শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হলেও সেগুলোতে অ্যাসেম্বলি বন্ধ রাখা এবং আবাসিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে এক বিছানায় দুইজন না রাখার সুপারিশ করা হয়েছে।
সেই সঙ্গে খাবার ডাইনিংয়ের পরিবর্তে শিক্ষার্থীদের কক্ষে পৌঁছে দেয়ার কথা বলেছে করোনা রোধে করা সরকারের জাতীয় পরামর্শক কমিটি।
কমিটির ৪৫তম সভায় ২ সেপ্টেম্বর এমন সুপারিশ করা হয়েছে। কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লার সভাপতিত্বে ওই বৈঠকে যুক্ত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপুমনি, শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবরা।
সভায় কোভিড-১৯ সংক্রমণ ও টিকাসহ জনস্বাস্থ্য প্রতিরোধ কার্যক্রমের বর্তমান পরিস্থিতি এবং করণীয় বিষয়ে আলোচনা হয়।
সভায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার জন্য বেশ কয়েকটি সুপারিশ করে জাতীয় পরামর্শক কমিটি।
শিক্ষার্থী-শিক্ষক-কর্মচারীদের টিকা নিশ্চিতের বিষয়টিতে জোর দেয় পরামর্শক কমিটি। সেই সঙ্গে দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার অন্তত ১৪ দিন পর শিক্ষক-কর্মচারীদের প্রতিষ্ঠানে যোগ দেয়ার কথা বলা হয়।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সবার মাস্ক পরার বাধ্যবাধকতা রাখার কথা বলা হয়, না মানলে শাস্তির বিধান রাখার কথাও বলা হয়।
এ জন্য শিক্ষার্থীদের মাপে কেন্দ্রীয়ভাবে মাস্ক সরবরাহেরও সুপারিশ করেছে কমিটি।
একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) প্রস্তুত করে সবাইকে নিয়ে তা বাস্তবায়ন করার কথা বলা হয়।
সুপারিশে বলা হয়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে কমপক্ষে ৮০ শতাংশ শিক্ষক-কর্মচারীদের করোনার টিকা নেয়া থাকতে হবে। উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ১৮ বছরের অধিক বয়সী শিক্ষার্থীদের দ্রুত টিকার ব্যবস্থা করা।
প্রতিদিন ক্লাস না করে মাঝে মাঝে ক্লাস করা ও একই সময় সব শ্রেণির ক্লাস না করানো।
প্রথম দিকে স্বল্প সময়ের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে রাখা যাতে খাবারের জন্য মাস্ক খুলতে না হয় সে বিষয়টিও সুপারিশে যুক্ত করে কমিটি।
আবাসিক সুবিধা থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য সেখানে বেশ কয়েকটি সুপারিশ করে কমিটি।
মাদ্রাসায় একসঙ্গে নামাজ, সমাবেশ ইত্যাদির ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট নির্দেশনা মেনে চলা।
যেসব শিক্ষার্থীর করোনার লক্ষণ থাকবে তাদের আলাদা করে রাখা কিংবা পরিবারের কারও এমন লক্ষণ থাকলে তাদের অন্তত ১৪ দিন স্কুলে না আসতে দেয়া।
শিক্ষার্থীদের করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা রাখা এবং তাদের প্রতিদিনের একটা রিপোর্ট রাখার সুপারিশ করেছে জাতীয় পরামর্শক কমিটি।
এ জন্য সব বিধিনিষেধ সুষ্ঠুভাবে পালনের জন্য মনিটরিং টিম গঠন করে দৈনিক মনিটরিং করতে হবে বলেও বলা হয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ১২ সেপ্টেম্বর থেকে দেশে খুলে দেয়া হচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ দেখা দিলে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ বন্ধ করে দেয়া হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। দেশে করোনা সংক্রমণ কিছুটা কমে আসায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার এমন সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।