বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

শিয়াল মেরে সমালোচনায় জনপ্রতিনিধি

  •    
  • ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৮:৫৬

অভিযোগ স্বীকার করে ইউপি সদস্য আবদুল হামিদ জানান, অনেকদিন আগে গ্রামের একজনকে শিয়াল কামড়েছিল। সেজন্য হঠাৎ লোকালয়ে শিয়াল দেখে আতঙ্কিত হয় এলাকাবাসী। তারা শিয়াল মারতে লাঠিসোটা নিয়ে বের হয়। পরে তিনিও তাদের সঙ্গে যোগ দেন।

একটি মৃত শিয়ালকে ঘিরে চেহারায় তৃপ্তি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন কয়েকজন। এমন একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ায় সমালোচনায় পড়েছেন নাটোরের বড়াইগ্রামের এক জনপ্রতিনিধি।

রোববার বিকেল ৫টার দিকে উপজেলার ইকরি রাজাপুর এলাকার সজিব রানা নামে একটি ফেসবুক আইডি থেকে বন্যপ্রাণী হত্যার একটি ছবি ছাড়া হয়। ছবির ক্যাপশনে লেখা ‘বড়াইগ্রাম ২ নম্বর ওয়ার্ডে শিয়াল মারা অভিযান চলছে’। এর পরপরই এলাকাজুড়ে সমালোচনার সৃষ্টি হয়।

নাহিদুল ইসলাম নামের এক সংবাদকর্মী নিউজবাংলাকে জানান, শনিবার সকাল ১১টার দিকে বড়াইগ্রাম ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবদুল হামিদসহ সাত-আটজন এলাকাবাসী পিটিয়ে মারেন পাঁচটি শিয়াল ও একটি সাপ।

তিনি বলেন, ‘ঝোঁপঝাড় কমে যাওয়ায় খাদ্যের সন্ধ্যানে শেয়াল, বনবিড়ালসহ অন্য প্রাণীরা প্রায়ই লোকালয়ে চলে আসে। এই সুযোগে ইউপি সদস্য আবদুল হামিদ সাত-আটজনকে সঙ্গে নিয়ে লাঠিসোটা দিয়ে পাঁচটি শেয়াল ও একটি সাপ পিটিয়ে মেরে ফেলেন। তারা প্রাণীগুলোকে হত্যা করে রীতিমতো উল্লাসে মেতে ওঠেন। ছবিগুলো সজিব রানা নামে ফেসবুক আইডি থেকে আপ করা হলে চারদিকে নিন্দার ঝড় ওঠে।’

তিনি জানান, প্রাণীকূল পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে। জনপ্রতিনিধির এমন কাজ করা ঠিক হয়নি।

পরিবেশবাদি ফজলে রাব্বি বলেন, ‘চারিদিকে অতিবৃষ্টির কারণে খাল-বিল পানিতে ভরে গেছে। এজন্য লোকালয়ের আশেপাশে শেয়াল, সাপ, বনবিড়ালের মত কিছু বন্যপ্রাণী ঘোরাঘুরি করে। এভাবে বন্যপ্রাণী নিধন করতে থাকলে বিলুপ্ত হবে নানা প্রজাতির প্রাণী। জনপ্রতিনিধি হয়ে আইন অমান্য করায় আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে আইনে ব্যবস্থা নিতে হবে।’

শিয়াল হত্যার ছবি সংক্রান্ত ভাইরাল ফেসবুক পোস্টের স্ক্রিনশট

বড়াইগ্রাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোমিন আলী বলেন, ‘এভাবে বন্যপ্রাণী নিধনের কোনো সুযোগ নেই। জনপ্রতিনিধি হয়ে তিনি বন্যপ্রাণী হত্যা করে ভুল করেছেন। ভবিষ্যতে এমন ন্যাক্কারজনক কাজ যেন তিনি আর না করেন, সেজন্য আবদুল হামিদকে মৌখিকভাবে সতর্ক করা হয়েছে।’

অভিযোগ স্বীকার করে ইউপি সদস্য আবদুল হামিদ জানান, অনেক দিন আগে গ্রামের একজনকে শিয়াল কামড়েছিল। সেজন্য হঠাৎ লোকালয়ে শিয়াল দেখে আতঙ্কিত হয় এলাকাবাসী। তারা শিয়াল মারতে লাঠিসোটা নিয়ে বের হয়। পরে তিনিও তাদের সঙ্গে যোগ দেন।

তিনি বলেন, ‘বন্যপ্রাণী হত্যা করা যে অপরাধ, তা আমার জানা ছিল না। ভবিষ্যতে আমার এমন ভুল আর হবে না।’

বড়াইগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘মুলত এসব ইউপি সদস্য আইন সম্পর্কে খুব একটা জানেন না। বন্যপ্রাণী হত্যা যে বড় ধরনের অপরাধ, সে সম্পর্কে তাদের ধারণা নেই। বিষয়টি জানার পর পুলিশ প্রশাসন ও বনবিভাগের সঙ্গে কথা বলেছি। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আবদুল হামিদকে লিখিতভাবে কৈফিয়ত দিতে বলেছি। তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর