বিএনপির আন্দোলন কর্মসূচিকে আন্দোলন বিলাস বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বললেন, দলটির ভাবনা কথামালায় সীমাবদ্ধ শব্দবোমা।
রাজধানীতে নিজ বাসভবনে বুধবার সকালে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এ মন্তব্য করেন কাদের।
তিনি বলেন, ‘বিএনপির আন্দোলনের হাঁকডাক আসলে আন্দোলন বিলাস মাত্র। বিএনপির এসব ভাবনা কথামালায় সীমাবদ্ধ শব্দবোমা ছাড়া আর কিছু নয়।’
বিএনপিকে ‘জনগণের আস্থাহীনতার আরেক নাম’ উল্লেখ করে কাদের বলেন, ‘সরকার নাকি তাঁবেদার সরকারে পরিণত হয়েছে। বিএনপি নেতাদের এমন অভিযোগ উদ্ভট ও কাল্পনিক। প্রকৃতপক্ষে তাঁবেদারি তাদেরই হাতিয়ার, যারা জনগণের সমর্থনের তোয়াক্কা না করে অগণতান্ত্রিক পথে ক্ষমতায় যাওয়ার অলি-গলি খোঁজে।
‘বিএনপিই তাঁবেদারিবান্ধব দল, যারা নিজেরাই নিজেদের গঠনতন্ত্র মানে না। যারা কথায় কথায় বিদেশিদের কাছে ধর্না দেয়, জনগণের কাছে যেতে সাহস পায় না, তারাই হচ্ছে তাঁবেদার।’
আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় এই নেতা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এদেশকে আত্মমর্যাদাশীল এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় একটি সমৃদ্ধ রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে চায়। বিএনপি বাংলাদেশকে তাঁবেদার ও একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়।
‘বিএনপি নেতারা সারা দেশে সংকট দেখতে পান কিন্তু তারা নিজেদের রাজনীতিতে কোন সংকট দেখতে পায় না। হাতের তালু দিয়ে কি আকাশ ঢাকা যায়? বিএনপি নেতারা খণ্ডিত দৃষ্টি দিয়ে দেখছে সবকিছু।’
জনগণকে দূরে ঠেলে দিয়ে নেতৃত্ব তোষণ নীতিই এখন বিএনপির রাজনীতি মন্তব্য করে কাদের বলেন, ‘তারা সাদাকে সাদা যেমন বলতে পারে না, তেমনি পারে না কালোকে কালো বলতে। অপরাজনীতি বিএনপিকে গভীর খাদের কিনারে পৌঁছে দিয়েছে। তাই তারা এ বাস্তবতা এখনও উপলব্ধি করতে পারছে না। কর্মীদের চাঙা রাখতে নানা মুখরোচক বক্তব্য দেন, যা অন্তসারশূন্য।’
‘শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে অদম্য অগ্রযাত্রায়, দেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির চলমান ধারায় সংকটের কোনো ছায়া পড়েনি, বরং উন্নয়নে যাদের গাত্রদাহ তারাই ঈর্ষার আগুনে জ্বলছে। বিএনপির রাজনীতি আজ জননিন্দিত। জনগণের মনের ভাষা, চোখের ভাষা যারা বুঝতে পারে না তারাই ক্রমশ জনগণের আস্থার কেন্দ্র থেকে ছিটকে পড়ছে।’
কাদের বলেন, ‘দুর্নীতি নাকি দেশের রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রবেশ করেছে, বিএনপি নেতাদের এমন কথা শুনলে জনগণ নিরবে হাসে। কারা কী বলছেন! দুর্নীতি ছিল তাদের শিরায় শিরায়, যা থেকে এখনও তারা বেরিয়ে আসতে পারেনি।
‘দুর্নীতিকে যারা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছিল, লুটপাট আর অনিয়মের কন্ট্রোল রুম হিসেবে যারা হাওয়া ভবন তৈরি করেছিল। পর পর পাঁচবার দুর্নীতিতে দেশকে বিশ্বচ্যাম্পিয়নের কলঙ্কতিলক পরিয়েছিল তারাই এখন দুর্নীতির কথা বলেন। চোখে পর্দা না থাকলে, নির্লজ্জ হলেই কেবল এমন কথা বলা যায়। দুর্নীতিবাজ নেতৃত্ব তোষণকে বিএনপি রীতিমতো শিল্পে পরিণত করেছে।’
সরকারের বিভিন্ন খাতে শুদ্ধি অভিযান চলছে জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘শেখ হাসিনা সরকার বিভিন্ন খাতে নিজ উদ্যোগে পরিচালনা করছে শুদ্ধি অভিযান। অনিয়মকারিদের আনা হচ্ছে প্রশাসনিক, আইনগত এবং সাংগঠনিক শাস্তির আওতায়।
‘এ সাহস একমাত্র বঙ্গবন্ধু কন্যাই দেখাতে পেরেছেন। বিএনপি কি একটি নজির দেখাতে পারবে? তাদের সময়কালে কোনো একজন দুর্নীতিবাজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে?’