মিথ্যা তথ্য দিয়ে সঞ্চয়পত্র কিনলে ৬ মাসের জেল বা এক লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রেখে নতুন আইন করতে যাচ্ছে সরকার।
এমন বিধান যুক্ত করে ‘সরকারি ঋণ আইন, ২০২১’ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ আইনের খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়।
এদিন দুপুরে সচিবালয়ে বৈঠক পর্রবর্তী ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘কোন ব্যক্তি সরকারি সিকিউরিটি বা জাতীয় সঞ্চয় স্কিমের আওতায় ইস্যুকৃত সার্টিফিকেটের স্বত্ব অর্জনের উদ্দেশে মিথ্যা বক্তব্য প্রদান করলে কমপক্ষে ৬ মাসের কারাদণ্ড অথবা কমপক্ষে এক লাখ টাকা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারে।’
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘যে টাকা পয়সা ডিপোজিট করবে তা নিয়ে যদি মিথ্যা কথা বলে, তা কোথা থেকে আসলো, ইনকাম ট্যাক্স ইস্যু করা না থাকে, সে যদি মিথ্যা তথ্য দেয়, তাহলে সেক্ষেত্রে এ শাস্তি দেওয়া হবে।'
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘জনগনকে এটা ওপেনলি জানানো হবে, সরকারি ঋণ আইনের মাধ্যমে কত টাকা হল এবং এটার কী অবস্থা বা মুনাফা বা সুদ দেওয়া হল, তা জনগণকে জানানো হবে।’
সরকারি ঋণ আইন ১৯৪৪ বিভিন্ন সময়ে প্রয়োজনীয় সংশোধন করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বাস্তব অবস্থার পরিস্থিতিতে ঋণ পদ্ধতি ও ডিপোজিট সিস্টেমও চেঞ্জ হয়ে গেছে। তাই নতুন আইন করতে হচ্ছে। বিস্তারিত আলোচনার পর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়ে দেয়া হয়েছে।’
আইন প্রণয়নের কারণ ব্যাখ্যা করে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘বাংলাদেশে সরকারি ঋণ ব্যবস্থাপনার সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর জন্য অধিকতর আধুনিক প্রক্রিয়ায় ঋণ সংগ্রহ, টেকসই ঋণ নীতি ও পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং ঋণ কৌশলপত্র প্রস্তুত, ঋণের ঝুঁকি নিরূপণ এবং সরকারের দায় হিসাবায়নের পথ অধিকতর সম্প্রসারণ করা।’
খসড়া আইনে ৪০টি ধারা রয়েছে জানিয়ে সচিব বলেন, ‘এর মূল বিষয় সরকারের বাজেট ঘাটতি পূরণের লক্ষ্যে ঘাটতি অর্থায়ন বা অন্য কোন উদ্দেশে সরকার কর্তৃক গৃহীত বা দেশিয় বা বিদেশি মুদ্রায় গৃহীত সুদ বা মুনাফা যুক্ত বা সুদ বা মুনাফা মুক্ত যে কোন প্রকারের ঋণ বিনিয়োগ সংগ্রহ করতে পারবে।’
তিনি বলেন, ‘সরকার যে ঋণটা নেবে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে আর বিপরীতে একটি গ্যারান্টি থাকবে, যে টাকাটা সে দেবে সে টাকা ফেরত পাওয়ার গ্যারান্টি থাকবে।’
‘অনেক সময় প্রাইভেট ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান যারা গ্রাহক তাদের সুবিধা দেয়, যেহেতু সরকার তাই গ্রাহককে এই নিরাপত্তা দেবে, যেভাবেই হোক প্রপার ডিউ তা ব্যাক পাবে।’
তিনি বলেন, ‘সরকারি ঋণ অফিসগুলোর ভূমিকা ঠিক করে দেওয়া হবে, কে কি করবে। শরিয়াভিত্তিক সরকারি সিকিউরিটি ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত বিধানাবলি প্রস্তাব করা হয়েছে।’
সাংবাদিকদের উদ্দেশে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘আপনারা জানেন, বছর আগে শুকুক নামে একটি বন্ড বাংলাদেশ ব্যাংক শুরু করেছে, এতে ভাল সাড়া পাওয়া গেছে। যে আশা করা হয়েছিল, তার দ্বিগুণ সাড়া পাওয়া গেছে এবং সেটি হচ্ছে শরিয়াভিত্তিক। স্বাভাবিক ডিপোজিট ব্যবস্থার পাশাপাশি শরিয়াভিত্তিক ডিপোজিট ব্যবস্থার চিন্তা ভাবনা করা হয়েছে।’