বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

চিকলি পার্কে ৮ কোটি টাকা জলে

  •    
  • ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ২২:২০

পার্কে গিয়ে দেখা যায়, শিশুদের জন্য এখানে থাকা বিদ্যুৎচালিত নাগরদোলা, ঘূর্ণি দোলনা, সাঁজোয়া যান, গাড়ি, মেরিগোল্ড, প্রায় আধা কিলোমিটারজুড়ে গড়ে তোলা ট্রেনলাইন বিকল হয়ে আছে। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে একটি স্পিডবোট ছাড়া সব রাইডই বিকল। বিলের পাশে নির্মাণ করা আসনগুলো ভেঙে গেছে। বিদ্যুতের লাইনগুলো হয়ে উঠেছে বিপজ্জনক।

রংপুর মহানগরীর সগরপাড়ায় শত বছরের চিকলি বিলের চারপাশ সংরক্ষণ করে ৯২ একরের বিনোদন পার্ক করেছিল সিটি করপোরেশন। নাম দেয়া হয়েছিল ‘চিকলি পার্ক’। প্রায় সোয়া কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের লেকের চারপাশে সবুজ বৃক্ষের সমারোহ ঘেরা পার্কে বেশ কিছু রাইড স্থাপনে তখন ব্যয় হয় প্রায় ৮ কোটি টাকা।

২০১৫ সালের পয়লা বৈশাখে পার্কটি উদ্বোধন করেন তৎকালীন মেয়র প্রয়াত সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু। সেই থেকে পার্কের দেখভাল করেছে খোদ নগর ভবন। সেখানে দায়িত্বে ছিলেন ৩৩ কর্মচারী।

তবে মানহীন রাইড ব্যবহার করায় মাত্র ছয় বছরেই বিকল হয়ে পড়েছে প্রায় সবই। এতে বন্ধ রয়েছে পার্কের কার্যক্রম।

সম্প্রতি পার্কে গিয়ে দেখা যায়, শিশুদের জন্য এখানে থাকা বিদ্যুৎচালিত নাগরদোলা, ঘূর্ণি দোলনা, সাঁজোয়া যান, গাড়ি, মেরিগোল্ড, প্রায় আধা কিলোমিটারজুড়ে গড়ে তোলা ট্রেনলাইন বিকল হয়ে আছে। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে একটি স্পিডবোট ছাড়া সব রাইডই বিকল। বিলের পাশে নির্মাণ করা আসনগুলো ভেঙে গেছে। বিদ্যুতের লাইনগুলো হয়ে উঠেছে বিপজ্জনক।

খোদ নগর কর্তৃপক্ষই এখন বলছে, এই পার্ক নির্মাণে যে টাকা খরচ হয়েছে তার পুরোটাই অপচয়।

এর মধ্যে গত অর্থবছরে পার্কটি আধুনিকায়ন করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে ‘বঙ্গবন্ধু চিকলি পার্ক’ করার জন্য ২০০ কোটি টাকার প্রোজেক্ট প্রোফাইল ডিপিপি করে পাঠানো হয় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে। তবে তাতে সায় মেলেনি।

সম্প্রতি পার্কের ফটকের গেটে কথা হয় কামাল কাছনা এলাকার সাহানুর বেগমের সঙ্গে। তিনি দুই সন্তানকে নিয়ে ঘুরতে গিয়েছিলেন সেখানে। পার্ক বন্ধ তাই ফটকেই তাকে আটকে দেয়া হয়। তিনি আর ভেতরে যেতে পারেননি।

সাহানুর বেগম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শহরে বড় বিনোদন কেন্দ্র বলতে চিড়িয়াখানা, কিন্তু সেখানে নতুন কোনো পশুপাখি নেই। বিনোদনের জন্য এখানে আসতাম। এটাও বন্ধ।’

শহুরে জীবনে বিনোদনের ভালো জায়গা প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

পার্কের ভেতরের খুদে ব্যবসায়ী শাহ আলম জানান, পার্কের রাইডগুলো মানসম্মত ছিল না। মানুষ কম আসত। এখন পার্ক বন্ধ। যারা ব্যবসায়ী ছিলেন পার্ক বন্ধ থাকায় তাদের ব্যবসাও বন্ধ; কষ্টে আছেন। তারা চান পার্কটি দ্রুত চালু করা হোক।

রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, ‘পার্কটি কীভাবে আধুনিকায়ন করা যায়, দর্শনার্থীদের আকৃষ্ট করা যায় তা নিয়ে আমরা ভাবছি। আমরা কাজও শুরু করে দিয়েছি। সব আধুনিক রাইড ব্যবহার করা হবে। এতে সিটি করপোরেশনের ইন্টারনাল রেভিনিউ বাড়বে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিগত পরিষদের সময় যে টাকাটা ব্যয় করা হয়েছে তা টোটাল অপচয়। কমপক্ষে ৮ কোটি টাকা এখানে ব্যয় করা হয়েছে। এই টাকার মধ্যে বাস্তবায়ন হয়েছে তিন থেকে চার শ গাছ লাগানো। সেগুলোই সম্পদ। অন্য ইনভেস্ট সব ব্যাড ইনভেস্ট হয়েছে। এটা রাষ্ট্রীয় টাকার অপচয় হয়েছে।

আগের রাইডগুলো আর চলবে না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এগুলো আমরা অকশনে দেয়ার চিন্তা করছি। কমিটি গঠন করে দিয়েছি, তারা বিক্রি করবে। এরপর নতুন রাইড স্থাপন করা হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর