বিনা চিকিৎসায় বাসচালক মিজানের মৃত্যুর অভিযোগে চাঁদপুরের বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন পরিবহন শ্রমিকেরা।
সোমবার ভোর ৫টা থেকে বাস চলাচল বন্ধ রেখে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা। এ সময় তারা পৌর বাস টার্মিনালে ভাঙচুর করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
পুলিশ ও বাস চালকরা জানান, রোববার চাঁদপুর সদরের চাঁদখার বাজার এলাকায় পদ্মা বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এ সময় এক শিশু নিহতসহ আহত হন বাসের ১০ যাত্রী। গুরুতর আহত হন বাসচালক মিজান মোল্লা।
পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতারা কোনো ধরণের সহযোগিতা না করায় বিনা চিকিৎসায় রোববার রাতে তার মৃত্যু হয়।
পদ্মা বাসের চালক মমিন বেপারী বলেন, ‘শ্রমিকদের উন্নয়নে পরিবহন ও মালিক সমিতির নেতাদের কাজ করার কথা থাকলেও কোনো বিপদে তাদেরকে আমরা পাই না। আমাদের এক বাস চালক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে ঢাকায় বিনা চিকিৎসায় মারা গেছেন। কোন নেতা সহায়তা তো দূরের কথা তার খোঁজ পর্যন্ত নেননি। অথচ শ্রমিকদের কল্যাণে প্রতি বাস থেকে নিয়মিত চাঁদা দেয়া হয়।‘ আরেক বাস চালক মো. ইসহাক বলেন, ‘এই নেতারা পৌর বাস টার্মিনালের কোন অবকাঠামো উন্নয়ন করেননি। তারা আমাদের কষ্টের টাকা আত্মসাৎ করছেন প্রতিনিয়ত। মিজানের মত অনেকেই বিনা চিকিৎসা এবং সহযোগিতার অভাবে মারা গেছেন। আমরা এই পরিবহন নেতাদের পদত্যাগ দাবি করছি। দাবি-দাওয়া মেনে না নিলে বিক্ষোভ চলবে।‘
দুপুর ১টা পর্যন্ত চাঁদপুর থেকে ঢাকা, কুমিল্লা, সিলেট, চট্টগ্রাম, লক্ষ্মীপুরসহ কোন রুটে বাস ছেড়ে যায়নি। তবে ঢাকা ও কুমিল্লা থেকে বেশ কয়েকটি বাস চাঁদপুরে ঢুকতে দেখা গেছে।
ধর্মঘটের কারণে বিপাকে পড়েছেন যাত্রীরা। পরিবহন চলাচল না করায় অনেক যাত্রীকে ফিরে যেতে দেখা গেছে।
কুমিল্লার যাত্রী ফিরোজ আলম বলেন, ‘পূর্বঘোষণা ছাড়া বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়ায় গন্তব্যে যেতে পারছি না। এভাবে আমাদের বিপদে ফেলার কোন মানে হয় না। ধর্মঘট ছাড়ারও কোন লক্ষণ দেখছি না।‘
বিনা চিকিৎসায় চালকের মৃত্যুর প্রতিবাদ এবং চাঁদপুর পৌর বাস টার্মিনালের অবকাঠামো সমস্যার সমাধান, পরিবহন নেতাদের পদত্যাগ দাবিতে ভোর থেকে বাস চলাচল বন্ধ রেখে বিক্ষোভ করেন বাস শ্রমিকরা। এদিকে সমস্যা সমাধানে বাস মালিক ও শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছে পুলিশ প্রশাসন।
চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুর রশিদ বলেন, ‘দুর্ঘটনায় এক চালক নিহত হওয়ার ঘটনায় বিক্ষোভ ও বাস চলাচল বন্ধ রেখেছেন শ্রমিকরা। তাদের অভিযোগ, চালক মিজান বিনা চিকিৎসা ও সহযোগিতার অভাবে মারা গেছেন। আমরা পরিবহন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছি।‘