পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় একটি কালভার্টের মুখে ঘর ও মুরগির খামার নির্মাণ করায় পানিতে তলিয়ে গেছে ফসলি জমি। এর প্রতিকার চেয়ে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী শতাধিক পরিবার। তাদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পানি নিষ্কাশনে বিকল্প ব্যবস্থার উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন।
স্থানীয় লোকজন জানান, ওই কালভার্টের পশ্চিমাংশে নিজ জমিতে আমির হামজা নামের এক ব্যক্তি চলতি বছরের শুরুতে ইট-সিমেন্ট ও টিন দিয়ে মুরগির খামার করেন। কালভার্টের মুখ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বৃষ্টি শুরুর পর গত সাড়ে ৪ মাস ধরে জলাবদ্ধ হয়ে পড়ে ৬০০ বিঘা জমি।
স্থানীয়ভাবে কোনো সমাধান না পেয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার জন্য উপজেলা প্রশাসন ও জেলা প্রশাসককে অভিযোগ দেয় ভুক্তভোগী এক শর বেশি পরিবার।
প্রশাসনের ভাষ্য, স্থানীয় চেয়ারম্যানের সহায়তায় কালভার্টের পাশে সেচনালা করে সমস্যাটি সমাধানের চেষ্টা চলছে।
তেঁতুলিয়া উপজেলার বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের কালদাসপাড়া গ্রামে সম্প্রতি গিয়ে দেখা যায়, ওই এলাকার অনেক ফসলি জমি পানিতে ডুবে রয়েছে। অন্যদিকে কালভার্টটি বন্ধ করে দেয়ায় একমুখী পানির চাপে সেখান থেকে আধা কিলোমিটার দূরের একটি সেতু ও দুটি পুরোনো কালভার্ট প্রায় ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, প্রায় ৫০ বছর আগে কালদাসপাড়া থেকে ডাঙ্গী বস্তি পর্যন্ত সড়কের পশ্চিমাংশে সরকারিভাবে একটি কালভার্ট নির্মাণ করা হয়। কালভার্টটি প্রায় ৫০০ থেকে ৬০০ বিঘা জমির ফসলের ওপর পানির চাপ কমানোর জন্য তৈরি করা হয়।
এ বিষয়ে নুর মোহাম্মদ নামের এক কৃষক জানান, আমির হামজা তার জমিতেই খামার তৈরি করেছেন। এতদিন ধরে ওই স্থানটি ফাঁকা থাকায় কোনো সমস্যা হয়নি। কিন্তু এখন পানি আটকে যাচ্ছে।
একই কথা বলেন মকবুল হোসেন নামের ওই এলাকার আরেক বাসিন্দা। তিনি জানান, ফসলি জমির ওই কালভার্টটি প্রধান মুখ। একই সঙ্গে সড়কের ওপর একটি সেতু ও দুটি কালভার্ট ভেঙে পড়ছে।
তবে এ বিষয়ে খামারি আমির হামজা বলেন, ‘আমি আমার জমিতে ঘর নির্মাণ করে খামার তৈরি করেছি। পাশেই আমার বাড়ি। আমার বাড়ির জমি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় আমি ঘরটি নির্মাণ করেছি।
‘আমিও প্রশাসনকে জানিয়েছি। এ সমস্যা থেকে আমিও মুক্তি চাই।’
তেঁতুলিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ছায়েম মিয়া বলেন, ‘কালভার্টের মুখ বন্ধ করে ঘর বা খামার তৈরি করার বিষয়ে স্থানীয়দের অভিযোগের খবর পাওয়ার পর তদন্ত করেছি আমরা। বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বলেন, ‘আমি অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিদর্শন করেছি। যেহেতু জায়গাটি আমির হামজার খতিয়ানভুক্ত জমি, তাই তার ক্ষতি করে কোনো পদক্ষেপ নেয়া সম্ভব নয়।’
ইউএনও সোহাগ আরও বলেন, ‘এলাকার আবদ্ধ পানি নিষ্কাশনের জন্য সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানকে সেচনালা করার জন্য পরিষদে প্রকল্প দাখিল করতে বলা হয়েছে।’