আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের পাল্টাপাল্টি সমাবেশকে কেন্দ্র করে আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ। রোববার উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নে প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করায় পরিস্থিতি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
ভোর ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত মুছাপুর ইউনিয়নের রংমালা বাজার ঘিরে ৫ বর্গকিলোমিটার এলাকায় ১৪৪ ধারা কার্যকরে সতর্ক অবস্থায় ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। একই স্থানে আওয়ামী লীগ দুই গ্রুপের ডাকা সমাবেশ বাতিল হওয়ায় কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।১৪৪ ধারা জারির কারণে সকাল থেকে মুছাপুরের হাটবাজার ও সড়কে যানবাহন চলাচল ছিল সীমিত। লোকজনের সমাগম ছিল অন্য দিনের চেয়ে কম। গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে সতর্ক অবস্থান নেয় র্যাব-পুলিশ।কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সামিউল ইসলামের উপস্থিতিতে বিপুলসংখ্যক পুলিশ রংমালা বাজার এলাকায় দিনভর টহল দেয়। সেখানকার অধিকাংশ দোকান বন্ধ করে রাখেন ব্যবসায়ীরা।কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াউল হক মীর জানান, রংমালা বাজার এলাকার চারদিকে পাঁচ বর্গকিলোমিটারে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। এ আদেশ চলাকালে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
শুক্রবার বিকেল ৫টার দিকে বসুরহাট পৌরসভার হলরুম থেকে রোববার সকাল ১০টায় রংমালা বাজারে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেন মেয়র আব্দুল কাদের মির্জা।
ওই দিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলা আওয়ামী লীগ একাংশের নেতা মাহবুবুর রশীদ মঞ্জু ফেসবুক লাইভে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের পক্ষে একই বাজারের রংমালা মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে প্রতিবাদ সমাবেশ ডাকেন।কাদের মির্জার অনুসারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইস্কান্দার হায়দার চৌধুরী বাবুলকে রংমালা দারুস সুন্নাহ সিনিয়র মডেল মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির পদ থেকে বাদ দেয়ার প্রতিবাদে সমাবেশ ঘোষণা করেন মেয়র মির্জা।
মাহবুবুর রশীদ মঞ্জু তাদের অনুসারী ওলামা লীগ নেতা ও রংমালা দারুস সুন্নাহ সিনিয়ির মডেল মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল আবদুল্লাহ আল মামুনকে অপমানের প্রতিবাদে একই স্থানে প্রতিবাদ সমাবেশ ডাকেন।
একই এলাকায় আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের পাল্টাপাল্টি সমাবেশ ঘোষণায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে কোম্পানীগঞ্জজুড়ে। এর পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা প্রশাসন এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে।
আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের দ্বন্দ্বের জেরে গত আট মাস ধরে কোম্পানীগঞ্জে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজ করছে । দুই গ্রুপের সংঘর্ষে দুই শতাধিক নেতা-কর্মী আহত এবং এক সাংবাদিকসহ দুইজন নিহত হন।