তৃণমূল পর্যায়ে আওয়ামী লীগ শক্তিশালী হওয়ায় করোনাভাইরাস মোকাবিলা সহজ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গণভবনে বৃহস্পতিবার সকালে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে এ মন্তব্য করেন তিনি।
ওই সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বলব যে, সরকারের প্রত্যেকটা প্রতিষ্ঠানই খুব আন্তরিকতার সাথে কাজ করেছে। তবে কখনোই কোনো সরকারের পক্ষে এককভাবে এ পরিস্থিতি সামাল দেয়া সম্ভব না। আমাদের জন্য সম্ভব হয়েছে একটাই কারণে যে, আমাদের একটি শক্তিশালী সংগঠন তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত আছে।
‘আর এটা আছে বলেই কিন্তু আমরা এটা করতে সক্ষম হয়েছি, যেটা আমার বিশ্বাস। জানি এ কথা হয়তো অন্য কেউ বলবেও না, লিখবেও না। আমি যেটা বলব, বাস্তবতা (হলো) এককভাবে শুধু সরকারি লোক দিয়ে সবকিছু সম্ভব হয় না।’
তিনি বলেন, ‘তারাও (সরকারি লোকজন) করেছে খুব আন্তরিকতার সাথে। প্রত্যেকে যে যেখানে ছিল—প্রশাসন, আমাদের পুলিশ বাহিনী, আমাদের সশস্ত্র বাহিনী, বিজিবি, আনসার যারা যারা এবং বিশেষ করে স্বাস্থ্যকর্মীরা। প্রথম দিকে একটু তাদের মধ্যে ভীতি ছিল। তার পরে আমাদের অনেক প্রণোদনা দিতে হয়েছে, অনেক উৎসাহ দিতে হয়েছে।
‘আমরা নিয়োগও দিয়েছি। ডাক্তার বলেন, নার্স বলেন সবকিছুতেই আমরা হাজার হাজার নিয়োগ দিয়ে চেষ্টা করেছি।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘এবারের করোনাভাইরাসের সময় আমাদের দলের লোকেরা এবং আমাদের সকল সহযোগী সংগঠন যেভাবে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে, আমরা কিন্তু আর কোনো রাজনৈতিক দলকে এভাবে দাঁড়াতে দেখিনি। মূলত কেউ দাঁড়ায়ই নাই। তাদের কোনো আগ্রহ ছিল না।
‘হ্যাঁ, ওই প্রতিদিন টেলিভিশনে বিবৃতি দেয়া, বক্তব্য দেয়া আর প্রতিটি ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগকে সমালোচনা করা ছাড়া আর কোনো কাজ ছিল না। একটাই কাজ ছিল আওয়ামী লীগকে দোষারোপ করা। এটা ছাড়া বোধহয় আর কোনো কাজ মানুষের জন্য তারা করে নাই, যেটা আওয়ামী লীগ সংগঠনের প্রতিটি নেতা-কর্মী নিজ নিজ এলাকাসহ সব জায়গায় এবং আমাদের সহযোগী সংগঠনগুলো খুব ভালোভাবে কাজ করেছে।’
করোনার কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড। গত প্রায় দেড় বছর ধরে সাংগঠনিক সব তৎপরতা স্থগিত রেখেছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ।
এ সময়ে দলটির মূল লক্ষ্য ছিল মানবিক নানা কর্মসূচি বাস্তবায়ন। নিয়মিত দলের শীর্ষ নেতাদের যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা, তাও এ সময় করা যায়নি।
করোনার ধাক্কা কাটিয়ে যখন জনজীবন স্বাভাবিকতার পথে, তখন সাংগঠনিক স্থবিরতা দূর করতে বৈঠকে বসে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। সকাল সাড়ে ১০টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে শুরু হয় আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক।
আওয়ামী লীগের সবশেষ কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক হয়েছিল গত বছরের ৩ অক্টোবর। সেবার বৈঠক হয়েছিল সীমিত পরিসরে স্বল্পসংখ্যক সদস্য নিয়ে। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কার্যনির্বাহী সংসদের ৮১ সদস্যের মধ্যে মাত্র ৩২ জন।
এরপর করোনার দ্বিতীয় দফা সংক্রমণ শুরুর কারণে আর কোনো বৈঠক করতে পারেনি ক্ষমতাসীন দলের কার্যনির্বাহী সংসদ। এর প্রায় এক বছর পর আবারও সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী বৈঠকে বসল দলটি। এতে দলের কেন্দ্রীয় প্রায় অর্ধশত নেতা অংশ নেন।
দলের সভাপতি শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ছাড়াও আমন্ত্রিতদের মধ্যে রয়েছেন সভাপতিমণ্ডলীর ১০ সদস্য, তিনজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, আটজন সাংগঠনিক সম্পাদক, ১২ জন সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য এবং ১০ জন কার্যনির্বাহী সদস্য।