বিভিন্ন ধরনের অনৈতিক সুবিধা হাতিয়ে নিতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন করপোরেট প্রতিষ্ঠান তিন থেকে চার ধরনের তৈরি করে। এ অবস্থায় আর্থিক প্রতিবেদনে স্বচ্ছতা আনার লক্ষ্যে অডিটরদেরকে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির জন্য শুধু একটি আর্থিক প্রতিবেদন তৈরি করার আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ।
আর্থিক প্রতিবেদনের বিষয়ে সংবাদকর্মীদের ধারণা দিতে বুধবার ঢাকায় দি ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্টস অব বাংলাদেশ এবং ইকোনোমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত ‘ফিনান্স ফর নন ফিনান্স প্রোফেশনালস’ বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আইসিএবির প্রেসিডেন্ট মাহমুদউল হাসান খসরু এফসিএ, ভাইস-প্রেসিডেন্ট সিদ্ধার্থ বড়ুয়া এফসিএ, প্রধান নির্বহী কর্মকর্তা শুভাশীষ বসু, ইআরএফ সভাপতি শারমিন রিনভী ও সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন।
কর্মশালায় বাণিজ্য সচিব বলেন, মূলত কোম্পানির সুবিধার্থে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং তালিকাভুক্ত কোম্পানির ক্ষেত্রে বিএসইসির কাছে আলাদা আলাদা আর্থিক প্রতিবেদন জমা দেয়ার প্রবণতা রয়েছে। এর ফলে কোম্পানির মূল সম্পদের অবমূল্যায়ন ও অতিমূল্যায়ন হয়ে থাকে। এতে রাজস্ব আদায়ে সমস্যা তৈরি হয়। এসব সমস্যা সমাধানে সার্বিকভাবে একটিমাত্র আর্থিক প্রতিবেদন তৈরি করার আহ্বান জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন তৈরিতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে অডিটরদের ভূমিকা খুব গুরুত্বপূর্ণ। স্বচ্ছ অডিট রিপোর্ট তৈরির কাজটি অডিটর, কোম্পানি এবং সবাই মিলে করতে হবে।
তপন কান্তি ঘোষ বলেন, করোনার কারণে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কম হয়েছে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের তুলনায় এখনও আমরা পিছিয়ে আছি। তবে অর্থনীতিতে আবারও গতি ফিরতে শুরু করেছে, আমদানি-রফতানি বাড়ছে। আমরা আশাকরি, দেশের অর্থনীতি খুব শিগগির করোনার আগের অবস্থায় ফিরে যাবে।
আইসিএবি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ-উল হাসান খসরু এফসিএ বলেন, তিন-চার ধরনের অডিট রিপোর্ট যাতে না হয়, আমরা সে লক্ষ্যে কাজ করছি। স্বচ্ছ আর্থিক প্রতিবেদন হলে দেশ ও দেশের মানুষ উপকৃত হবে। সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, সিএ অধ্যয়নরত মেধাবী-গরীব শির্ক্ষাথীদের কর্জে হাসানা নামের একটি প্রকল্পের অধীনে বর্তমান এবং কোর্স সম্পন্নকারী শিক্ষার্থীদের বিনা সুদে ঋণ দেবে আইসিএবি। বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ এই প্রকল্পটির উদ্বোধন করেন। নির্দিষ্ট শর্ত পূরণের পর একাডেমিক পরীক্ষার ফলাফল এবং পারিবারিক সচ্ছলতার বিবেচনা করে এ ঋণ দেয়া হবে।
প্রকল্পের উদ্দেশ হচ্ছে মেধাবীদের সিএ পেশা গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করা, দেশের অর্থনীতির ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণের জন্য অ্যাকাউন্টিং পেশাজীবীদের সংখ্যা বাড়ানো, সিএ পেশায় মেধার সন্নিবেশ ঘটানো যারা শিল্পের জটিল প্রয়োজন মেটাতে এবং ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নেতৃত্ব দেবে এবং দক্ষতার সাথে পেশার প্রতিনিধিত্ব করতে পারে।
দুই দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালায় ৬০ জন অর্থনীতিবিষয়ক সাংবাদিক অংশগ্রহণ করছেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে আইসিএবির ভাইস-প্রেসিডেন্ট মারিয়া হাওলাদার এফসিএ ও মোহাম্মদ ফোরকান উদ্দীন এফসিএ, কাউন্সিল মেম্বার এন কে এ মবিন এফসিএ উপস্থিত ছিলেন।