বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

চবি উপাচার্যকে শোকজ করেছে ‘বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী নেটওয়ার্ক’

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ২০:৪১

শোকজপত্রে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এই সকল কার্যক্রমকে কেন রাষ্ট্রের আইন ও সংবিধান পরিপন্থি ও অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং তিন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ও ইস্যু করা শোকজ নোটিশ কেন প্রত্যাহার করা হবে না এই মর্মে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে লিখিতভাবে জবাব দেয়ার জন্য বলা হলো।

মানববন্ধনে অংশ নিতে বাধ্য করার অভিযোগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) তিন ছাত্রনেতাকে শোকজের প্রতিবাদে চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারকে পাল্টা শোকজ করেছে ‘বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী নেটওয়ার্ক’।

শুক্রবার দেশের ৩১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৫ জন ছাত্র প্রতিনিধির স্বাক্ষরিত একটি কারণ দর্শানো নোটিশ চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারকে পাঠানো হয়েছে।

এর একটি অনুলিপি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাষ্ট্রপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ, ইউজিসির চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. কাজী শহিদুল্লাহ ও চবি প্রক্টর রবিউল হাসান ভূঁইয়া বরাবরও পাঠানো হয়েছে।

কারণ দর্শানোর নোটিশে বলা হয়েছে, আমরা সারা দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত প্ল্যাটফর্ম ‘বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী নেটওয়ার্ক ’-এর পক্ষ থেকে গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, সম্প্রতি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নেয়া কতিপয় সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের হেনস্তা করা, তাদের সামাজিক মর্যাদা ক্ষুণ্ন করা এবং এক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে জোরপূর্বক মিথ্যা স্বীকারোক্তি আদায়ের মধ্য দিয়ে কিছু গুরুতর অপরাধ করা হয়েছে।

নোটিশে চবি প্রশাসনের এমন কর্মকাণ্ড নজিরবিহীন এবং চরম স্বেচ্ছাচারিতার বহিঃপ্রকাশ উল্লেখ করে আরও বলা হয়েছে, করোনা পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের আবাসন ও পরিবহন নিশ্চিত করে পরীক্ষা নেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব। সেটি না করে উল্টো শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বন্ডসই আদায়ের মাধ্যমে তাদের যৌক্তিক দাবি ও স্বাধীন অভিব্যক্তি প্রকাশের অধিকারকে রুদ্ধ করা হয়েছে। এটি সংবিধানের ৩৭ ও ৩৯ অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে একজন শিক্ষার্থীর সভা-সমাবেশ ও স্বাধীন মত প্রকাশের মৌলিক অধিকারকে হরণ করে। ফলে প্রশাসনের এ ধরনের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত মাত্রায় অগণতান্ত্রিক ও রাষ্ট্রের সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং অবৈধ তৎপরতা।

চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে মুচলেকা নিয়ে তিন ছাত্রকে শোকজ করাকে ফৌজদারি অপরাধ আখ্যা দিয়ে নোটিশে আরও বলা হয়েছে, ৭ সেপ্টেম্বর সংবাদমাধ্যমে দেয়া এক বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর রবিউল হাসান ভূঁইয়া দাবি করেন, মিটন চাকমা নামক এক শিক্ষার্থী পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগে লিখিত দিয়েছে সে পরিবহন ও আবাসিক হল খোলার দাবি করবে না তারপরও সে কেন আন্দোলন কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছে? আমরা মনে করি, একটি অবৈধ মুচলেকার ওপর ভিত্তি করে কোনো শিক্ষার্থী কোনো নৈতিক আন্দোলনে যুক্ত হবে কিংবা হবে না সেই প্রশ্ন তোলাই প্রক্টর মহোদয়ের এখতিয়ারবহির্ভূত কাজ। বরং এ ধরনের জিজ্ঞাসাবাদের মধ্য দিয়ে মিটন চাকমার ওপর মানসিক চাপ সৃষ্টি করা হয়েছে এবং স্পষ্টতই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্ররোচনায় তিন ছাত্রনেতার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ উত্থাপনে বাধ্য হয়েছে।

ওই তিন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগকে অন্তঃসারশূন্য উল্লেখ করে নোটিশে আরও বলা হয়েছে, ‘মিটন চাকমার কাছ থেকে মিথ্যা অভিযোগপত্র আদায় করে তার ভিত্তিতে ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী রাজেশ্বর দাশ গুপ্ত , ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র শাহ মোহাম্মদ শিহাব ও ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে পদার্থবিজ্ঞানের শিক্ষার্থী আশরাফি নিতুকে শোকজ করা হয়েছে।

‘এদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয়েছে, তারা অভিযোগকারী শিক্ষার্থীকে আন্দোলন কর্মসূচিতে আসতে প্ররোচিত করেছে। এ বিষয়ে আমাদের বক্তব্য হলো, বাংলাদেশ দণ্ডবিধি ১৮৬০ এর ১০৭ ধারা অনুসারে কোনো অপরাধ সংগঠনে সহায়তা করাকে প্ররোচনা বলে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। অথচ সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট যেকোনো দাবিতে মিছিল, মানববন্ধন কিংবা প্রতিবাদ কর্মসূচি করা কোনো অপরাধমূলক কাজ নয়। এখানে শিক্ষার্থীরা নিজের অধিকার আদায়ে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করে। ফলে ছাত্রদের ন্যায্য আন্দোলনে অংশ নেয়ার জন্য কোনো শিক্ষার্থীকে প্ররোচিত ও বাধ্য করার অভিযোগ একটি অন্তঃসারশূন্য অভিযোগ।’

সাত কর্মদিবসের মধ্যে জবাব দেয়ার কথা উল্লেখ করে শোকজপত্রে বলা হয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এই সকল কার্যক্রমকে কেন রাষ্ট্রের আইন ও সংবিধান পরিপন্থি ও অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং তিন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ও ইস্যু করা শোকজ নোটিশ কেন প্রত্যাহার করা হবে না এই মর্মে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে লিখিতভাবে জবাব দেয়ার জন্য বলা হলো।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী নেটওয়ার্কের পক্ষ থেকে ৩১টি বিভিন্ন পাবলিক ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৫ জন ছাত্র প্রতিনিধি এই শোকজপত্রে স্বাক্ষর করেছেন।

৭ সেপ্টেম্বর পালি বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র মিটন চাকমা নামের এক শিক্ষার্থীকে প্ররোচনা দিয়ে মানববন্ধনে অংশ নিতে বাধ্য করার অভিযোগে তিন ছাত্রনেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে অভিযুক্তদের দাবি ছিল, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অভিযোগ দায়েরের জন্য মিটন চাকমাকে বাধ্য করেছে।

অভিযুক্ত তিন ছাত্রনেতা হলেন অর্থনীতি বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রাজেশ্বর দাশগুপ্ত, ইংরেজি বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শাহ মোহাম্মদ শিহাব ও পদার্থবিদ্যা বিভাগের একই শিক্ষাবর্ষের আশরাফি নিতু।

এদের মধ্যে প্রথম দুজন গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের কর্মী এবং অপরজন শাখা ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় ছাত্র ইউনিয়নের সদস্য।

‘বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী নেটওয়ার্ক’ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে গড়ে ওঠা একটি সম্মিলিত প্ল্যাটফর্ম।

এ বিভাগের আরো খবর