বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

জামায়াতকে স্বাধীনতাবিরোধী বলায় আদালতে মারমুখী আচরণ

  •    
  • ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৮:০৮

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আবু জামায়াতকে ‘স্বাধীনতাবিরোধী’ বলে তার বক্তব্য রাখার সময় জামায়াত নেতাদের আইনজীবীরা চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করেন। জামায়াত নেতাদের অর্ধশতাধিক আইনজীবী ‘সেম সেম’ (লজ্জা, লজ্জা) বলে চিৎকার করতে থাকেন।

মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের পক্ষে অস্ত্র ধরা জামায়াতে ইসলামীকে স্বাধীনতাবিরোধী বলায় আদালতে হট্টগোল এবং মারমুখী অঙ্গভঙ্গি করেছেন দলটির ৯ নেতার আইনজীবী।

সোমবার রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ ৯ নেতাকে মঙ্গলবার ঢাকার মহানগর হাকিম বেগম মাহমুদা আক্তারের আদালতে তোলা হয়।

তাদের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হয় পুলিশের পক্ষ থেকে। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আবু জামায়াতকে ‘স্বাধীনতাবিরোধী’ বলে তার বক্তব্য রাখার সময় জামায়াত নেতাদের আইনজীবীরা চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করেন।

জামায়াত নেতাদের অর্ধশতাধিক আইনজীবী ‘সেম সেম’ (লজ্জা, লজ্জা) বলে চিৎকার করতে থাকেন।

বিচারক এ সময় আইনজীবীদের চুপ করতে বলেন। তারা বিচারকের কথায় কর্ণপাত না করে রাষ্ট্রপক্ষের এই প্রবীণ আইনজীবীর প্রতি মারমুখী অঙ্গভঙ্গি করেন।

পরে জামায়াতে ইসলামীর সদস্য ও আসামিপক্ষের আইনজীবী আব্দুর রাজ্জাকের হস্তক্ষেপে তারা শান্ত হন।

আব্দুর রাজ্জাক পরে তাদের আইনজীবীদের কৃতকর্মের জন্য আদালতের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ বাঙালিদের ওপর পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ঝাঁপিয়ে পড়লে জামায়াত দখলদার বাহিনীর পক্ষে অবস্থান নেয়। সে সময় পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতের আমির গোলাম আজম রেডিওতে ভাষণ দিয়ে সেনাবাহিনীকে সমর্থন করার আহ্বান জানান।

পরে দেশে রাজাকার বাহিনী গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে জামায়াত। দলের নেতা এ কে এম ইউসুফের নেতৃত্বে খুলনায় রাজাকার বাহিনীর প্রথম ইউনিট যাত্রা শুরু করে।

পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর পক্ষে গঠন করা শান্তি কমিটিতে জামায়াত নেতাদের অবদান ছিল। আলবদর বাহিনী গঠন করে জামায়াতের সে সময়ের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র সংঘ। বুদ্ধিজীবী হত্যায় নাম এসেছে এই বাহিনীর।

আলবদর বাহিনীর নেতা মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ, মুহম্মদ কামারুজ্জামান, মীর কাসেম আলীর ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। রাজধানীর মিরপুরে গণহত্যার দায়ে দলের প্রথম নেতা হিসেবে ফাঁসিতে ঝোলেন আবদুল কাদের মোল্লা।

রাজাকারের প্রতিষ্ঠাতা এ কে এম ইউসুফ, পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতের প্রধান গোলাম আজমের আমৃত্যু কারাদণ্ডের আদেশ হয়েছিল। পরে তারা বন্দি অবস্থায় মারা যান। মৃত্যুদণ্ডের আদেশ হওয়া পাবনার নেতা আবদুস সুবহানেরও মৃত্যু হয়েছে কারাগারে। আলবদর বাহিনীর আরেক নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ড হয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে। উচ্চ আদালতে মামলাটির এখনও নিষ্পত্তি হয়নি।

এই দলটিকে স্বাধীনতাবিরোধী উল্লেখ করায় হট্টগোল শেষে ঢাকা আইনজীবী সমিতির সিনিয়র সহসভাপতি এস এম কামাল উদ্দিন আদালতকে জামায়াত ইসলামীর গঠনতন্ত্র পাঠ করে শোনান। তিনি বলেন, ‘এই জব্দ তালিকায় যা লেখা আছে তাতে রিমান্ড হয় না।‘

আইনজীবী শিশির মনির তার শুনানিতে বলেন, ‘মামলার এজাহারে এবং রিমান্ডের ফরোয়ার্ডিংয়ে বলা হয়েছে আসামিরা সরকার উৎখাত করার জন্য রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছিলেন। জামায়াতে ইসলামী কোনো নিষিদ্ধ সংগঠন নয়। জেএমবি, আনসারুল্লাহ বাংলা টিম, হিযবুত তাহরীরসহ যে পাঁচটি সংগঠন নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে তাদের মধ্যে জামায়াতে ইসলামীর নাম নাই।

‘জামায়াতে ইসলামী কোনো নিষিদ্ধ সংগঠন করে না। তাদের কোনো কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ নয়। তারা একসময় এই এ দেশের সরকারের অংশ ছিল। মিয়া গোলাম পরওয়ার খুলনা থেকে এবং হামিদুর রহমান আযাদ কক্সবাজার থেকে বিপুল ভোটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তাদের মতো লোক মিটিং বা সভা করতে পারেন, তাতে কোনো বাধা নাই, বিধিনিষেধও নাই।‘

তিনি বলেন, ‘শুধুমাত্র জামায়াতে ইসলামী করার কারণে আসামিদের সবাইকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করা হয়েছে।’

এ সময় আসামিরা উচ্চ স্বরে হাসতে থাকেন এবং বলতে থাকেন তারা জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত জামায়াতের জন্য নিজেদের উৎসর্গ করবেন।

এ সময় শিশির মনির বলেন, ‘আমাদের সবাইকে রিমান্ডে নেয়া হোক মাননীয় আদালত। ইনাদের যদি অন্যায়ভাবে রিমান্ডে নেয়া হয় তাহলে আমরা সবাই রিমান্ডে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত।’

পরে বিচারক ৪ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।

এ বিভাগের আরো খবর