সীমান্তবর্তী জেলা পঞ্চগড়। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি থেকে করতোয়া নদী এ জেলা দিয়ে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশে। নদীর তীর ঘেঁষা এ জেলায় প্রায় ১২ লাখ মানুষের বসবাস। ভারতের উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন পর্যটন এলাকাসহ নেপাল, ভুটান যাতায়াতে জেলার বাংলাবান্ধা গুরুত্বপূর্ণ ইমিগ্রেশন চেক পোস্ট।
অবস্থানগত কারণেও এ জেলার রূপ-বৈচিত্র্য পর্যটকদের মুগ্ধ করে। নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত পঞ্চগড় শীতের চাদরে মোড়া থাকে। ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারিতে তাপমাত্রা নেমে যায় এক অঙ্কে। যা দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা হিসেবে রের্কড করে। এ মৌসুমে বিশ্বের সবচেয়ে বড় পর্বতমালা হিমালয়ের দেখা মেলে পঞ্চগড়ে দাঁড়িয়েই।
পঞ্চগড়ে রয়েছে ৯টি নিবন্ধিত ও ১৬টি অনিবন্ধিত চা বাগান। চা বাগানের মনোরম দৃশ্য দেখতে আসা পর্যটকের সংখ্যাও এখানে কম নয়।
এসব কারণে সারাদেশের মানুষের আনাগোনা লেগেই থাকে এ জেলায়। এত সম্ভাবনা থাকার পরও জেলার কোথাও গড়ে ওঠেনি কোনো পর্যটন কেন্দ্র।
করতোয়া নদীর সেতু ঘিরে পরিত্যাক্ত রয়েছে অনেক জায়গা। যেখানে শহরের হোটেল-রেস্তোরাঁ, হাট-বাজার এবং কারখানার ময়লা-আবর্জনা ফেলে রাখা হয়। পরিত্যাক্ত এ জায়গা সংরক্ষণে সেখানে বিনোদন কেন্দ্র গড়ে তোলার দাবি জানান জেলাবাসী।
পরিত্যাক্ত এ জায়গাজুড়ে বিনোদন কেন্দ্র ও চায়ের বাগান গড়ে তোলার দাবি করেন নগরবাসী।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, শহরের পাশে নদীর তীর ঘেঁষা অপরিত্যাক্ত জায়গায় একটি পার্ক, খেলার মাঠ, বসার ব্যবস্থা করলে স্থানীয়রা পরিবার-পরিজন নিয়ে কিছু সময় কাটাতে পারবেন। পর্যটকরাও উপকৃত হবেন।
তারা আরও বলেন, পরিত্যাক্ত জায়গায় চা-বাগান করলে সেখানে অনেক বেকারের কর্মসংস্থান হবে। চা শিল্প বিকাশের মাধ্যমে জেলার আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন হবে।
পঞ্চগড় জেলায় ১৭টি চা কারখানা রয়েছে। আরও ১২টি কারখানা নির্মাণাধীন। জেলার সমতল ভূমিতে চা চাষের পরিধি বাড়াতে পারলে নতুন কর্মক্ষেত্রের সুযোগ সৃষ্টি হবে। সামগ্রিকভাবে এটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নেও বড় ভূমিকা রাখবে।
শিক্ষাবিদ মো. সফিকুল ইসলাম নিউজবাংলাকে জানান, বিকেল বা সন্ধ্যায় শহরের ভেতরে মানুষের স্বল্প সময়ের জন্যও অবকাশ কাটানোর কোনো সুযোগ নেই। তার ওপর নদী রক্ষাকারী গাইডরা তীরবর্তী জায়গা দখল করে অবৈধ স্থাপনা গড়ে তুলছেন। তাই পরিত্যাক্ত জায়গা কাজে লাগিয়ে বিনোদন কেন্দ্র ও চা বাগান গড়ে তোলার দাবি জানান তিনি।
পঞ্চগড় পৌরসভার মেয়র জাকিয়া খাতুন বলেন, শহরের প্রবেশ মুখে করতোয়ার সৌন্দর্য পর্যটকদের আকৃষ্ট করে। সীমান্ত জেলাকে তিলোত্তমা শহর হিসেবে গড়ে তুলতে এরই মধ্যে নানা পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে উঁচু ভবন, পার্ক, খেলার মাঠসহ অনেক কিছুই থাকছে।