স্বল্প মূলধনী কোম্পানি নিয়ে করণীয় নির্ধারণে কমিটি গঠন এমনিতে বেড়ে থাকা এসব কোম্পানির শেয়ার দর নতুন করে লাফ দিয়েছে।
আলোচনা আছে যে, স্বল্প মূলধনী এসব কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন বাড়াতে সময় বেঁধে দেয়া হতে পারে। এতে করে কোম্পানিগুলোকে বড় আকারের বোনাস বা রাইট শেয়ার অথবা রিপিট আইপিওর মাধ্যমে নতুন শেয়ার ইস্যু করতে হবে।
বাংলাদেশে বড় আকারের বোনাস বা রাইট শেয়ার দেয়ার সম্ভবনায় বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ারদর অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা আছে। কিন্তু পরে দেখা যায়, বিনিয়োগকারীদের বিপুল লোকসান হয়। কারণ, বোনাস বা রাইট শেয়ার সমন্বয়ের পর দাম কমতে থাকে।
ইতোপূর্বে পুঁজিবাজারে বেশ কিছু দুর্বল খাতের কোম্পানি শুধু মাত্র বোনাস শেয়ার দিয়ে নিজেদের পরিশোধিত মূলধন বৃদ্ধি করেছে। কিন্ত পরবর্তীতে সেইসব বোনাস শেয়ার গলার কাটা হিসেবে এখনও বয়ে যাচ্ছে বিনিয়োগকারীরা।
মুন্নু অ্যাগ্রো:
প্রথমে ৩৫০ শতাংশ। পরে ২০ শতাংশ ও ১০ শতাংশ। ২০১৮ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত মুন্নু অ্যাগ্রোর বোনাস শেয়ারের হিসাব এটি। প্রথমে কোম্পানিটির নাম ছিল মুন্নু স্টাফলার। তখন তারা উৎপাদন করত পাটকলের যন্ত্রাংশ। এখন উৎপাদন করে কৃষি যন্ত্রপাতি।
এই ব্যবসা পরিবর্তনের জন্য পরিশোধিত মূলধন ব্যাপকভাবে বাড়ানো হয় তিন বছর আগে। আর তখন একে কেন্দ্র করে কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়ে যায় ২০ গুণের মতো।
কিন্তু যারা উচ্চমূল্যে সেই শেয়ার কিনেছেন, তারা এখন ব্যাপক হতাশ। কারণ বিপুল পরিমাণ লোকসান দিয়েছেন তারা। ফ্লোর প্রাইসের সময়ে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণের নিচে নামতে না পারায় লোকসান গুনে কেউ শেয়ার বিক্রি করতে চাচ্ছিলেন না।
এখন ফ্লোর প্রাইস নেই। তবে ফ্লোর প্রাইস থেকে উঠে এসে দর কিছুটা বাড়লেও যারা বোনাস শেয়ার হাতে ধরে রেখেছেন তারা কী মুনাফা পেয়েছেন?
যে কোম্পানির শেয়ার দর ২৫০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে থাকত, ২০১৮ সালে সেটি হঠাৎ করেই বাড়তে বাড়তে চলে যায় ৫ হাজার ৮০০ টাকায়।
১০ টাকা অভিহিত মূল্যের শেয়ারের এই অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির পেছনে তখন কাজ করেছে ভালো লভ্যাংশ দিয়ে কোম্পানি সম্প্রসারণের সম্ভাবনা।
ওই বছর কোম্পানিটি সাড়ে ৩০০ শতাংশ বোনাস অর্থাৎ প্রতি ১০০ শেয়ারের বিপরীতে সাড়ে ৩০০টি শেয়ার লভ্যাংশ হিসেবে দেয়।
পরের দুই বছর যথাক্রমে ২০ ও ১০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দেয়া হয়। কিন্তু কোম্পানির ব্যবসা সম্প্রসারণ আর হয়নি। বরং শেয়ার বাড়ায় আয় কমেছে।
কোম্পানি সচিব বিনয় পাল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের কোম্পানি ভালো চলছে। আমরা মূলত ২০১৮ সালে কোম্পানি সম্প্রসারণের জন্যই নগদ লভ্যাংশ না দিয়ে বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছিলাম। সে সময় অ্যাগ্রো বেইস প্রোডাক্ট তৈরিতে বিনিয়োগ করা হয়েছিল। এখন হারভেস্টিং মেশিন, ভুট্টা মাড়াই মেশিন তৈরি করছি। এর বয়স বেশি না হওয়ায় মুনাফায় আসতে পারিনি।’
৩০০ শতাংশ বোনাস শেয়ার যোগ হওয়ার পর ৫ হাজার ৮০০ টাকার শেয়ারের দাম সমন্বয় হয় এক হাজার ২৮৮ টাকা। পরের দুই বছরের লভ্যাংশ হিসাব করলে শেয়ারের দাম পড়ে ৯৭৬ টাকা ৪০ পয়সা।
ফ্লোর প্রাইস থেকে বের হয়ে ৭৯৪ টাকা ৮০ পয়সার শেয়ার নেমে আসে ৫৬৭ টাকা ৮০ টাকায়। সেখান থেকে উত্থান শুরু। রোববার কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৮৪৮ টাকায়।
স্ট্রাইলক্রাফট:
বোনাস লভ্যাংশ দিয়ে পরিশোধিত মূলধন বৃদ্ধি করা পুঁজিবাজারে আরেক কোম্পানি স্টাইলক্রাফট। ব্যাপক বোনাস শেয়ার দিয়ে পরিশোধিত মূলধন বাড়িয়ে লোকসানে পড়েছে বস্ত্র খাতের এই কোম্পানিটি।
পাঁচ বছর আগে যে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি আয় ছিল ৯৫ টাকা, সেই কোম্পানির শেয়ারসংখ্যা প্রায় ২৩ গুণ বাড়ার পর এখন তা লোকসানে।
ব্যাপক লাভজনক কোম্পানিটি লোকসানে পড়ার পাশাপাশি পুঁজিবাজারে যারা এ কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেছে, তারাও এখন হতাশ।
১৯৮৩ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটি প্রতিবছর ব্যাপক মুনাফা করে আলোচিত ছিল। মাত্র ৬০ লাখ টাকা পরিশোধিত মূলধনের কোম্পানিটি ২০১৫-১৬ অর্থবছরে শেয়ারপ্রতি ৯৫ টাকা মুনাফা করে চমক দেখায়।
এরপর থেকে টানা তিন বছর ব্যাপক হারে বোনাস শেয়ার দিয়ে পরিশোধিত মূলধন ১৩ কোটি ৮৮ লাখ ৪৭ হাজার ৫০০ টাকা করে। শেয়ারসংখ্যা ৬ লাখ থেকে বেড়ে দাঁড়ায় ১ কোটি ৩৮ লাখ ৮০ হাজারের বেশি।
২০১৭ সালে কোম্পানিটি প্রথমবারের মতো ৮০ শতাংশ অর্থাৎ প্রতি ১০টি শেয়ারে আটটি শেয়ার লভ্যাংশ হিসেবে দেয়। তখন শেয়ারের দাম বেড়ে ২ হাজার ৮০০ টাকার মতো হয়ে যায়।
পরের বছর কোম্পানিটি আরও চমক দেখায়। ওই বছর প্রতি ১০০ শেয়ারে বোনাস শেয়ার হিসেবে দেয়া হয় ৪১০টি শেয়ার। আরও ব্যাপক বোনাস শেয়ার দেয়া হবে, এই খবরে দাম ছাড়ায় ৪ হাজার ৯০০ টাকা।
এই দরে যারা শেয়ারটি কিনেছেন, তারা পরের বছর আরও দেড় শ শতাংশ অর্থাৎ দুটি শেয়ারের বিপরীতে আরও তিনটি শেয়ার বোনাস হিসেবে পাওয়ার পরও বিপুল পরিমাণে লোকসানে আছেন।
৪ হাজার ৯০০ টাকায় একটি শেয়ার যারা পেয়েছেন, ২০১৭ সালে ৪১০ শতাংশ বোনাস যোগ হওয়ার পর শেয়ারের দাম সমন্বয় হয় ৯৬০ টাকা। পরের বছর ১৫০ শতাংশ বোনাস যোগ হওয়ার পর দাম সমন্বয় হয় ৩৮৪ টাকা ৩০ পয়সা। এরপর কোম্পানিটি আর বোনাস শেয়ার ইস্যু করেনি।
পরিশোধিত মূলধন বাড়িয়ে কোম্পানি সম্প্রসারণ হবে, এই আশায় উচ্চমূল্যে শেয়ার কিনে বিনিয়োগকারীদের পকেট ফাঁকা হয়েছে। ঈর্ষণীয় মুনাফা থেকে ক্রমাগত ডুবতে থাকার কারণ জানতে কোম্পানি সচিব এডমান্ড গোডার নম্বরে যোগাযোগ করেই কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।
বর্তমানে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হচ্ছে ১৯৯ টাকা ৫০ পয়সায়।
জেমিনি সি ফুড:
১৯৮৫ সালে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটি ২০১৭ ও ২০১৮ সালে দুই বছরের মধ্যে শেয়ার সংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন গুণ। এত বেশি হারে বোনাস শেয়ার ঘোষণার কারণ হিসেবে ব্যবসা সম্প্রসারণের কথা জানায় তারা।
কিন্তু ব্যবসা বাড়েনি, উল্টো সংকুচিত হয়েছে। লোকসানে ডুবতে থাকা কোম্পানিটি এখন ঘুরে দাঁড়াতে পারবে কি না, তা নিয়েই তৈরি হয়েছে সংশয়।
কোম্পানিটি প্রথম যে বছর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বোনাস শেয়ার দেয়, সেই ২০১৬-২০১৭ সালে শেয়ারপ্রতি আয় ছিল প্রায় ২১ টাকার। ওই বছর তারা প্রতি দুটি শেয়ারের বিপরীতে একটি করে বোনাস শেয়ার দেয়।
পরের বছর শেয়ারপ্রতি আয় ৩৫ শতাংশের বেশি কমে ১৩ টাকা ৬ পয়সা হলেও বোনাসের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয় কোম্পানিটি। সে বছর ১২৫ শতাংশ অর্থাৎ চারটি শেয়ারের বিপরীতে পাঁচটি বোনাস শেয়ার দেয় তারা।
অর্থাৎ, যার ২০০টি শেয়ার ছিল, দুই বছরের মধ্যে তার শেয়ারসংখ্যা বেড়ে ৬৭৫টি হয়ে যায়।
পরের দুই বছরও যথাক্রমে ১৫ ও ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার দেয় কোম্পানিটি। আর যারা আরও দুই বছর শেয়ার ধরে রেখেছেন, তাদের শেয়ারসংখ্যা বেড়ে হয় ৮৫৩টি।
চার গুণেরও বেশি শেয়ার বেড়ে যাওয়ার পরও বিনিয়োগকারীদের মুখে হাসি তো নেই-ই, উল্টো কখনও পুঁজি ফিরে পাওয়া যাবে কি না, এ নিয়ে দুশ্চিন্তা নিয়েই চলতে হচ্ছে তাদের।
২০২০ সালে লোকসানের জন্য কোনো লভ্যাংশ ঘোষণা করেনি কোম্পানিটি। ২০১৭ সালে যারা ১ হাজার ২২৫ টাকায় শেয়ার কিনেছেন, পরের তিন বছর বোনাস শেয়ার সমন্বয়ের পর দাম পড়ে ২৮৬ টাকা ৯০ পয়সা।
এখন কোম্পানির শেয়ারের দাম ২৪২ টাকা ৫০ পয়সা। তাও গত এক মাসে অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে এই দর হয়েছে।
ফ্যামিলিটেক্স:
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির বছরে ১০০ শতাংশ অর্থাৎ একটি শেয়ারের বিপরীতে একটি শেয়ার বোনাস ঘোষণা করে হুলুস্থুল ফেলে দেয়া ফ্যামিলি টেক্সটাইল ডুবে গেলেও ব্যাপক মুনাফা করেছে মালিকপক্ষ।
উদ্যোক্তা পরিচালকরা ঘোষণা না দিয়ে বেআইনিভাবে তাদের হাতে থাকা প্রায় সব শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন। আর ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের শেয়ারের দাম এখন পড়তে পড়তে তলানিতে এসে ঠেকেছে।
গত বছর শেয়ারের দাম একপর্যায়ে কমে এক টাকা ৬০ পয়সায় নেমে আসে। সম্প্রতি পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠনের খবরে টানা কয়েক দিন দাম বেড়েছে। গত মার্চে কোম্পানির শেয়ার দর ছিল তিন টাকার আশপাশে। আর এখন বিক্রি হচ্ছে ৬ টাকায়।
চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চলের (ইপিজেড) একটি প্রতিষ্ঠান ফ্যামিলিটেক্স লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটি ২০০৬ সালে বাণিজ্যিক উৎপাদনে আসে।
২০১৩ সালে তালিকাভুক্তির পর ২০১২ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক হিসাব পর্যালোচনা করে কোনো লভ্যাংশ দেয়নি। তবে ২০১৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য ১০০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করে কোম্পানির উদ্যোক্তা-পরিচালকরা।
ওই বছর কোম্পানির শেয়ারপ্রতি আয় দেখানো হয় ৭ টাকা ২৬ পয়সা আর শেয়ারপ্রতি সম্পদ মূল্য হয় ২১ টাকা ৭২ পয়সা। এই লভ্যাংশ ঘোষণার পর দিন ১ এপ্রিল কোম্পানিটির শেয়ার দর দাঁড়ায় ৬২ টাকা, যদিও একপর্যায়ে দাম ৭৪ টাকা ৮০ পয়সায় দাঁড়িয়েছিল।
বিপুল পরিমাণ বোনাস শেয়ার দেয়ার পর থেকেই ফ্যামিলিটেক্সের আয় কমতে থাকে। ২০১৫ থেকে ২০১৬ সালের জুন পর্যন্ত সমাপ্ত অর্থবছরে তারা সব শেষ মুনাফা করেছিল। তখন শেয়ারপ্রতি আয় হয় ৮২ পয়সা। এর পরের চার বছর ধরে লোকসান দিচ্ছে তারা।
২০১৭ সালে শেয়ারপ্রতি লোকসান হয় সাড়ে ৪ পয়সার মতো। পরের বছর লোকসান হয় ৭ পয়সা, ২০১৯ সালে লোকসান হয় ৮ পয়সা। আর ২০২০ সালে লোকসান হয় ১৫ পয়সা।
২০১৩ সালে ১০০ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ হিসেবে দেয়ার পরের বছর তারা দেয় আরও ১০ শতাংশ বোনাস। এর পরের তিন বছর দেয় ৫ শতাংশ করে। কিন্তু গত দুই বছর কোনো লভ্যাংশই দেয়া হয়নি।
ডাচ বাংলা ব্যাংক:
শতভাগ বা তার চেয়ে বেশি বোনাস শেয়ার ঘোষণাকে কেন্দ্র করে শেয়ারের দাম আকাশচুম্বী হয়ে যাওয়ার ঘটনায় টাকা হারিয়েছেন পুঁজিবাজারে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের বিনিয়োগকারীরাও। অথচ এই প্রতিষ্ঠানটি ব্যাংকিং খাতের শক্তিশালী একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত।
২০০৯ সালের পর টানা এক দশক কেবল নগদ লভ্যাংশ দেয়ার পর ২০১৮ সালের জন্য ব্যাংকটি এক বছরেই দেড় শ শতাংশ বোনাস শেয়ার ঘোষণা করে। আর এই সিদ্ধান্ত যে কোনোভাবেই আগেই ফাঁস হয়ে যায়। আর ৯০ টাকার ঘরের শেয়ারের দাম বেড়ে ২২০ টাকা ছাড়িয়ে যায়।
পরের বছর কোম্পানিটি আবার ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার ঘোষণা করে। কিন্তু তখন শেয়ারের দাম সেভাবে বাড়েনি, উল্টো বছরজুড়েই বানরের বাঁশ বাওয়ার মতো করে ওঠানামা করতে করতে পড়তির দিকেই ছিল দাম।
যারা ২২১ টাকায় শেয়ারটি কিনেছেন, প্রতি দুটির বিপরীতে তিনটি বোনাস শেয়ার পাওয়ার পর তাদের সমন্বয় করা দাম দাঁড়ায় ৮৯ টাকা। পরের বছর ১০ শতাংশ বোনাস সমন্বয়ের পর দাম দাঁড়ায় ৮১ টাকা। আর এই দুই বছরে শেয়ারসংখ্যা বেড়ে হয় পৌনে তিন গুণ।
রোববার লেনদেন শেষে কোম্পানিটির শেয়ার দর দাঁড়িয়েছে ৮১ টাকা ১০ পয়সা। অর্থাৎ যারা ১৫০ শতাংশ বোনাস শেয়ার নিয়েছেন, তাদের এখন শেয়ারপ্রতি লাভ হয়েছে ১০ পয়সা।
২০১০ সালে ব্যাংকের শেয়ার নিয়ে যা হয়েছে
২০১০ সালে পুঁজিবাজার ভীষণ তেজী হয়ে যাওয়ার পেছনে যেসব বিষয় কাজ করেছে, তার একটি ছিল ব্যাংক খাতের কোম্পানিগুলোর পরিশোধিত মূলধন ৪০০ কোটি টাকা করার নির্দেশ। সে সময় কোনো কোনো ব্যাংকের মূলধন ২০০, কোনো কোনো ব্যাংকের তার চেয়ে কম ছিল। ব্যাংকগুলো বোনাস ও রাইট শেয়ার দেবে-এই সম্ভাবনায় হুমড়ি খেয়ে পড়েছে বিনিয়োগকারীরা। অথচ এখন বেশি শেয়ার সংখ্যাই বিনিয়োগকারীদের যন্ত্রণার কারণ।
শেয়ার প্রতি যে হারে নগদ লভ্যাংশ পাওয়া যাচ্ছে ব্যাংক খাতে, তাতে বহু ব্যাংকে টাকা রাখার চেয়ে শেয়ার কেনাই বেশি লাভজনক হয়ে যাচ্ছে। তার পরেও ব্যাংকের শেয়ারের দর তলানিতে পড়ে আছে। কোনো কোনো দিন শেয়ার দর বাড়লে বিক্রির চাপ চলে আসে বিপুল সংখ্যক শেয়ারের কারণেই।
কী বলছেন বিশ্লেষকরা
পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এগুলো হয়েছে তদারকির অভাবে। আগে যারা বোনাস দিয়ে বিনিয়োগকারীদের কাছে নাম মাত্র শেয়ার ধরিয়ে দিয়েছে তাদের এখন কোনো সন্ধান নেই। এগুলো করাই হয়েছে নিজেরা নিজেরা কারসাজি করার জন্য। কোন কোম্পানি বোনাস শেয়ার দিয়ে পরিচালকরা শেয়ার বাড়িয়ে বেশি দামে বিক্রি করেছে তাদের এখন খুঁজে বের উচিত।’
তিনি বলেন, ‘কোম্পানির প্রয়োজনেই কোম্পানি বোনাস শেয়ার দিয়ে থাকে। কিন্ত এই বোনাস শেয়ার দেয়াটা কতটা জরুরি সেটিও এখন যাচাই করা উচিত। বিএসইসি এখন স্বল্পমূলধনী কোম্পানি নিয়ে কাজ করছে, এমন খবরে এসব কোম্পানির শেয়ার দরও বাড়ছে। তদারকি জোরদার না করলে বিনিয়োগাকরীরা আবারও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা সম্ভাবনা আছে।’