বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

গ্রাহকদের বিল আত্মসাতে তিতাস ও ডেসকোর কর্মচারীও

  •    
  • ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৯:৪৯

গত ২ ফেব্রুয়ারি নাছির উদ্দিন নামে এক ভুক্তভোগী মিরপুর মডেল থানায় মামলা করেন। এতে বলা হয়, মিরপুরের মনিপুর এলাকায় পাঁচ থেকে ছয়শ গ্রাহক গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎ বিল জমা নেয় ইন্টার্ন ব্যাংকিং অ্যান্ড কমার্স নামে একটি প্রতিষ্ঠান। তারা দুটি ব্যাংকের এজেন্ট হিসেবে পরিচয় দিয়ে এই কাজ করেছে। পরে প্রকাশ পায়, টাকা জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করা হয়েছে।

রাজধানীর মিরপুরে গ্রাহকদের গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি ও টেলিফোন বিল আত্মসাতের ঘটনায় চক্রের নাম এসেছে, তাদের সঙ্গে বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা ডেসকো এবং গ্যাস বিতরণ সংস্থা তিতাসের একাধিক কর্মীর সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে তদন্তে।

মিরপুরের মনিপুরে পাঁচ থেকে ছয়শ গ্রাহকের কাছ থেকে বিল হিসেবে দুই কোটি ৩০ লাখ টাকা নেয়া হলেও তা জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করা হয়।

নথিপত্র বলছে, মনিপুরের ওমর ফারুক নামের একজন এই কাজ করেছেন। তিনি ‘ইন্টার্ন ব্যাংকিং অ্যান্ড কমার্স’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে সেখানে বিল জমা নিতেন। পরে গ্রাহকদের লাইন কেটে দেয়ার পর তারা বুঝতে পারেন টাকা জমা হয়নি। ততদিনে ফারুক ও তার সহযোগীরা পালিয়ে যান।

এই ঘটনায় মামলা হলে সেটি তদন্তের ভার পায় পুলিশের তদন্ত সংস্থা পিবিআই। তারা দেখেছে, ফারুককে এই কাজে সহায়তা করেন ডেসকোর মনিপুরের আউট সোর্সিংয়ের সুপারভাইজার মো. মামুন এবং তিতাস গ্যাস মনিপুর এর আউট সোর্সিংয়ের কর্মচারী রকিবুল ইসলাম ।

এই দুজনকে সোমবার রাতে মিরপুর থেকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। তারা মনিপুর, আহম্মদনগর এলাকায় বিদ্যুৎ এবং গ্যাস লাইন কাটা ও সংযোজনের কাজে নিয়োজিত ছিল।

পিবিআই ঢাকা মেট্রো (উত্তর) পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গত ২ ফেব্রুয়ারি নাছির উদ্দিন নামে এক ভুক্তভোগী মিরপুর মডেল থানায় মামলা করেন। শুরুতে তদন্ত করছিল থানা। পরে পুলিশ সদরদপ্তর থেকে পিবিআই ঢাকা মেট্রো (উত্তর) কে দায়িত্ব দেয়া হয়।

পিবিআই ঢাকা মেট্রো (উত্তর) পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম জানান, ‘গত ১৫ এপ্রিল মামলার তদন্তভার গ্রহণ করে পিবিআই। ইতোমধ্যেই মূল আসামিসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।’

তিনি বলেন, ‘এই মামলায় ওমর ফারুক ফৌজদারী কার্যবিধি ১৬৪ ধারায় বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। তার জবানবন্দিতে ডেসকো মনিপুর এর আউট সোর্সিং সুপারভাইজার আসামী মো. মামুন ও তিতাস গ্যাস মিরপুরের আউট সোর্সিং কর্মচারী রকিবুল ইসলামের নাম আসার পর গতকাল রাতে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।‘

পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আসামিরা ওমর ফারুক এর ‘ইন্টার্ন ব্যাংকিং অ্যান্ড কমার্স অফিসে যোগাযোগের মাধ্যমে টাকা পয়সা নিয়ে যেত এবং তাকে প্রতারণামূলক কাজে সহায়তা করত। আসামি মামুন ডেসকো মনিপুর এর আউট সোর্সিংয়ের সুপারভাইজার এবং আসাসি রাকিবুল ইসলাম রাকিব তিতাস গ্যাস মনিপুর এর আউট সোর্সিংয়ের কর্মচারী। তারা মনিপুর, আহম্মদনগর এলাকায় বিদ্যুৎ এবং গ্যাস লাইন কাটা ও সংযোজন এর কাজে নিয়োজিত ছিল।’

কীভাবে এলো ইন্টার্ন ব্যাংকিং অ্যান্ড কমার্স

মিরপুর-২ এর ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে বারেক মোল্লার মোড় এলাকায় প্রতিষ্ঠানটি চালু করেন ফারুক। তবে এর আগে ওই এলাকার ১২ নম্বর ওয়ার্ডে তার একটি ছোট দোকান ছিল। সেখানে তিনি সীমিত পরিসরে বিকাশ এজেন্টের ব্যবসা শুরু করেন।

পরে সেটি এজেন্ট ব্যাংকিং হিসেবে কাজ করার কথা জানিয়ে সামনে সিটি ব্যাংক ও কন্টিনেন্টাল কুরিয়ারের এজেন্টশিপের সাইনবোর্ড ঝোলায়। সেই সঙ্গে বিকাশ ও রকেটের ডিজিটাল সার্ভিস পয়েন্টের ব্যানার দেয়া হয়।

এজেন্ট ব্যাংকিং করার কথা বলেই গ্রাহকদের কাছ থেকে বিল আদায় করত প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু সেই বিল জমা না নিয়ে আত্মসাৎ করা হয়।

মো. সুমন নামের এক গ্রাহক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি গত ১১ মাস ধরে এখানে নিয়মিত গ্যাসের বিল দিয়েছি। টাকা দেয়ার পর বিলের কপিতে মাইক্যাশ এজেন্টের সিল এবং পরে ইন্টার্ন ব্যাংকিং এন্ড কমার্সের সিল ও এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের সিল দেয়া হতো। ১১ মাসে এভাবে আমার জমা দেয়া টাকার পরিমাণ ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা।’

হৃদয় কাজী নামে আরেকজন গ্রাহকের গ্যাসের বিল বাকি ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ইন্টার্ন ব্যাংকিং এন্ড কমার্স এলাকায় প্রচার করেছিল তাদের মাধ্যমে সহজে বিল দেয়া যাবে। এই বিল জমা দেয়ার পর আমাদের রশিদে ব্যাংকের সিল দেয়া হতো।’

মার্কেন্টাইল ব্যাংক ও সিটি ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করেছে নিউজবাংলা। মার্কেন্টাইল ব্যাংকের জনসংযোগ বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, উমর ফারুক বা ইন্টার্ন ব্যাংকিং এন্ড কমার্স নামে তাদের কোনো এজেন্ট নেই। অন্যদিকে, সিটি ব্যাংক কর্তৃপক্ষের বক্তব্য তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি।

এ বিভাগের আরো খবর