বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নো মাস্ক, নো স্কুল

  •    
  • ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৮:৩৩

রাজধানীর একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখা গেছে, স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য বিভিন্ন সচেতনতামূলক ব্যানার স্কুল প্রাঙ্গণে টাঙানো হয়েছে। যেখানে ‘নো মাস্ক, নো স্কুল’ ছাড়াও ‘অপ্রয়োজনে মুখ, চোখ ও নাক স্পর্শ না করি’, ‘বারবার সাবান ও পানি দিয়ে হাত পরিষ্কার করি’ ইত্যাদি স্লোগান আছে।  

স্কুলে ক্লাস করতে আসা ছাত্রছাত্রীদের অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে। জানানো হয়েছে, স্কুলে কেউ মাস্ক ছাড়া এলে ঢুকতেই দেয়া হবে না।

করোনাভাইরাসের কারণে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ স্কুলগুলো আবার শিশু-কিশোরদের পদচারণায় মুখর হবে রোববার থেকে। খুলবে কলেজের দরজাও।

এরই মধ্যে সব প্রস্তুতি শেষ করা হয়েছে। করোনায় যে মানসিক আঘাত এসেছে, তার কারণে শিশু কিশোরদের সঙ্গে আচরণের ক্ষেত্রে সংবেদনশীল থাকার নির্দেশ এসেছে। বলা হয়েছে, আনন্দের সঙ্গে পড়াশোনার ব্যবস্থা করতে।

রাজধানীর একাধিক স্কুলে গিয়ে বেলুনসহ নানা উপকরণ দিয়ে সাজাতে দেখা গেছে। স্কুলে শিশু-কিশোররা যেন নির্ধারিত দূরত্ব বজায় রেখে অবস্থান করে, সে জন্য করিডোরে দাগ দিয়ে দেয়া হয়েছে।

সেই সঙ্গে স্বাস্থ্যবিধির বিষয়টিতে গুরুত্ব দিয়ে ফটকে বড় করে ব্যানার টানিয়ে লেখা হয়েছে, ‘নো মাস্ক, নো স্কুল’। অর্থাৎ মাস্ক ছাড়া এলে কাউকে ক্লাস করতে দেয়া হবে না।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী বেশিরভাগ স্কুলে শিক্ষার্থী সংখ্যা অনুপাতে একাধিক ভাগে ভাগ ও তিন ফুট দূরত্ব রেখে শিক্ষার্থী বসানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ছাড়া আগে স্কুলের কিছু গেট বন্ধ থাকলেও এবার শিক্ষার্থীদের ঢুকতে ও বের হতে সব গেটই খুলে দেয়া হবে।

শিশু-কিশোরীদের জন্য স্কুল সাজিয়েছে ভিকারুন নিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ

রাজধানীর একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখা গেছে, স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য বিভিন্ন সচেতনতামূলক ব্যানার স্কুল প্রাঙ্গণে টাঙানো হয়েছে। যেখানে ‘নো মাস্ক, নো স্কুল’ ছাড়াও ‘অপ্রয়োজনে মুখ, চোখ ও নাক স্পর্শ না করি’, ‘বারবার সাবান ও পানি দিয়ে হাত পরিষ্কার করি’ ইত্যাদি স্লোগান আছে।

রাজধানীর ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ মূল ফটকেই লাগানো হয়েছে বিভিন্ন সচেতনতামূলক ব্যানার।

অধ্যক্ষ কাজী শামীম ফরহাদ বলেন, ‘শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সচেতন করতে আমরা বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। এর অংশ হিসেবে বিভিন্ন সচেতনতামূলক ব্যানার টাঙানো হয়েছে।’

একই চিত্র দেখা যায়, রাজধানীর ইস্কাটন গার্ডেন স্কুলে। স্কুলটির প্রধান শিক্ষক দুলাল চন্দ্র চৌধুরী বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি মানার ওপর আমরা বেশি জোর দিচ্ছি। কেননা একমাত্র স্বাস্থ্যবিধি মানলেই করোনা প্রতিরোধ করা সম্ভব।

‘শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সচেতন করতে আমরা স্কুলের ফটক ও ভেতরে বিভিন্ন সচেতনতামূলক ব্যানার টাঙিয়েছি।’

ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজও দেয়াল ও ক্লাসরুমে টাঙিয়ে দেয়া হয়েছে বিভিন্ন সচেনতামূলক ব্যানার।

অধ্যক্ষ কামরুন নাহার বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি যেন কঠোর ভাবে মানা হয় সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং তদারকি দলও গঠন করা হয়েছে। আর শিক্ষার্থীদের সচেতন করতে আমাদের বিভিন্ন সচেতনতামূলক ব্যানারও তৈরি করেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রায় ১৭ মাস পর কাল বিদ্যালয় খুলছে। এজন্য ভিকারুননিসার প্রতিটি ক্যাম্পাস এবং ক্লাসরুমকে বিশেষভাবে সাজানো হয়েছে। এর শিক্ষকদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে যেন শিক্ষার্থীদের কোনো রকম চাপ না দিয়ে পড়াশোনাকে আনন্দদায়ক করে তোলার ব্যবস্থা করা হয়।’

২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ার ৯ দিন পর ১৭ মার্চ থেকে স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ধাপে ধাপে ছুটি বাড়িয়ে তা ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে।

স্কুল প্রাঙ্গণ নানা উপকরণ দিয়ে সাজাচ্ছেন ভিকারুন নিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের এই শিক্ষিকা

জুন মাসের শেষে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার তারিখ দিয়েও করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে প্রাণঘাতী ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ার পরিপ্রেক্ষিতে সে পরিকল্পনা থেকে সরে আসতে বাধ্য হয় সরকার। জুলাই থেকে আরও কঠোর বিধিনিষেধে যায় সরকার।

করোনাভাইরাসের কারণে ১৭ মাস বন্ধ থাকার পর স্কুল-কলেজে সশরীরে পাঠদান শুরুর অপেক্ষা এখন।

প্রথম দিন প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস হবে।

গত রোববার আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠক শেষে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ঘোষণা দেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। একই দিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তুতি হিসেবে ১৯টি নির্দেশনা জারি করে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। এসব নির্দেশনার আলোকেই প্রস্তুত করা হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো।

১৯ দফা নির্দেশনায় যা বলা হয়েছে

# শিক্ষাঙ্গনের প্রবেশমুখে করোনার স্বাস্থ্যবিধি ব্যানার বা অন্য কোনো উপায়ে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করতে হবে।

# প্রবেশপথে সব শিক্ষক-কর্মচারী-শিক্ষার্থী বা অভিভাবকের তাপমাত্রা মাপতে হবে।

# শিক্ষার্থীর ভিড় এড়াতে প্রতিষ্ঠানের সব প্রবেশমুখ ব্যবহার করতে হবে। যদি একটি প্রবেশমুখ থাকে সে ক্ষেত্রে একাধিক প্রবেশমুখের ব্যবস্থা করার চেষ্টা করতে হবে।

# প্রতিষ্ঠান খোলার প্রথম দিনে শিক্ষার্থীদের আনন্দঘন পরিবেশে শ্রেণি কার্যক্রমে স্বাগত জানাতে বলা হয়েছে।

# শিক্ষার্থীরা কীভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতিষ্ঠানে অবস্থান করবে এবং বাসা থেকে যাওয়া-আসা করবে, সে বিষয়ে শিক্ষণীয় ও উদ্বুদ্ধকারী বক্তব্য দিতে হবে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের দেয়া ভিডিও প্রদর্শনের ব্যবস্থা করতে হবে।

# প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের একটি কক্ষ প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থাসহ আইসোলেশন কক্ষ প্রস্তুত রাখতে হবে।

# প্রতিষ্ঠানের সব ভবনের কক্ষ, বারান্দা, সিঁড়ি, ছাদ ও আঙিনা যথাযথভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার ব্যবস্থা করতে হবে।

# ওয়াশরুম নিয়মিত সঠিকভাবে পরিষ্কার রাখা এবং পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা করতে হবে।

# শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মচারী ও অভিভাবক প্রবেশের সময় সরকারের দেয়া স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে প্রতিপালনের ব্যবস্থা করতে হবে।

# প্রতিষ্ঠানের সব শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীর সঠিকভাবে মাস্ক (সম্ভব হলে কাপড়ের মাস্ক) পরতে হবে।

# প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন স্থানে সাবান বা হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে হাত ধোয়ার এমন ব্যবস্থা করতে হবে, যেন শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ঢোকার আগে সাবান দিয়ে হাত ধুতে পারে।

# শ্রেণিকক্ষে তিন ফুট শারীরিক দূরত্বে ছাত্র-ছাত্রীদের বসার ব্যবস্থা করতে হবে।

# শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের খেলার মাঠ, ড্রেন ও বাগান যথাযথভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করতে হবে। কোথাও যেন পানি জমে না থাকে তা নিশ্চিত করতে হবে।

# প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির সংখ্যা নিরূপণ করতে হবে।

# সব শিক্ষার্থীর উপস্থিতি নিশ্চিত করার ব্যবস্থা করতে হবে।

# স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে প্রতিপালন করা হচ্ছে কি না, তা পর্যবেক্ষণ ও বাস্তবায়নের জন্য শিক্ষকদের সমন্বয়ে কমিটি করতে হবে।

# প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে আনন্দঘন শিখন কার্যক্রমের মাধ্যমে পড়াতেও বলা হয়েছে।

# প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয় অবকাঠামোগত মেরামত, বৈদ্যুতিক মেরামত এবং পানি সংযোগজনিত মেরামত আগেই শেষ করতে হবে।

এবং

# স্কুল বা কলেজের ব্যবস্থাপনা কমিটি ও অভিভাবকদের সঙ্গে সভা করে এ-সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

এ বিভাগের আরো খবর