রাজধানীর উপকণ্ঠ সাভারে গভীর রাতে স্বর্ণের ১৯টি দোকানে একযোগে দুর্ধর্ষ ডাকাতির বর্ণনা দিয়েছেন বাজারের নিরাপত্তা প্রহরী মোহাম্মদ বাবুল।
রোববার রাত ১টার দিকে ওই ডাকাতির সময় প্রথম বাবুলের চোখ-মুখ বেঁধে নির্যাতন চালায় দলটি। পরে লিটন, বাবু, মাহেন্দ্রসহ আরও চার নিরাপত্তা প্রহরীকে মারধর করে বেঁধে রাখে সশস্ত্র ডাকাতরা।
স্বর্ণের দোকানে থাকা মালিক ও কর্মচারীদেরও একটি দোকানে বেঁধে রাখা হয়। প্রায় দুই ঘণ্টার লুটপাট শেষে ট্রলারে নদীপথে পালিয়ে যায় ডাকাতরা।
সকালে আশুলিয়ার নয়ারহাট বাজারে গিয়ে দেখা যায়, লুট হওয়া দোকানের মালিকদের চোখে-মুখে আতঙ্ক ও অসহায়ত্বের ছাপ। ওই সময় বাজারের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পাহারাদার মোহাম্মদ বাবুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
প্রত্যক্ষদর্শী এ পাহারাদার পরে নিউজবাংলার কাছে ডাকাতির ঘটনার বর্ণনা দেন।
নয়ারহাট বাজারের নিরাপত্তা প্রহরী মোহাম্মদ বাবুল। ছবি: নিউজবাংলা
বাবুল বলেন, ‘গেছে রাতে লোক ছিল (নিরাপত্তারক্ষী) আমারে দিয়ে পাঁচজন। চারজন ডিউটিতে রইছিল আর আমি রাউন্ডে। রাইত ১টার দিকে আমি যখন মাছ বাজারের ওই দিকে গেছি। গিয়া বইয়া থাকছি। পরে দেখি প্রথম ৭-৮ জন লোক আসতেছে।
‘এরপর দেখি অনেক লোক; তাও প্রায় এক শর ওপরে। আমি মনে করছি যে, মাঝেসাজে তো এ রকম লোকজন যায়। পরে আমার কাছে হঠাৎ যাইয়ে বলতেছে, তুই সিকিউরিটি না? আমি তাকাই কইছি, সিকিউরিটি কি না আপনে জানেন না? এই কথা কইছি পরে আমারে বাইন্দা (বেঁধে) ফালাইছে।’
তিনি আরও জানান, ‘অস্ত্রপাতি, পিস্তল, রাইফেল, দুই নলা বন্দুক, চাপাতি সবার কাছে। আমারে পরে চোখ বাইন্দা কইলো নড়াচড়া করিস না, শব্দ করিস না। নইলে মাইরা ফালামু। আমারে ওই সময় প্রচুর মারিছে। পরে ওই দিকে স্বর্ণের দোকানের দিকে ওরা চইলা গেল।
‘ওই সময় রাস্তা দিয়া যত লোক গেছে সবাইরে আটকাইছে। অনেক দোকানদাররে মাইরা-বাইন্দা রাইখা সব নিয়া গেছে। আমি শব্দ পাইছি। ওরা ডাকাতি কইরা সেলোতে (ইঞ্জিনচালিত নৌকা) চইলা গেছে। আমার চোখ-মুখ বান্দা আছিল, তাই দেখি নাই।’
সাভারের বংশী নদীর তীরবর্তী আশুলিয়ার ঐতিহ্যবাহী বাজারের স্বর্ণের দোকানগুলোতে রোববার গভীর রাতে ট্রলারে এসে এ ডাকাতি করা হয়।
ব্যবসায়ীদের দাবি, অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নগদ অর্থসহ প্রায় ২ কোটি টাকার স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায় ডাকাতরা।