গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে শিক্ষক নিয়োগে জালিয়াতি ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে রাষ্ট্রপক্ষের সহকারী আইনজীবী (এপিপি) ও বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকসহ ১০ জনকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
গোবিন্দগঞ্জের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক পার্থ ভদ্র বুধবার বিকেল চারটার দিকে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনের উপপরিদর্শক (এসআই) শাহ আলম নিউজবাংলাকে জানান, গত ২২ মে ১০ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। বুধবার বিকেলে তারা আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে বিচারক তা নাকচ করেন।
আসামিরা হলেন গোবিন্দগঞ্জ চৌকি আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের সহকারী আইনজীবী মিজানুর রহমান, তার স্ত্রী ধরমা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মনোয়ারা বেগম, ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক সদস্য মোখলেছুর রহমান, নান্নু মিয়া, মুনমুন বেগম, মোজাম্মেল হক, শিক্ষক প্রতিনিধি নিজাম উদ্দীন, দোলেনা বেগম, তোফাজ্জল হক ও নারায়ণ চন্দ্র দেবনাথ।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১৯ সালের ১৬ এপ্রিল গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ধরমা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয়। এ সময় মিজানুর রহমান, মনোয়ারা বেগমসহ বাকি আসামিরা মিলে বিভিন্ন অফিসের কর্মকর্তাদের সই ও সিল নকল করে জাল কাগজপত্র বানান।
ওই জাল কাগজ দেখিয়ে ৩০ এপ্রিল তারা নিজেদের পক্ষের লোককে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির নতুন সভাপতি ঘোষণা করেন।
এরপর নতুন সভাপতি মনোয়ারা বেগমকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেন।
এজাহারে আরও বলা হয়, জালিয়াতির বিষয়টি জানাজানি হলে ওই বছরের ২৫ জুন আগের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও বাদী খায়রুল বারি এবং পরিসংখ্যান কর্মকর্তা পরিতোষ শর্মাকে জিম্মি করে মনোয়ারা ও তার স্বামী ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। আসামিরা কয়েকজনকে আহতও করেন।
এ কারণে মামলায় হত্যাচেষ্টার কথা বলা হয়েছে।
২০২০ সালের ৩০ নভেম্বর খায়রুল ১০ জনের নামে জালিয়াতি ও হত্যাচেষ্টা মামলা করেন। আদালত মামলার তদন্তের ভার দেয় পিবিআইকে।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এ এস এম ফয়জুল আলম বলেন, ‘পিবিআইয়ের প্রতিবেদনে বিদ্যালয়ে নিয়োগের বিষয়টি স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে।’
তদন্ত কর্মকর্তা শাহ আলম জানান, জালিয়াতি প্রমাণিত হওয়ায় নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে ও ওই কমিটি ভেঙে দেয়া হয়েছে। জালিয়াতির বিষয়ে বিভিন্ন দপ্তর থেকে সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেছে।