তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে মামলায় খালাস পেয়ে লেখক ও সাংবাদিক প্রবীর সিকদার বলেছেন, এই আইনি লড়াইয়ে জিতলেও পারিবারিক জীবনে বড় ক্ষতি হয়ে গেছে।
মামলাটি থেকে প্রবীর সিকদারকে বৃহস্পতিবার বেকসুর খালাস দেন ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আসসামছ জগলুল হোসেন।
এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন প্রবীর সিকদার। রায়ে খালাস পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি। বলেন, ‘আমি এই ছয়টি বছর লড়াই করে জিতেছি, কিন্তু আমার পারিবারিক জীবন ধ্বংস হয়ে গেছে। ওলটপালট হয়ে গেছে।
‘আমি এই ছয়টি বছর বাড়ি থেকে জমি বিক্রয় করে ঢাকায় থেকেছি। আমি কোথাও কাজ করতে পারিনি, কাজেও নেয়নি। আমি নিজে পত্রিকা করেছি, সেখানে কেউ বিজ্ঞাপন দেয়ার সাহস পায়নি। এ রকম একটি বাজে পরিস্থিতির সামনে আসতে হয়েছে। তবুও সত্যের জয় হয়েছে। আমি রায়ে খুশি।’
এই মামলায় পারিবারিক জীবনে অনেক ক্ষতির মুখে পড়লেও ন্যায়ের পক্ষে কলম থামাবেন না বলে জানালেন প্রবীর সিকদার। তিনি বলেন, ‘এই দেশ আমার বাবার কবরস্থান। ১৯৭১ সালে আমার বাবার লাশ পাইনি। কাকা, দাদু, মামাদের আমার চোখের সামনে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে। এ জন্য দেশটিকে আমি আমার বাবার কবরস্থান বলে মনে করি।
‘এই কবরস্থানের ওপর যারাই অসংগতি, অনিয়ম, অন্যায় করবে আমি তাদের প্রতি আমার প্রতিবাদ জারি রাখি এবং জারি রাখব। আদালতের রায় আমার সাহস আরও বাড়িয়ে দিল। এই দেশকে আমরা লুটপাটের রাজত্ব হতে দেব না।’
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালের ১০ আগস্ট প্রবীর সিকদার তার ফেসবুকে তৎকালীন এলজিআরডি মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে নিয়ে একটি স্ট্যাটাস দেন। ওই স্ট্যাটাসের জেরে মন্ত্রীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে উল্লেখ করে প্রবীর সিকদারের বিরুদ্ধে তথ্য ও প্রযুক্তি আইনে মামলা হয়।
২০১৫ সালের ১৬ আগস্ট জ্যেষ্ঠ এ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় মামলাটি করেন জেলা পূজা উদযাপন কমিটির উপদেষ্টা স্বপন পাল। ওই রাতেই গ্রেপ্তার হন প্রবীর সিকদার। পরে তাকে তিন দিনের রিমান্ডে পাঠানো হয়। ওই বছর ১৯ আগস্ট তিনি জামিনে মুক্তি পান।
২০১৬ সালের ১৬ মার্চ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মনির হোসেন মামলাটির চার্জশিট দাখিল করেন।
প্রবীর সিকদার দৈনিক বাংলা ৭১, অনলাইন নিউজ পোর্টাল উত্তরাধিকার ৭১ ও উত্তরাধিকার নামে ত্রৈমাসিক পত্রিকার সম্পাদক।