বন্ধ থাকার প্রায় দেড় বছর পর রোববার থেকে সারা দেশে খুলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সেই হিসাবে হাতে বাকি আর মাত্র দুইদিন। এরই মধ্যে শিক্ষার্থীদের পাঠাদানের প্রস্তুতি সেরে এনেছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান।
এই চিত্রের বিপরীত দৃশ্য শরীয়তপুরের ৬৩টি স্কুলে। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে বন্যার পানি না নামায় পাঠদান কীভাবে শুরু হবে তা নিয়ে চিন্তিত খোদ জেলা শিক্ষা বিভাগ।
জেলায় পদ্মার পানি বইছে বিপৎসীমার ওপরে। বানের জলে তলিয়ে আছে তিন উপজেলার ৫০ গ্রাম। এসব উপজেলার ৫৭টি প্রাথমিক ও ৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়েও উঠেছে পানি।
এদেরই একটি নড়িয়া উপজেলার পদ্মার তীরে চেরাগ আলী ব্যাপারীকান্দি গফুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
স্কুলটির প্রধান শিক্ষক ফাতেমা বেগম বলেন, ‘১০-১২ দিন হলো এলাকায় বন্যার পানি ঢুকেছে। স্কুলের ক্লাসরুমেও পানি ঢুকেছে। পানি না নামা পর্যন্ত স্কুল খোলা যাবে না।’
নড়িয়ার ঈশ্বরকাঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান বলেন, ‘প্রায় দেড় বছর ধরে স্কুল বন্ধ। এখন খোলার খবরে স্বস্তি পেয়েছিলাম, কিন্তু বন্যার কারণে স্কুলের মাঠ ও রাস্তা পানিতে তলিয়ে গেছে। এখন কবে স্কুল চালু করতে পারব বুঝতে পারছি না।’
জাজিরার কুন্ডেরচরের সমির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘এমনিতেই এই স্কুল পদ্মার ভাঙনের মুখে আছে। জিও ব্যাগ দিয়ে ঠেকিয়ে রাখা হচ্ছে। তার মধ্যে আবার বন্যার পানি মাঠে। এলাকার রাস্তা-ঘাটেও পানি।’
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘১২ সেপ্টেম্বর সব বিদ্যালয় খোলার প্রস্তুতি আমাদের রয়েছে। তবে কোনো কোনো বিদ্যালয়ের মাঠ ও রাস্তা বন্যার পানিতে তলিয়েছে। এই সময়ের মধ্যে বন্যার পানি নেমে না গেলে ওইসব স্কুল তো আপাতত বন্ধ রাখতে হবে।
‘মাঠ পর্যায়ে শিক্ষা কর্মকর্তা ও শিক্ষকদের নির্দেশ দেয়া আছে বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হলে সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু করার জন্য। আর বিকল্পভাবে কোনো উঁচু স্থানে পাঠদান শুরু করা যায় কি না তারও চেষ্টা করা হচ্ছে।’
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার শরীয়তপুরে পদ্মা বইছে বিপৎসীমার ৪৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে।
সংস্থাটির শরীয়তপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম আহসান হাবীব জানিয়েছেন, ‘বৃষ্টি ও নিম্নচাপ আর না হলে নতুন করে বন্যার আশঙ্কা নেই। পানিও দ্রুতই কমে যাবে।’