প্রধান শিক্ষক আর কর্মকর্তাদের টাকা দিয়ে ঝরে পড়ার হার বাড়িয়ে সাক্ষরতার নামে অর্থ হাতিয়ে নেয়া বন্ধ করতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। শিক্ষক আর কর্মকর্তাদের উদ্দেশ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, কাজ না করে কাগজে-কলমে সাক্ষরতার হার বাড়িয়ে জাতির কোনো লাভ হবে না।
বুধবার ‘আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস-২০২১’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ঢাকার প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘ঝরে পড়া শিশুরা নানা ধরণের সমস্যায় থাকে। অন্যের বাসায় কাজ করে নিজেদের প্রয়োজন মেটাতে হয়। শুধু বর্ণ শেখার জন্য তাদের স্কুলে পাওয়া যাবে না। পেলেও তাদের শ্রেণিকক্ষে ধরে রাখা যাবে না। তাদের যদি উপকার করতে চান তবে বর্ণ শেখানোর পাশাপাশি স্কিল ট্রেনিং যুক্ত করে তাদের কর্মদক্ষ করে তুলতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, সাক্ষরতা কর্মসূচির নামে অর্থ লোপাট করা হচ্ছে। কাগজে কলমে কাজ দেখালেও আসলে তারা কিছুই করছে না। প্রধান শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের টাকা দিয়ে ঝরে পড়ার সংখ্যা বেশি দেখিয়ে অনৈতিকভাবে সরকারি অর্থ ভাগাভাগি করে নিচ্ছে। এগুলো অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, অনেকে বলছেন শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হার বাড়ছে। বর্তমানে স্কুল বন্ধ, তাই শতভাগ ঝরে পড়লেও আমরা সেকেন্ড চান্স এডুকেশন প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের স্কুলে নিয়ে আসবো। তবে উপআনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে সাক্ষরতা কর্মসূচির নামে সরকারকে ফাঁকি দিয়ে অর্থ মেরে (আত্মসাত) খাচ্ছেন তা বন্ধ করতে হবে।
তিনি বলেন, ভালো ভালো কথার মালা লিখে দিলেও সেসবের কিছুই করা হয়না। সে কারণে তাদের দেয়া লিখিত বক্তব্য পাঠ করেননি উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, শুধু মুখে ভালো কথা বলা বাদ দিয়ে মাঠে নামেন, শরীরটাকে একটু ঘামান, জাতির ক্ষতি করবেন না, জনমানুষের কল্যাণে কাজ করেন। সরকার যে অর্থ দিচ্ছে তা অপচয় না করে দায়িত্ব নিয়ে কাজ করেন।
জাকির হোসেন বলেন, ‘শুধু বছর শেষে ঢাকঢোল পিটিয়ে অনেক টাকা ঢেলে অনুষ্ঠানের আয়োজন করে তাদের কাজ শেষ হচ্ছে। কাগজে-কলমে তারা অনেক কাজ দেখালেও আসলে কাজের কাজ কিছুই করছেন না। অন্য স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের এনে নাম লিখিয়ে মাস শেষে টাকা নেয়া বন্ধ করতে হবে। জালিয়াতির অর্থ দিয়ে আপনাদের সন্তান মানুষ হবে না, এ অর্থ খেলে হালাল হবে না।’
এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব গোলাম মো. হাসিবুল আলম, অতিরিক্ত সচিব (বিদ্যালয়) রতন চন্দ্র পন্ডিতসহ আরও অনেকে।