জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরোয়ারসহ দলটির ৯ নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চার দিনের হেফাজতে পেয়েছে পুলিশ।
মঙ্গলবার ঢাকার মহানগর হাকিম বেগম মাহমুদা আক্তার এ আদেশ দেন।
রাজধানীর ভাটারা থানা পুলিশের উপপরিদর্শক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম ৯ আসামিকে ১০ দিনের রিমান্ডে চেয়েছিলেন।
আসামিপক্ষে আইনজীবী আব্দুর রাজ্জাক, শিশির মনির, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সহসভাপতি এমডি গোলাম রহমান ভুঁইয়া তাদের রিমান্ড আবেদন বাতিলসহ জামিনের আবেদন করেন।
তাদের সঙ্গে অর্ধশতাধিক আইনজীবী আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী শুনানিতে বলেন, শুধুমাত্র জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতিতে যুক্ত থাকায় হয়রানি করতেই রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নাই। তাই তাদের রিমান্ড আবেদন বাতিল করে জামিনে মুক্তি দেয়া হোক।
যেকোনো শর্তে জামিন পেলে আসামিরা কোনো আইনি ব্যত্যয় না ঘটিয়ে ঠিকমতো হাজিরা দেবেন বলেও জানান আইনজীবীরা।
ঢাকা আইনজীবী সমিতির সহসভাপতি এস এম কামাল উদ্দিন বলেন, মিয়া গোলাম পরওয়ার ও হামিদুর রহমান আযাদ সাবেক সংসদ সদস্য। কয়েকজন আছেন যাদের বয়স ৮০ বছর, তাই সার্বিক বিবেচনায় রিমান্ড বাতিল করে তাদের প্রয়োজনে জেলগেটে হাজারবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক।
তিনি বলেন, আসামিদের কাছে কোনো নিষিদ্ধ জিনিস পাওয়া যায়নি। ল্যাপটপ, মোবাইল তো কোনো নিষিদ্ধ জিনিস নয়।
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘পরীমনি ইস্যু শেষ এখন তো নতুন ইস্যু দরকার।…জামায়াতে ইসলামী সবার সঙ্গে মাঠে আন্দোলন করেছে। যখন যার বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছে তখন তারা ক্ষমতায় থেকে জামায়াতকে স্বাধীনতাবিরোধী বলার চেষ্টা করেছে। এই মামলার কিছুই নাই। আমরা রিমান্ড বাতিল ও জামিন চাই।’
রাষ্ট্রপক্ষে মহানগর দায়রা আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু বলেন, ‘এরা জামায়াতে ইসলামীকে সংগঠিত করার নামে সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার পাশাপাশি নাশকতা ঘটানোর চেষ্টায় জড়িত। আরও তথ্য উপাত্ত উদ্ধার ও তদন্তের স্বার্থে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশের হেফাজতে পাঠানোর আদেশ প্রার্থনা করছি।’
সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকার একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে জামায়াত নেতাদের আটক করা হয় বলে নিউজবাংলাকে জানান ডিএমপির গুলশানের বিভাগের উপকমিশনার মো. আসাদুজ্জামান।
তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে খবর ছিল তারা দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে গোপন বৈঠক করছিলেন। এর চেয়ে বেশি কোনো তথ্য দেয়া যাবে না।’
জামায়াত দাবি করেছে, পুলিশ তাদের ১০ জন নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন দলের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান ও হামিদুর রহমান আযাদ।
অন্যরা হলেন দলের নির্বাহী সদস্য ও ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি ইয়াসিন আরাফাত, নির্বাহী সদস্য আব্দুর রউফ, মনিরুল ইসলাম, কোরবান আলী, ইজ্জত আলী ও মোবারক হোসেন।