প্রায় ১৭ মাস পর খুলতে যাওয়া স্কুলে কোন রুটিনে ক্লাস হবে তা নির্দিষ্ট করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
রোববার স্কুল খোলার দিন থেকেই নতুন রুটিনে শুরু হবে ক্লাস।
নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (পলিসি অ্যান্ড অপারেশন) মনীষ চাকমা।
তিনি বলেন, চালু হওয়ার পর থেকে বিদ্যালয়ে কোন রুটিনে ক্লাস অনুষ্ঠিত হবে তা চূড়ান্ত করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধানদের কাছে রুটিন এরই মধ্যে পাঠানো হয়েছে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, নতুন রুটিনে কোভিড-১৯ স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতিদিন প্রথম শিফটে ক্লাস শুরু হবে সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে। তিনটি বিষয়ে ৪৫ মিনিট করে পাঠদান চলবে। শেষ হবে ১২টা ০৫ মিনিটে।
তবে শিক্ষার্থীদের সকাল ৯টা থেকে ৯টা ২৯ মিনিটের মধ্যে শ্রেণিকক্ষে ঢুকতে হবে।
দ্বিতীয় শিফটে ক্লাস শুরু হবে দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে যা শেষ হবে বেলা ৩টা ৪৫ মিনিটে। তবে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ঢুকবে দুপুর ১২টা ৪০ মিনিট থেকে ১টা ১০ মিনিটের মধ্যে।
রুটিনে আরও বলা হয়, প্রথম সপ্তাহের রুটিন অনুযায়ী চতুর্থ শ্রেণির বাংলা, গণিত ও ইংরেজি বিষয়ে পাড়ানো হবে। পরের সপ্তাহে বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়, প্রাথমিক বিজ্ঞান এবং ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা বিষয়ে পাঠদানের কার্যক্রম চলবে।
শুধু পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে ছয় দিন ক্লাস করবে। প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে এক দিন ক্লাস করবে।
তবে শিক্ষার্থীর তুলনায় শ্রেণিকক্ষের সংখ্যা কম হলে ওপরে উল্লিখিত রুটিন অনুসরণ করে একাধিক শিফটে শ্রেণি পাঠদান করতে হবে।
করোনা সংক্রমণের কারণে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। এরপর দফায় দফায় বাড়ানো হয় ছুটির মেয়াদ। সর্বশেষ ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছুটি শেষে ১২ সেপ্টেম্বর থেকে খুলবে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো।
এর পরের দিন খোলা হবে মেডিক্যাল, ডেন্টাল ও নার্সিংবিষয়ক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
দ্রুত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে সংশ্লিষ্টদের আগে থেকেই তাগিদ দিয়ে আসছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সর্বশেষ ২ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদে তিনি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব স্কুল খুলে দেয়ার নির্দেশ দেন।
এদিকে দীর্ঘ সময় ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থী বিশেষ করে শিশুদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করছেন মনোচিকিৎসকরা। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও।
জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনা মহামারির কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় দেশের ৪ কোটির বেশি শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের ভাষ্য, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যত বেশি সময় বন্ধ থাকবে, ততই বাড়বে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা।