উত্তরবঙ্গের মহাসড়কে যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতির ঘটনায় ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। তারা পরিকল্পনা করে গত ৯ মাসে ৭-৮টি ডাকাতিতে অংশ নেয় বলে র্যাব দাবি করেছে।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে শনিবার দুপুরে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, শুক্রবার র্যাব-১ ও র্যাব-১৩ যৌথ অভিযান পরিচালনা করে আশুলিয়া ও গাইবান্ধা এলাকায়। সেখান থেকে ডাকাত দলের ৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের মধ্যে ডাকাত সর্দার সুশীল চন্দ্র নয়ন রয়েছেন। এ ছাড়া গ্রেপ্তার করা হয় একই দলের সদস্য রিয়াজুল ইসলাম ওরফে লালু, ওমর ফারুক, ফিরোজ কবির, আবু সাঈদ মোল্লা ও শাকিল মিয়াকে।
কমান্ডার মঈন বলেন, ‘ডাকাত দলটি যাত্রীবেশে গত ৯ মাসে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন রুটের ৭-৮টি বাসে ডাকাতি করেছে। ডাকাতির পর তারা নিজ নিজ পেশায় ফিরে যায় এবং স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে থাকে। কিছু সময়ের বিরতি দিয়ে তারা ফের বাসে ডাকাতির পরিকল্পনা করে।’
র্যাব জানায়, ডাকাত দলটি সর্বশেষ ৩১ আগস্ট রাতে হানিফ পরিবহনের একটি বাসে ডাকাতি করে যাত্রীবেশে। বাসটি ঢাকা থেকে পঞ্চগড়ে যাচ্ছিল। রাত সাড়ে আটটায় বাসটি সাভারে পৌঁছালে পরিকল্পনা অনুসারে রিয়াজুল ইসলাম ওরফে লালু ও আবু সাঈদ মোল্লাসহ ডাকাত দলের তিনজন টিকিট কেটে বাসে চড়েন। একইভাবে নবীনগর এলাকা থেকে বাসে চড়েন নয়ন, ওমর ফারুক ও ফিরোজ কবির।
বাসটি রাত আড়াইটার দিকে গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে পৌঁছালে শুরু হয় ডাকাতি। যাত্রীবেশের ডাকাতরা বাসটি নিয়ন্ত্রণে নেয় চালক মনজুরকে ছুরিকাঘাত করে। এরপর ডাকাত লালু বাস চালাতে থাকেন, অন্যরা যাত্রীদের মালামাল লুট করেন। রাত তিনটার দিকে ডাকাতরা পীরগঞ্জ এলাকায় বাসটি ফেলে পালিয়ে যায়। এদিকে আহত বাসচালক মনজুরকে নিকটস্থ পলাশবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
কমান্ডার মঈন বলেন, ‘ডাকাত দলটিতে অন্তত ১০-১২ জন সদস্য রয়েছেন। মূল হোতা নয়নের নেতৃত্বে গত ৯ মাসে প্রায় ৭-৮টি যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে হানিফ পরিবহন, ডিপজল পরিবহন, শ্যামলী পরিবহন, শটিবাড়ি স্পেশাল, সৈকত পরিবহন, জায়দা পরিবহন ও রত্না স্পেশাল।
‘ডাকাত দলের সদস্যদের কেউ গার্মেন্টসে চাকরি করেন, কেউ অটোরিকশার চালক, কেউবা ফল বিক্রেতা। বিভিন্ন ক্ষুদ্র পেশায় জড়িত থেকে তারা স্বাভাবিক জীবনযাপন করেন। সে কারণে এলাকার লোকজন তাদের সন্দেহ করতে পারেন না। সুযোগ বুঝে তারা ডাকাতির পরিকল্পনা নেন।’
তিনি জানান, বাস কাউন্টারে সংরক্ষিত ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণে দেখা গেছে, একেক সময় কাউন্টারে টিকিট কাটতে গিয়েছেন ডাকাত দলের ভিন্ন ভিন্ন সদস্য। তারা সবাই উত্তরবঙ্গের বাসিন্দা, এলাকার পথ তাদের চেনা। সে কারণে ডাকাতি করে দ্রুত তারা আত্মগোপনে যেতে পেরেছেন।