প্রাণভয়ে পালিয়ে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে মিয়ানমারের ওপর চাপ অব্যাহত রাখার কথা জানিয়েছে যুক্তরাজ্য।
ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে সোমবার বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠকে এ কথা জানান যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাব।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেনকে উদ্ধৃত করে লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
বৈঠকে রোহিঙ্গা সংকট এবং তাদের নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবাসনের কাজ থমকে থাকার কথা উত্থাপন করেন মোমেন।
বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।
জবাবে মিয়ানমারে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতায় ব্রিটিশ সরকারের উদ্বেগের কথা উল্লেখ করে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে অঙ্গীকারের বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করেন রাব।
আসিয়ান ও জি-সেভেনের দেশগুলোকে নিয়ে রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানে মিয়ানমারের ওপর চাপ বাড়ানোর কথা বলেন তিনি।
এদিকে ঢাকায় ব্রিটিশ হাইকমিশন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ায় বাংলাদেশ সরকারকে সাধুবাদ জানান ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী। একই সঙ্গে বাংলাদেশে তাদের সম্মানজনক জীবন নিশ্চিত করা, রাখাইনে তাদের ফেরানোর কাজ এবং মিয়ানমারের ওপর চাপ প্রয়োগের বিষয়ে সমর্থন অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
বৈঠকে মোমেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানান, বাংলাদেশের টিকাদান কর্মসূচি জোরালোভাবে চলছে। করোনা সংক্রমণের হার ৯ দশমিক ৮২ শতাংশে নেমে এসেছে।
তিনি জানান, সাত হাজারের বেশি ব্রিটিশ বাংলাদেশির আটকে পড়ার প্রেক্ষাপটে যুক্তরাজ্যের উচিত বাংলাদেশকে কোভিড লালতালিকাভুক্ত দেশ থেকে বাদ দেয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা।
এর জবাবে সিদ্ধান্ত পর্যালোচনার আশ্বাস দিলেও এ ধরনের তালিকার পেছনে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পর্যালোচনাই মুখ্য বলে জানান যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
মোমেনকে উদ্ধৃত করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আমি নিশ্চয়তা দিচ্ছি আমাদের দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব এবং বাংলাদেশের জিনোম-সিকোয়েন্সিং ডাটার আরও ঘনঘন প্রকাশের ওপর ভিত্তি করে ব্রিটিশ সরকার বাংলাদেশকে রেড লিস্টে রাখার বিষয়টি পর্যালোচনা করবে।’
বৃহস্পতিবার লন্ডনে সশরীরে দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও আফগান পরিস্থিতিতে রাবের কাতার সফরের কারণে তা পিছিয়ে যায়।
ভার্চুয়াল বৈঠকে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লন্ডন থেকে এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী নেদারল্যান্ডসের হেগ থেকে যুক্ত হন।
বৈঠকে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের ‘দৃঢ় সম্পর্কের’ বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী। আফগানিস্তান এবং রোহিঙ্গা সংকটসহ নানা বিষয়ে একযোগে কাজ করার কথাও বলেন তারা।