অস্ত্র আইনের মামলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গাড়িচালক আব্দুল মালেকের (৬৩) বিরুদ্ধে সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে।
রোববার ঢাকার মহানগর বিশেষ ট্রাইব্যুনালের জ্যেষ্ঠ বিচারক কে এম ইমরুল কায়েশের আদালতে এ মামলায় সবশেষ সাক্ষী হিসেবে র্যাব সদস্য আজিজুল ইসলাম সাক্ষ্য দেন।
তার সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত সোমবার আব্দুল মালেকের ৩৪২ ধারায় আত্মপক্ষ শুনানির জন্য তারিখ ঠিক করেছে।
আসামিপক্ষের আইনজীবী শাহীনুর ইসলাম অনি এই তথ্য নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেন।
এ নিয়ে মামলাটিতে অভিযোগপত্রের মোট ১৩ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৩ জনেরই সাক্ষ্য গ্রহণ করেছে আদালত।
আজিজুল ইসলাম তার সাক্ষীর জবানবন্দিতে বলেন যে মালেকের বাসায় তল্লাশি চালানোর সময় তাদের ছয় সদস্যের তল্লাশি টিমের তিনজন নিচে ছিলেন এবং তিনজন মালেকের শয়নকক্ষে তল্লাশি চালান।
মালেকের বিছানার নিচ থেকে জাল টাকার সন্ধান পাওয়া যায় এবং পরে সেখান থেকে অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
তারা মালেকের বিছানাপত্র উল্টেপাল্টে জাল টাকা পান। এরপর বিছানার নিচে এক কোণে রাখা একটি আগ্নেয়াস্ত্র পান।
মালেকের আইনজীবী শাহীনুর ইসলাম অনি জেরার সময় সাক্ষী আজিজুল ইসলামকে জিজ্ঞাসা করেন যে আপনারা কে কে মালেকের শয়নকক্ষে গিয়েছিলেন? উত্তরে তিনি বলেন সেসহ দুইজন মালেকের শয়নকক্ষে যান। আইনজীবী আবার প্রশ্ন করেন যে অস্ত্র তো একটি ভারী জিনিস?
উত্তরে বলেন হ্যাঁ ভারী জিনিস। এরপর আবার প্রশ্ন করেন তাহলে অস্ত্রটি আগে না পেয়ে টাকা-পয়সা আগে কীভাবে পেলেন? উত্তরে সাক্ষী বলেন যে তাদের সেটা জানা নেই।
এরা আগে গত ৩১ আগস্ট সাক্ষীর জেরাতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা র্যাব-১-এর এস আই মাহমুদ হাসান চৌধুরী বলেছিলেন যে তল্লাশি দলের দুই সদস্য নিচে ছিলেন আর বাকি পাঁচ সদস্য মালেকের শয়নকক্ষে তল্লাশি চালান এবং জাল টাকা ও অস্ত্র উদ্ধার করেন।
মালেকের আইনজীবী শাহীনুর ইসলাম অনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এরা জব্দ তালিকার সাক্ষী অথচ দুইজন দুই রকমের সাক্ষী দেয়া ছাড়াও ১৩ জন সাক্ষী ১৩ রকমের সাক্ষ্য দিয়েছেন আদালতে। সাক্ষীর এলোমেলো অবস্থা দেখে বিচারক নিজেই অবাক হয়েছেন। তাই এ মামলায় আসামি মালেক নিশ্চিত খালাস পাবেন বলে আশা প্রকাশ করছি।’
রাষ্ট্রপক্ষে ট্রাইব্যুনালের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল সাক্ষীকে আদালতে সহায়তা দেন।
গত ১১ মার্চ আব্দুল মালেকের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে আদালত। গত ১১ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা র্যাব-১-এর এসআই মেহেদী হাসান চৌধুরী মালেকের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেন।
প্রসঙ্গত, অবৈধ অস্ত্র, জাল নোট ব্যবসা ও চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গত বছর ২০ সেপ্টেম্বর ভোরে রাজধানীর তুরাগ এলাকা থেকে গাড়িচালক আবদুল মালেক ওরফে ড্রাইভার মালেককে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১। এ সময় তার কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, পাঁচ রাউন্ড গুলি, দেড় লাখ বাংলাদেশি জাল নোট, একটি ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় র্যাব-১-এর পরিদর্শক (শহর ও যান) আলমগীর হোসেন বাদী হয়ে তুরাগ থানায় অস্ত্র ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে দুটি মামলা করেন।