বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

শিক্ষার্থী বরণে প্রস্তুত হচ্ছে ক্লাস রুম

  •    
  • ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৫:৩৫

আন্ত মন্ত্রণালয় বৈঠক শেষে রোববার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ঘোষণা দেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। একই দিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তুতি হিসেবে ১৯টি নির্দেশনা জারি করে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। এসব নির্দেশনার আলোকেই প্রস্তুত করা হচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো।

প্রায় দেড় বছর পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ঘোষণা পেয়ে ক্লাসরুম পাঠদান উপযোগী করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন শিক্ষক-কর্মকর্তা, কর্মচারীরা। চলছে ঝাড়পোঁছ, পানি ছিটানো ও জীবাণুনাশক ছিটানোর কাজ।

ঠিক এমন চিত্রই দেখা গেল মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজে। পা রাখতেই বোঝা গেল কর্মব্যস্ত সবাই। বেঞ্চ-টেবিল পরিষ্কার করার পাশাপাশি এগুলোতে ছিটানো হচ্ছে জীবাণুনাশক।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের বয়েজ শাখার ভাইস প্রিন্সিপাল খালেদ মোশারফ বলেন, ‘আগামী ১২ তারিখ থেকে স্কুল চালু করতে আমরা প্রস্তুত আছি। লকডাউন ছাড়া অন্য সব সময় আমরা বিদ্যালয় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রেখেছি। স্কুল খুলতে আমাদের কোনো সমস্যা হবে না।’

রাজধানীর একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখা গেছে, ক্লাস চালু করতে পুরোপুরি প্রস্তুত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। স্কুল খোলার পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে সবকিছু পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে করা হচ্ছে।

ধোয়া-মোছার কাজ দেখা গেছে মোহাম্মদপুরের ওয়াইডব্লিউসিএ জুনিয়র গার্লস হাই স্কুলেও। এ বিষয়ে প্রিন্সিপাল র‍্যাচেল প্রভা বলেন, ‘আমাদের নিয়মিত শ্রেণিকক্ষ, ওয়াশরুম, মাঠ পরিষ্কার কার্যক্রম অব্যাহত ছিল। সবকিছু নিট অ্যান্ড ক্লিন আছে। শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট সবকিছু নিয়মিত পরিষ্কার করা হচ্ছে এবং রেগুলার আমাদের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। সরকার যদি বলে আমাদের শুধু ১২ সেপ্টেম্বরই নয়, আগামীকাল থেকে স্কুল খুলবে, তাও আমরা প্রস্তুত আছি।’

ব্যতিক্রম নয় সেন্ট জোসেফ উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল। এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রিন্সিপাল ব্রাদার লিও পেরেরা বলেন, ‘আমাদের প্রতিষ্ঠানে প্রতিনিয়ত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম চলমান ছিল। যার কারণে আমাদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিয়ে নতুন করে প্রস্তুতির চিন্তা করতে হচ্ছে না। এ বিষয়ে আমাদের সার্বিক প্রস্তুতি রয়েছে। সরকার কাল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ঘোষণা দিলেও আমরা তা বাস্তবায়ন করতে পারব।’

রাজধানীর নবাবকাটরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বন্ধ ফটক দিয়ে ভেতরের চিত্র দেখছে স্কুলটির শিক্ষার্থীরা। ছবি: নিউজবাংলা

তিনি আরও বলেন, ‘করোনার সময়ে আমাদের অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চলমান ছিল। শিক্ষক-কর্মচারীরা তাদের নিয়মিত কাজ চালিয়ে গেছেন। শিক্ষার্থীরাও তাদের পড়াশোনার মধ্যেই ছিলেন। পার্থক্য শুধু স্কুলে এসে পাঠ গ্রহণ ও বাসায় বসে পাঠ গ্রহণের মধ্যে। পূর্ব প্রস্তুতি থাকায় আমাদের নতুন করে বেগ পেতে হচ্ছে না।’

২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ার ৯ দিন পর ১৭ মার্চ থেকে স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ধাপে ধাপে ছুটি বাড়িয়ে আগামী ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে।

জুন মাসের শেষে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার তারিখ দিয়েও করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে প্রাণঘাতী ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ার পরিপ্রেক্ষিতে সে পরিকল্পনা থেকে সরে আসতে বাধ্য হয় সরকার। জুলাই থেকে আরও কঠোর বিধিনিষেধে যায় সরকার।

করোনাভাইরাসের কারণে ১৭ মাস বন্ধ থাকার পর স্কুল-কলেজে সশরীরে পাঠদান শুরু হবে আগামী রোববার থেকে। এদিন প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস চালু হবে।

রোববার আন্ত মন্ত্রণালয় বৈঠক শেষে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ঘোষণা দেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। একই দিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তুতি হিসেবে ১৯টি নির্দেশনা জারি করে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। এসব নির্দেশনার আলোকেই প্রস্তুত করা হচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো।

দীর্ঘদিন পর খুলতে যাচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান । পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে ক্লাস রুম। ছবি: নিউজবাংলা

১৯ দফা নির্দেশনায় যা বলা হয়েছে:

# শিক্ষাঙ্গনের প্রবেশমুখে করোনার স্বাস্থ্যবিধি ব্যানার বা অন্য কোনো উপায়ে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করতে হবে।

# প্রবেশপথে সব শিক্ষক-কর্মচারী-শিক্ষার্থী বা অভিভাবকদের তাপমাত্রা মাপতে হবে।

# শিক্ষার্থীদের ভিড় এড়াতে প্রতিষ্ঠানের সব প্রবেশমুখ ব্যবহার করতে হবে। যদি একটি প্রবেশমুখ থাকে সে ক্ষেত্রে একাধিক প্রবেশমুখের ব্যবস্থা করার চেষ্টা করতে হবে।

# প্রতিষ্ঠান খোলার প্রথম দিনে শিক্ষার্থীদের আনন্দঘন পরিবেশে শ্রেণি কার্যক্রমে স্বাগত জানাতে বলা হয়েছে।

# শিক্ষার্থীরা কীভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতিষ্ঠানে অবস্থান করবে এবং বাসা থেকে যাওয়া-আসা করবে, সে বিষয়ে শিক্ষণীয় ও উদ্বুদ্ধকারী বক্তব্য দিতে হবে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের দেয়া ভিডিও প্রদর্শনের ব্যবস্থা করতে হবে।

# প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের একটি কক্ষ প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থাসহ আইসোলেশন কক্ষ হিসেবে প্রস্তুত রাখতে হবে।

# প্রতিষ্ঠানের সব ভবনের কক্ষ, বারান্দা, সিঁড়ি, ছাদ ও আঙিনা যথাযথভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার ব্যবস্থা করতে হবে।

# প্রতিষ্ঠানের সব ওয়াশরুম নিয়মিত সঠিকভাবে পরিষ্কার রাখা এবং পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা করতে হবে।

# শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মচারী ও অভিভাবক প্রবেশের সময় সরকারের দেয়া স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে প্রতিপালনের ব্যবস্থা করতে হবে।

# প্রতিষ্ঠানের সব শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীর সঠিকভাবে মাস্ক (সম্ভব হলে কাপড়ের মাস্ক) পরতে হবে।

# প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন স্থানে সাবান বা হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে হাত ধোয়ার এমন ব্যবস্থা করতে হবে, যেন শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ঢোকার আগে সাবান দিয়ে হাত ধুতে পারে।

# শ্রেণিকক্ষে তিন ফুট শারীরিক দূরত্বে ছাত্র-ছাত্রীদের বসার ব্যবস্থা করতে হবে।

# শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের খেলার মাঠ, ড্রেন ও বাগান যথাযথভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করতে হবে। কোথাও যেন পানি জমে না থাকে তা নিশ্চিত করতে হবে।

# প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির সংখ্যা নিরূপণ করতে হবে।

# সব শিক্ষার্থীর উপস্থিতি নিশ্চিত করার ব্যবস্থা করতে হবে।

# স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে প্রতিপালন করা হচ্ছে কি না, তা পর্যবেক্ষণ ও বাস্তবায়নের জন্য শিক্ষকদের সমন্বয়ে কমিটি করতে হবে।

# প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে আনন্দঘন শিখন কার্যক্রমের মাধ্যমে পড়াতেও বলা হয়েছে।

# প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয় অবকাঠামোগত মেরামত, বৈদ্যুতিক মেরামত এবং পানি সংযোগজনিত মেরামত আগেই শেষ করতে হবে।

# স্কুল বা কলেজের ব্যবস্থাপনা কমিটি ও অভিভাবকদের সঙ্গে সভা করে এ-সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

এ বিভাগের আরো খবর