আশ্বিন ও কার্তিক মাসে আমন ক্ষেতে জমে থাকা পানিতে মাছসহ পোকা মাকড় খেতে বসে বিভিন্ন ধরনের পরিযায়ী ও দেশি পাখি। ওইসব পাখি শিকারে মেতে ওঠেন স্থানীয়রা। কিন্তু এবার ভাদ্র মাসে শুরু হয়েছে পাখি শিকার।
পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় পাখি শিকার নিষিদ্ধ হলেও তা মানা হচ্ছে না। নীলফামারীতে বিশেষ করে রোপা আমনের ক্ষেতে অবাধে চলছে বক শিকার। এলাকাবাসীর অভিযোগ, নজরদারি ও সচেতনতার অভাবে বেড়েছে শিকার।
বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বর্ষার পর নদী-নালা, খাল বিলের পানি কমতে থাকে। এ সময় আমন ধানের জমিতে ছোট মাছ ও পোকা খেতে ছুটে আসে বিভিন্ন প্রজাতির বক। শিকারির পাতা ফাঁদে ধরা পড়ে এসব পাখি। স্থানীয় হাটবাজারে ফাঁদে ধরা পড়া পাখি বিক্রি করতে দেখা যায়।
জেলা শহরের নিউ বাবু পাড়ার মিলন পল্লী এলাকার শিকারি সুজন মিয়া জানান, শীতের সময় বিভিন্ন এলাকায় ফাঁদ পেতে পাখি ধরে বিক্রি করি। এবার করোনা মহামারির কারণে হাতে কাজ না থাকায় ভাদ্র মাসে বক ধরে বিক্রি করছি।
এক প্রশ্নের জবাবে সুজন বলেন, পাখি শিকার অপরাধ জেনেও পেটের দায়ে ফাঁদ পেতে পাখি ধরতে বাধ্য হচ্ছি।
নীলফামারী বন কর্মকর্তা মাহবুবর রহমান জানান, এ বিষয়ে এখনও কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। জীববৈচিত্র্য রক্ষায় বনবিভাগ সব সময় কাজ করছে।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমিন নাহার নিউজবাংলাকে জানান, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী, পাখি শিকার ও নিধন দণ্ডনীয় অপরাধ। তবে এ ব্যাপারে কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি বলেন, ‘সচেতনতার অভাবে খাল-বিলে ছুটে আসা নানা প্রজাতির পাখি ধরা পড়ছে। এতে নষ্ট হচ্ছে জীববৈচিত্র্য। আমরা দ্রুত হাট বাজারে অভিযানে নামব।’
জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান চৌধুরী জানান, পাখি শিকার জীববৈচিত্র্যের জন্য ক্ষতিকর। পাখি ক্রয় ও বিক্রয় দুটাই দণ্ডনীয় অপরাধ। পাখি শিকার বন্ধে গ্রামে-গঞ্জে ও হাট-বাজারে নজরদারি চলছে।