশরীরে পরীক্ষা নেয়া সম্ভব না হয়, তবে অনলাইনে পরীক্ষা নেয়া হবে।
অনুষদের ডিন ও বিভাগের চেয়ারম্যান ও ইনস্টিটিউটের পরিচালকরা আলোচনা করে পরীক্ষার রুটিন দেবেন এবং পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক পরীক্ষা নেয়ার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। তবে এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো বিভাগ পরীক্ষার রুটিন দেয় নি। বেশিরভাগ বিভাগীয় সূত্রে জানা গেছে, রোববার স্ব স্ব বিভাগের চেয়ারম্যানসহ বিভাগের শিক্ষকদের মিটিংয়ের পর পরীক্ষার তারিখ সংক্রান্ত ঘোষণা আসতে পারে।