‘ময়মনসিংহ শহরে চাকরি করি। তারিখ নির্ধারিত থাকায় স্ত্রীসহ টিকা নিতে আসি। কিন্তু টিকা পেলাম না। এতে একদিকে অফিসে অনুপস্থিত থাকতে হয়েছে। অন্যদিকে সময় আর অর্থের অপচয় তো আছেই।‘
আক্ষেপের সুরে কথাগুলো বলছিলেন মো. হাবিবুল্লাহ। জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে দ্বিতীয় ডোজের টিকা নিতে এসে তার মতো হয়রানির শিকার হয়েছেন আরও অনেকে।
তাদেরই একজন সরিষাবাড়ী উপজেলার পশু চিকিৎসক আব্দুল বারেক। তিনি বলেন, ‘নির্ধারিত তারিখে টিকা নিতে এসেও পেলাম না। কষ্ট করে অনেকক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে চলে যেতে হলো।’
টিকাদান নিয়ে রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে হট্টগোল-বিশৃঙ্খলা হয়েছে জামালাপুরের সরিষাবাড়ী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বন্ধ করে দেয়া হয় টিকাদান কার্যক্রম।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানায়, সরিষাবাড়ী পৌরসভাসহ উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের জন্য ১ সেপ্টেম্বর ২য় ডোজের ৮ হাজার ৮০০ ডোজ সিনোফার্ম টিকার বরাদ্দ আসে। গণটিকা কার্যক্রমের জন্য ৪ হাজার ৮০০ টিকা রাখা হয়, যা দেয়া হবে ৭ সেপ্টেম্বর। বাকিগুলোর মধ্যে ১ হাজার ৫৬৭টি টিকা চলমান কার্যক্রম হিসেবে ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাখা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অনলাইন নিবন্ধনকারীদের মধ্যে যারা এসএমএস পেয়েছেন তারা সকাল ৯টায় টিকা নিতে আসেন। প্রথম ডোজ নেয়ার সময় যাদের দ্বিতীয় ডোজের তারিখ দেয়া হয়েছিল তারাও টিকার জন্য লাইনে দাঁড়ান। একপর্যায়ে যারা এসএমএস পাননি তাদের টিকা দেয়া হবে বলে জানানো হয়। এ নিয়ে লাইনে দাঁড়ানো লোকজন বিশৃঙ্খলা করেন।
পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় বরাদ্দের টিকা শেষ জানিয়ে আপাতত টিকাদান কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।
এ সময় লাইনে দাঁড়ানো অনেকে অভিযোগ করেন, নিবন্ধন করার পর এসএমএস না এলেও আগে অনেককে টিকা দেয়া হয়েছে। কিন্তু এখন বন্ধ ঘোষণা করাটা হয়রানিমূলক।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা সাহেদুর রহমান নিউজবাংলাকে জানান, দ্বিতীয় ডোজের জন্য বরাদ্দ টিকা কম থাকায় রোববার শুধুমাত্র যারা এসএমএস পেয়েছেন তাদের টিকা দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়। যারা এসএমএস পাননি তারা কথাটি না মেনে হৈ-চৈ শুরু করেন।
সরিষাবাড়ী থানার পুলিশ উপপরিদর্শক আরিফুল ইসলাম জানান, টিকা সঙ্কট থাকায় লাইনে দাঁড়ানো লোকজন বিশৃঙ্খলা করেন। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।