করোনাভাইরাস প্রতিরোধক টিকার জাতীয়করণ বিশ্ববাসীর জন্য অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুর্ভাগ্যজনক বলে মনে করে বাংলাদেশ। একই সঙ্গে এই দুর্যোগ থেকে সফল পুনরুদ্ধারের জন্য অবশ্যই বৈশ্বিকভাবে টিকাদান কর্মসূচির বাস্তবায়ন প্রয়োজন। সে জন্য বিশ্বকে এ ধরনের টিকা বৈষম্যের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।
জাতিসংঘ সদরদপ্তরে মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত শান্তির সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থাটির উচ্চপর্যায়ের ফোরামে ভার্চুয়ালি দেয়া বক্তব্যে বাংলাদেশের এ অবস্থান তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
বুধবার জাতিসংঘের স্থায়ী মিশন থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
মোমেন বলেন, ‘এখন সময় এসেছে উন্নয়ন অংশীদারদের আরও বেশি মানবিক হওয়ার এবং যাদের টিকা প্রয়োজন, বৈষম্যহীনভাবে তাদের তা প্রদান করার। টিকা হওয়া উচিত বৈশ্বিক সাধারণ সম্পদ।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘করোনা মহামারি থেকে পুনরুদ্ধার প্রচেষ্টার অপরিহার্য উপাদান হিসেবে অবশ্যই শান্তিপূর্ণ পরিবেশ তৈরি করতে হবে। যেখানে জাতি, গোত্র, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে আমরা সবাই অর্থবহভাবে অবদান রাখতে পারি। আগের থেকেও ভালো অবস্থায় ফিরে যাওয়ার লক্ষ্যে করোনাপরবর্তী পুনরুদ্ধার কার্যক্রমে শান্তির সংস্কৃতিকে ধারণ ও লালন করার কোনো বিকল্প নেই।’
করোনাপরবর্তী পুনরুদ্ধার কার্যক্রমের অন্তর্ভুক্তি ও প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে ঘুরে দাঁড়ানোর সামর্থ্য অর্জনের বিষয়টি আরও এগিয়ে নিতে শান্তির সংস্কৃতি যে রূপান্তরধর্মী ভূমিকা পালন করতে পারে সে বিষয়টিও তুলে ধরা হয় ফোরামে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার বক্তব্যে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ‘শান্তির সংস্কৃতি’ ধারণাটি উপস্থাপন করেন। ১৯৯৯ সাল থেকে প্রতিবছর সর্বসম্মতিক্রমে তা রেজুলেশন হিসেবে গৃহীত হওয়া এবং ২০১২ সাল থেকে উচ্চপর্যায়ের ফোরাম আয়োজন- করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রণী ভূমিকার কথাও তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
উদ্বোধনী পর্বে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছাড়াও বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি, ইউএন অ্যালায়েন্স ফর সিভিলাইজেশনের প্রতিনিধি, জাতিসংঘ মহাসচিবের শেফ দ্য ক্যাবিনেট ও ইউনেসকোর প্রতিনিধি।
শান্তি ও উন্নয়নের পারস্পরিক গভীর আন্তসম্পর্কের কথা উল্লেখ করে যথাসময়ে এজেন্ডা ২০৩০ বাস্তবায়নের প্রতিও আহ্বানও জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
দিনব্যাপী আয়োজিত কর্মসূচির মধ্যে উদ্বোধনী পর্ব ছাড়াও একটি প্লেনারি সেশন ও ভার্চুয়াল প্যানেল আলোচনা হয়।
এদিকে ‘শান্তির সংস্কৃতিতে সিভিল সোসাইটি সংস্থার অংশগ্রহণ’বিষয়ক একটি ভার্চুয়াল প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জাতিসংঘের সাবেক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ও জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত আনোয়ারুল করিম চৌধুরী।
জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা আলোচনায় প্যানেলিস্ট হিসেবে অংশ নেন।