বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

১ লাখ টন তেলের জাহাজ সরাসরি খালাস আগস্টে

  •    
  • ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ২০:৪৯

এসপিএম চালু হলে ১ লাখ টন ধারণক্ষমতার তেলবাহী জাহাজ গভীর সমুদ্রে খালাস করতে সময় লাগবে ২-৩ দিন। বর্তমানে ছোট লাইটারেজের মাধ্যমে ১ লাখ টন ধারণক্ষমতার তেলবাহী জাহাজ খালাসে সময় লাগে ১০-১১ দিন।

বিদেশ থেকে আমদানি করা জ্বালানি তেল খালাস এবং পরিবহনে আধুনিক প্রযুক্তির যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে দেশ। গভীর সমুদ্রে তেলবাহী বড় জাহাজ খালাসে উন্নত দেশগুলোর মতো বাংলাদেশেও স্থাপন করা হচ্ছে সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং (এসপিএম) প্রযুক্তি।

প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পটির ৭০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২২ সালের আগস্টে গভীর সমুদ্রে জাহাজ থেকে জ্বালানি তেল খালাসে এসপিএম প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হবে। এসপিএম উইথ ডাবল পাইপলাইন প্রকল্পের পরিচালক প্রকৌশলী শরীফ হাসনাত জানিয়েছেন এমন তথ্য।

এটি হলে দেশে ১ লাখ টন ধারণক্ষমতার তেলবাহী জাহাজ গভীর সমুদ্রে খালাসে সময় লাগবে ২-৩ দিন। কমবে তেল চুরি ও সিস্টেম লস। বছরে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) সাশ্রয় হবে অন্তত ৮০০ কোটি টাকা।

বিপিসি থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রাম বন্দরের বর্তমান অবকাঠামোর সীমাবদ্ধতা এবং কর্ণফুলী নদীর চ্যানেলের নাব্যতা কম হওয়ায় তেলবাহী বড় জাহাজগুলো সরাসরি জেটিতে এনে খালাস করা সম্ভব হয় না। এসব জাহাজ গভীর সমুদ্রে নোঙর করে ছোট লাইটারেজের মাধ্যমে তেল খালাস করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় ১ লাখ টন ধারণক্ষমতার তেলবাহী জাহাজ খালাসে সময় লাগে ১০-১১ দিন।

গতানুগতিক এই পদ্ধতি সময়সাপেক্ষ, ঝুঁকিপূর্ণ ও ব্যয়বহুল হওয়ায় বড় জাহাজ থেকে সরাসরি তেল স্থানান্তরের জন্য ‘ইনস্টলেশন অব সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং (এসপিএম) উইথ ডাবল পাইপলাইন’ শীর্ষক একটি প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। এতে পাইপলাইনের মাধ্যমে জ্বালানি তেল পরিবহনে মহেশখালী থেকে পতেঙ্গার মধ্যে সংযোগ তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়।

মহেশখালীর পশ্চিমে বঙ্গোপসাগরে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। এর মাধ্যমে অফশোর পাইপলাইনের মাধ্যমে মাতারবাড়ি এলটিই পর্যন্ত এবং সেখান থেকে অনশোর পাইপলাইনের মাধ্যমে মহেশখালী এলাকায় স্থাপিত স্টোরেজ ট্যাংকে তেল জমা হবে। পরে ১৮ ইঞ্চি ব্যাসের দুটি পৃথক পাইপলাইনের মাধ্যমে ক্রুড অয়েল ও ডিজেল চট্টগ্রাম নগরীর ইস্টার্ন রিফাইনারিতে আনা হবে।

প্রকল্প কর্মকর্তারা জানান, এসপিএম প্রযুক্তি চালু করতে সাগর ও মাটির তলদেশে ২২০ কিলোমিটার ডাবল পাইপলাইন স্থাপন করা হচ্ছে। এর মধ্যে ১৯৩ কিলোমিটার পাইপলাইন স্থাপন শেষ হয়েছে। ৫০ হাজার ঘনমিটার অপরিশোধিত তেল ধারণক্ষমতার তিনটি এবং ৩০ হাজার ঘনমিটার ডিজেল ধারণে তিনটি রিজার্ভ ট্যাংক স্থাপনের কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে।

চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান চায়না পেট্রোলিয়াম পাইপলাইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির কারিগরি তত্ত্বাবধানে এবং চায়না এক্সিম ব্যাংকের অর্থায়নে প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে এসপিএম। এতে পরামর্শক হিসেবে রয়েছে জার্মান প্রতিষ্ঠান আইএলএফ। ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত এই প্রকল্পের মেয়াদ। তবে কাজ শেষ হতে দুই মাস বেশি সময় লাগতে পারে।

এসপিএম চালু হলে অর্থ সাশ্রয়ের পাশাপাশি জ্বালানি খাতে নৈরাজ্য কমবে বলে আশা বিপিসির। তেলসংকটের কারণে দেশের একমাত্র জ্বালানি শোধনাগার ইস্টার্ন রিফাইনারি এখন বছরে ১৫ লাখ টন তেল শোধন করে। এসপিএম চালু হলে এটি ৪৫ লাখ টন তেল শোধন করতে পারবে।

এসপিএম উইথ ডাবল পাইপলাইন প্রকল্পের পরিচালক প্রকৌশলী শরীফ হাসনাত বলেন, ‘করোনার ধাক্কা সামলে বহুল প্রতীক্ষিত এসপিএম প্রকল্প দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। ইতিমধ্যে প্রকল্পের ৭০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বাকি কাজ ২০২২ সালের আগস্টে শেষ হবে বলে আমরা আশাবাদী।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই প্রকল্পের মেয়াদ ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত। তবে এই সময়ের মধ্যে সম্পূর্ণ কাজ শেষ করা কঠিন হবে। তাই প্রকল্পের মেয়াদ বাড়াতে আমরা মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব দিয়েছি। বেশি সময় লাগবে না। মাত্র ২ মাস বাড়তি সময় পেলেই পুরো কাজটি শেষ করতে পারব। এসপিএম চালু হলে দেশে আমদানি করা জ্বালানি তেল খালাসে নতুন দিগন্তের সূচনা হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর