আওয়ামী লীগের সবশেষ কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক হয়েছিল গত বছরের ৩ অক্টোবর। সেইবার বৈঠক হয়েছিল সীমিত পরিসরে স্বল্প সংখ্যক সদস্যকে নিয়ে। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কার্যনির্বাহী সংসদের ৮১ সদস্যের মধ্যে মাত্র ৩২ জন।
এরপর করোনার দ্বিতীয় দফা সংক্রমণ শুরুর কারণে আর কোন বৈঠক করতে পারেনি ক্ষমতাসীন দলের কার্যনির্বাহী সংসদ। এর প্রায় এক বছর পর আবারও সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী বৈঠকে বসছে দলটি।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে হবে এ বৈঠক। এতে সভাপতিত্ব করবেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা। কেন্দ্রীয় নেতারা জানিয়েছেন, বৈঠকে কার্যনির্বাহী সংসদের ৪৮ সদস্য উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
দলের সভাপতি শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ছাড়াও আমন্ত্রিতদের মধ্যে রয়েছেন সভাপতিমণ্ডলীর ১০ সদস্য, তিনজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, আটজন সাংগঠনিক সম্পাদক, ১২ জন সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য এবং ১০জন কার্যনির্বাহী সদস্য।
কেন্দ্রীয় নেতারা বলেন, করোনার কারণে দলের যে সাংগঠনিক স্থবিরতা চলছে তা কাটিয়ে কীভাবে দলকে শক্তিশালী অবস্থানে নেয়া যায় সে বিষয়ে শীর্ষ নেতৃত্বের পরামর্শ চাওয়া হবে বৈঠকে। এছাড়াও আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচনমুখী তৎপরতা বাড়ানোর বিষয়েও আলোচনা হতে পারে।
পাশাপাশি দলের বিভিন্ন ইউনিটের সম্মেলনগুলো অনুষ্ঠিত না হওয়ায় যে সাংগঠনিক শূণ্যতা তৈরি হয়েছে তা কাটিয়ে ওঠার বিষয়েও আলোচনা হবে বৈঠকে। এছাড়াও, করোনা মহামারির মধ্যে নেতাকর্মীদের মধ্যে যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে তা কাটিয়ে ওঠার উপায়ও খোঁজা হবে এতে। বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে নোয়াখালী, বরিশালসহ বিভিন্ন জেলায় নেতাকর্মীদের মধ্যে যে বিভাজন তৈরি হয়েছে তা কিভাবে কাঠিয়ে উঠা যায় তা নিয়েও আলোচনা হতে পারে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতারা।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদব আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘অনেক দিন পর বৈঠক বসছে। নানা ধরনের বিষয় তো থাকেই। আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক পরিস্থিতি, তবে মূলত সাংগঠনিক নানা আলোচনা হবে। সব কিছুর মূলে হচ্ছে সাংগঠনিক স্বার্থ।
‘মাসে একটা করে মিটিং করার কথা, না পারলে অন্তত দু মাসে একটা আমাদের ওয়ার্কিং কমিটির মিটিং হয়, সেটা তো হচ্ছে না। সব কিছু মিলিয়ে আগামী দিনে দল সংগঠনকে আরও কিভাবে জোরদার করা যায়। জনপ্রিয়তা, জনসমর্থন, আগামী সংসদ নির্বাচন অনেক বিষয় আসবে।’
তিনি বলেন, ‘সাংগঠনিক যে জটিলতাগুলো আছে সেগুলো নিরসনে নেত্রী দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখবেন। সেখানে আমাদের আলোচনা থাকবে। বিভিন্ন জেলার সাংগঠনিক সমস্যাগুলো থাকবে। বিভিন্ন সময় আমরা যে নানা পরিস্থিতিতে পড়ি সেখানে আমরা কিভাবে কাজ করবো তার পরামর্শ চাইবো আমরা।
‘একে রোড ম্যাপ বলা যেতে পারে। সব মিলিয়ে দীর্ঘদিন পরের মিটিং তো। আবার কবে মিটিং হবে তার তো ঠিক নেই। সে সময় পর্যন্ত তো একটা রূপরেখা তৈরি করতে হবে। আগামীতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন আবার শুরু হবে, সবগুলো বিষয়ই আলোচনায় থাকবে।’
দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান বলেন, ‘এ ধরনের মিটিংয়ে সাধারণত দলের বিভিন্ন পর্যায়ের চলমান কাউন্সিল নিয়ে আলোচনা হয়। করোনার বর্তমান অবস্থা বিবেচনায় দলের করণীয় এবং সাম্প্রতিক সময়ে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচন বিষয়ে আলোচনা হতে পারে।’