পরিবহনব্যবস্থা চালু রেখে এ বছরের ৭ অক্টোবর থেকে সশরীরে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) প্রশাসন। তবে করোনা সংক্রমণ বেড়ে গেলে অনলাইনে পরীক্ষা হবে। এ ছাড়া শ্রেণিকক্ষে শুধু পরীক্ষা হলেও ক্লাস চলবে অনলাইনে।
মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হকের সভাপতিত্বে সকল ডিন, ইনস্টিটিউটের পরিচালক ও বিভাগের চেয়ারম্যানদের সমন্বয়ে উপাচার্যের কনফারেন্স কক্ষে অনুষ্ঠিত এক বিশেষ সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২০২১ সালের ৭ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগ ও ইনস্টিটিউটে সশরীরে পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে যদি সার্বিক পরিস্থিতির কারণে সশরীরে পরীক্ষা নেয়া সম্ভব না হয়, তবে অনলাইনে পরীক্ষা নেয়া হবে।
অনুষদের ডিন ও বিভাগের চেয়ারম্যান ও ইনস্টিটিউটের পরিচালকরা আলোচনা করে পরীক্ষার রুটিন দেবেন এবং পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক পরীক্ষা নেয়ার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের সশরীরে পরীক্ষা নেয়ার জন্য পরিবহন সুবিধাও দেয়া হবে।
এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘অফিশিয়ালি আগামী ৭ অক্টোবর থেকে পরীক্ষা নেয়া শুরু হবে। স্বাভাবিকভাবে পূজায় পরীক্ষা নেয়া বন্ধ থাকবে। আর পরীক্ষার সময়সূচি ডিনরা চেয়ারম্যানদের সঙ্গে আলোচনা করে তৈরি করবেন।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. চঞ্চল কুমার বোস বলেন, ‘বৈঠকে আলোচনার বিষয় ছিল পরীক্ষা অনলাইনে না সশরীরে হবে। ৭ অক্টোবর সশরীরে পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। যদি এর মধ্যে করোনার সংক্রমণ বেড়ে যায় তাহলে ওই তারিখে অনলাইনে পরীক্ষা হবে।’
দুর্গাপূজার ছুটির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পূজার ছুটি বাদ রেখে সেভাবে রুটিন করা হবে।’
বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. রবীন্দ্রনাথ মণ্ডল বলেন, ‘বলা হয়েছিল পরীক্ষা শুরুর চার সপ্তাহ আগে তারিখ জানিয়ে দেয়া হবে। সে অনুযায়ী আগামী ৭ অক্টোবর আমরা পরীক্ষার তারিখ ঠিক করেছি। অর্থাৎ চার সপ্তাহ পর থেকে সবাই পরীক্ষা নিতে পারবে, তার আগে না।
‘বিভাগগুলো সেভাবে রুটিন সাজাবে। ডিনরা তাদের অনুষদের বিভাগগুলোকে সেভাবে রুটিন তৈরির নির্দেশনা দেবেন। শুধু যাদের পরীক্ষা তারাই ক্যাম্পাসে আসবেন। তবে ক্যাম্পাসে ক্লাস হবে না, কোনো বিভাগের ক্লাস বাকি থাকলে অনলাইনে নেয়া হবে।’
এর আগে সোমবার ৮৫তম সিন্ডিকেট সভায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের অনলাইনে পরীক্ষা নেয়ার নীতিমালা অনুমোদিত হয়।
এ ছাড়া এর আগে অনলাইনে পরীক্ষা নেয়া যায় কি না এ বিষয়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিজ্ঞতা অনুসন্ধান এবং কীভাবে অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে পরীক্ষা নেয়া যায় তার সুপারিশ তৈরির জন্য ছয় সদস্যের একটি আহ্বায়ক কমিটি করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
কমিটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এ কে এম মনিরুজ্জামানকে আহ্বায়ক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নেটওয়ার্কিং অ্যান্ড আইটি দপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড. উজ্জল কুমার আচার্য সদস্যসচিব করে একটি টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করা হয়।
এ ছাড়া কমিটিতে আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সরকার আলী আক্কাস, ছাত্র কল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল বাকী, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. মনিরা জাহান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. নাসির উদ্দিনকে সদস্য করা হয়।
আগামী ১২ সেপ্টেম্বর থেকে সারা দেশের স্কুল-কলেজ খোলার বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত হওয়ায় অনলাইনে পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।