সিলেটের আম্বরখানায় বাড়ি ফরিদ মিয়ার। এক আত্মীয়র বিয়েতে যোগ দিতে রোববার দুপুরে স্ত্রী, সন্তান ও পরিবারের আরও সদস্যদের সঙ্গে তিনি যাচ্ছিলেন মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার ভাটেরায়।
ভাড়া নেয়া দুটি মাইক্রোবাসে করে রওনা দেন তারা। এর মধ্যে একটিতে ছিলেন ফরিদ, তার স্ত্রী, দুই সন্তানসহ আটজন।
কুলাউড়ার ভাটেরায় পৌঁছে মাইক্রোবাস দুটি রেললাইন পার হতে যায়। প্রথম মাইক্রোবাসটি নিরাপদে পার হলেও ফরিদ মিয়াদের বহনকারী গাড়িটি রেললাইনে উঠলেই সিলেটগামী পারাবত ট্রেন এটিকে ধাক্কা দেয়।
পুলিশ গিয়ে গাড়ির ভেতর থেকে উদ্ধার করে ফরিদ ও তার আট বছরের ছেলে লাবিবের মরদেহ। জীবিত উদ্ধার করা হয় অন্য আরোহীদের। তাদের পাঠানো হয় সিলেটের এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
হাসপাতালে আহত স্বজনদের দেখতে এসে এই কথাগুলো নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন ফরিদের ভাগনি তানজিনা বেগম।
তিনি বলেন, ‘মামারা (ফরিদ) এক আত্মীয়র বিয়ে খেতে যাচ্ছিলেন। পথে এই দুর্ঘটনায় আমার মামা আর মামাতো ভাই মারা গেছে। হাসপাতালে এখন ভর্তি আছে মামি, মামাতো বোন, খালাসহ ছয়জন।’
দুর্ঘটনার পরপর কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিনয় ভূষণ দাস জানিয়েছিলেন তিনজনের মৃত্যুর কথা। তবে ওসমানী মেডিক্যালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ রুবেল মিয়া নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা হাসপাতালে দুটি মরদেহ রিসিভ করেছি। ছয়জনকে আনা হয়েছে আহত অবস্থায়। তাদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।’
কুলাউড়া থানার ওসি বিনয় জানান, ঘটনাস্থলে প্রাথমিকভাবে উদ্ধারকাজ চালায় স্থানীয়রাই। সেখানে তিনজনকে অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায়। এ কারণে প্রাথমিকভাবে বলা হয়েছিল তিনজন নিহত হয়েছে। হতাহতদের হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে নেয়ার পর জানা গেছে তিনজন নয়, প্রাণ গেছে দুইজনের। অচেতন আরেকজন গুরুতর আহত।
তিনি আরও জানান, মাইক্রোবাসচালকও গুরুতর আহত। তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
কুলাউড়া রেলস্টেশনের ব্যবস্থাপক মুহিবুর রহমান বলেন, ঢাকা থেকে সিলেটগামী পারাবত ট্রেনটি ভাটেরা স্টেশন পেরিয়ে মাইজগাও স্টেশনের দিকে যাওয়ার পথে ক্রসিংয়ে ওই মাইক্রোবাসটিকে চাপা দেয়।
তিনি বলেন, ‘যে জায়গায় দুর্ঘটনা ঘটেছে সেটি ছোট একটি ক্রসিং। রেললাইনের ওপর দিয়ে পাড়ার একটি রাস্তা চলে গেছে। সেখানে গেটম্যান ছিলেন কি না তা খোঁজ নিয়ে বলতে হবে।’