চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানিপণ্যবাহী জাহাজকে বার্থিংয়ের জন্য এখন আর দিনের পর দিন বহির্নোঙরে অপেক্ষা করতে হচ্ছে না। গত ২৭ দিনের রেকর্ড বলছে, বন্দর এখন জাহাজজট মুক্ত।
বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, জটমুক্ত হওয়ায় বন্দরের প্রতি আস্থা বাড়ছে ব্যবসায়ীদের। তাদের বিপুল অর্থও সাশ্রয় হচ্ছে।
বন্দর সূত্রে জানা যায়, বার্থিং পাওয়ার জন্য আগে এক একটি জাহাজকে ৮ থেকে ১০ দিন কখনও ১২ থেকে ১৫ দিন পর্যন্ত সাগরে অলস বসে থাকতে হতো। এখন জেটি খালি পাওয়ায় বিদেশি কনটেইনারবাহী জাহাজ অপেক্ষা ছাড়াই সরাসরি বন্দরে ভিড়ছে।
বন্দরের গত ২৭ দিনের রেকর্ডে দেখা গেছে, তিন দিন ধরে অপেক্ষায় থাকা জাহাজের সংখ্যা ছিল মাত্র তিনটি। আর মাত্র এক দিন অপেক্ষায় থেকে বার্থিং পেয়েছে এমন জাহাজের সংখ্যা ছিল ৫৮টি।
কর্মকর্তারা বলছেন, বন্দরে নতুন গ্যান্ট্রি ক্রেন স্থাপন, কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের নতুন যন্ত্রপাতি সংগ্রহ, উন্নত ব্যবস্থাপনা, অটোমেশন ও সক্ষমতা বাড়ানোর কারণে জাহাজ থেকে দ্রুত দ্রুত কনটেইনার লোড-আনলোড করা যাচ্ছে। এ কারণে জাহাজজট থাকছে না।
এই বন্দর দিয়েই দেশের আমদানি-রপ্তানি পণ্যবাহী কনটেইনারের ৯৮ শতাংশ আনা-নেয়া করা হয়।
বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘নিঃসন্দেহে বন্দরের কনটেইনার হ্যান্ডলিং সক্ষমতা বেড়েছে। এর ফলে অপেক্ষমাণ জাহাজের জন্য শিপিং এজেন্ট বা আমদানিকারককে দিনপ্রতি যে ১০ থেকে ১৫ হাজার ডলার বাড়তি গুণতে হতো, তা কমে আসবে।
‘বিদেশি জাহাজ মালিকদের কাছেও চট্টগ্রাম বন্দরের ভাবমূর্তি বাড়বে। এটি বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের জন্যও সুখবর।’
বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরওয়ার্ডস অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি খায়রুল আলম সুজন বলেন, ‘বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়ায় আমদানিকারকেরা দ্রুত তাদের পণ্য হাতে পাবে। কাঁচামাল দ্রুত হাতে পেলে পণ্যের উৎপাদন ও রপ্তানিও দ্রুত হবে।
’অর্থাৎ পুরো আমদানি-রপ্তানির জন্যই এটি সুখবর। একই সঙ্গে সরকারের কস্ট অব ডুয়িং বিজনেস নীতি বাস্তবায়নেও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে জানান তিনি।’
চট্টগ্রাম বন্দর সচিব ওমর ফারুক নিউজবাংলাকে জানান, করোনাকালে বিশ্বের অনেক বন্দর তাদের কার্যক্রম বন্ধ রাখলেও চট্টগ্রাম ছিল ব্যতিক্রম। কঠোর লকডাউন ও ঈদের ছুটিতেও সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘণ্টা বন্দর সচল ছিল।
তিনি জানান, এ সময় পুরোদমে কাজ করেছে বন্দর স্টেকহোল্ডাররা। তাই বন্দরে পণ্য খালাসে গতি এসেছে এবং জাহাজের অপেক্ষার সময়ও অনেক কমেছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী বন্দর কর্তৃপক্ষ ‘টাইম টু এ্যাকশন’ অনুসরণ করছে। সব মিলিয়েই এই ইতিবাচক পরিবর্তন।